কক্সবাংলা ডটকম(২২ আগস্ট) :: আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারতের বৃহত্তর ভূমিকার কথা স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের কাছে ‘নিরাপদ স্বর্গ’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় দেশটির প্রতি কঠোর সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেছেন।
পাকিস্তানকে সতর্ক করার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে দৃঢ় অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ২১ আগস্ট সোমবার ফোর্ট মাইয়ার সেনা ঘাঁটি থেকে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশে না থাকলে পাকিস্তানকে ‘অনেক কিছু হারাতে হবে’ বলেও সতর্ক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যদি জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে থাকে তবে যুক্তরাষ্ট্র আর দেশটিকে সহ্য করবে না। আফগানিস্তান থেকে সহসা সেনা প্রত্যাহার না করারও ইঙ্গিত দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ভাষণে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেও বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। তবে তিনি এ অঞ্চল থেকে আইএসের মূলোৎপাটনের ব্যাপারে তার প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ট্রাম্প সরাসরি বাংলাদেশের নাম উল্লেখ না করলেও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবশ্য বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানকে কোটি কোটি ডলার সহায়তা দিচ্ছি- আর তারা সেইসব সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিচ্ছে যাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি।’
ট্রাম্পের এ মন্তব্যের পর পরই তা নাকচ করে দিয়েছেন পাকিস্তানি সেনা মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন: ‘পাকিস্তানে কোনও জঙ্গি আস্তানা নেই। আমরা হাক্কানি নেটওয়ার্কসহ সব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।’
এদিকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করতে রাজি নন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আশঙ্কা, সময়সীমা অক্ষুণ্ন রাখতে গিয়ে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই যদি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় তবে সেখানে শূণ্যতা তৈরি হবে;আর সেটি পূরণ করবে সন্ত্রাসীরা। ট্রাম্প জানান,কিছু শর্তের ভিত্তিতে তারা আফগানিস্তান ইস্যুতে কৌশল নির্ধারণ করবেন,তবে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কোনো সময়সীমা ঘোষণা করা হবে না।
নাইন ইলেভেনের হামলার পর ২০০১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ অভিযান শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী এখনও আফগান সেনাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তানে এখনও প্রায় ৮,৪০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে। অতীতে ট্রাম্পকে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে কথা বলতে গেলেও এখন এ প্রশ্নে সুর পাল্টেছেন তিনি।
সোমবার এ কথা স্বীকারও করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন,তার প্রাথমিক ইচ্ছা ছিল আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া। কিন্তু পরে ‘ইরাক থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার মতো ভুল’ না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প জানান, তিনি আশা করছেন মিত্র দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলকে সমর্থন জানাবে এবং হোয়াইট হাউসের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।
Posted ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৩ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta