কক্সবাংলা ডটকম(২২ আগষ্ট) :: অর্থ পাচার (মানি লন্ডারিং) ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সূচকে ২৮ দেশকে পেছনে ফেলে ৮২তম অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। যে ১০টি দেশ সূচকের উন্নতি ঘটিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। প্রতিরোধ সূচকে খারাপ দেশগুলোর অবস্থান প্রথম দিকে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স ‘ব্যাসেল এএমএল ইনডেক্স ২০১৭’ নামের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ষষ্ঠবারের মতো এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধব্যবস্থায় ঘাটতি, স্বচ্ছতার ঘাটতি, উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতির ধারণা সূচক, আর্থিক মানদণ্ড ও স্বচ্ছতা, দুর্বল রাজনৈতিক অধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে এই সূচক করে থাকে সংস্থাটি।
এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি) কর্তৃক ২০১৬ সালে পরিচালিত মিউচুয়াল ইভালুয়েশন রিপোর্টে বাংলাদেশের উন্নতির কারণে এই সূচকেও উন্নতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নে ঝুঁকির তালিকায় এবারও শীর্ষে রয়েছে ইরান। এরপরই রয়েছে আফগানিস্তান, গিনি বিসাউ, তাজিকিস্তান ও লাওস।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হলো ফিনল্যান্ড। এরপরই ভালো দেশের তালিকায় রয়েছে লিথুনিয়া, ইস্তোনিয়া, বুলগেরিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ১৪৬টি দেশকে নিয়ে এই সূচক প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ‘সূচক উন্নতির যেসব শর্ত রয়েছে, বাংলাদেশ তার অনেকগুলোই পূরণ করেছে। এসব প্রতিরোধে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছাও আছে। সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে, পর্যাপ্ত জনবল কাজ করছে। যে কৌশল নেওয়া হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে কাজ চলছে। এসব কারণে এপিজি ভালো প্রতিবেদন দিয়েছে, যার প্রভাবে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সূচকে বড় উন্নতি ঘটেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ৫৪তম অবস্থানে ছিল। এবার ২৮ দেশকে পেছনে ফেলে ৮২তে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের মতো সুদান, তাইওয়ান, ইসরায়েল, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, লুক্সেমবার্গ, লাটভিয়া ও গ্রিস তাদের সূচকে উন্নতি করেছে। অপর দিকে সূচকে খারাপ করে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় ওপরের দিকে উঠে এসেছে জ্যামাইকা, তিউনিসিয়া, হাঙ্গেরি, উজবেকিস্তান ও পেরু।
এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানের অবস্থান ২, মিয়ানমারের ১৩, নেপালের ১৪, শ্রীলঙ্কার ২৫, পাকিস্তানের ৪৬, বাংলাদেশের ৮২ এবং ভারতের ৮৮। তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১১৬ এবং যুক্তরাজ্যের ১১৮।
গত বছর ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় যাওয়া থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) বার্ষিক সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। যদিও এপিজি তাদের খসড়া মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিল। এপিজি হচ্ছে ‘অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন’ বিষয়ে মানদণ্ড নির্ধারণকারী সংস্থা।
বাংলাদেশ এফএটিএফের ৪০টি সুপারিশের সব কটিই বাস্তবায়ন করেছে। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) বিশ্বের সব রাষ্ট্রের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণকারী সংস্থা।
Posted ১২:২১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta