কক্সবাংলা ডটকম :: সূর্য নিয়ে গবেষণায় ভারতীয় ‘ইসরো’র রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিল ‘ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি’র (ESA) ‘প্রোবা-৩’ (PROBA-3) স্যাটেলাইট।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর), বিকেলেই এই অভিযান শুরুর কথা ছিল। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে স্যাটেলাইটটিতে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায়, উৎক্ষেপণ বাতিল করা হয়েছিল।
বিকেল ৪টে বেজে ১২ মিনিটে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার মহাকাশ বন্দর থেকে, নির্বিঘ্নে প্রোবা-৩ স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিল ইসরোর ‘পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল’ বা ‘পিএসএলভি’ (PSLV) রকেট। এই নিয়ে ৫৯ তম উড়ান ভারতীয় রকেট পিএসএলভির।
ফলে অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থাপনের লক্ষ্যে আরও এক কদম এগিয়ে গেল ইসরো।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইসরো বলেছে, ‘সফল লিফ্ট অফ! মহাকাশে পাড়ি দিল পিএসএলভি-সি৫৯।
ইসরো-র প্রযুক্তিগত দক্ষতায় ইএসএ-র যুগান্তকারী প্রোবা-২ স্যাটেলাইটকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপনের মধ্য দিয়ে এক আন্তর্জাতিক অভিযানের সূচনা হল৷ এটা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ভারতের মহাকাশ সাফল্যের সমন্বয় উদযাপনের এক গর্বের মুহূর্ত!’
আরও এক পোস্টে ইসরো বলেছে, ‘সাফল্য উদযাপন করছি! এনএসআইএল, ইসরো এবং ইএসএ দলের যৌথ অবদানে পিএসএলভি-সি৫৯/প্রোবা-৩ অভিযান হচ্ছে।
এই কৃতিত্ব বিশ্বব্যাপী মহাকাশ চর্চায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে তুলে ধরে। একসঙ্গে আমরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ সহযোগিতায় সেতু নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি!’
দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের তৈরি ‘আরিয়ানে’ সিরিজের রকেটগুলির উপর ভরসা করত ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি।
তবে, ‘আরিয়ানে ৫’ রকেটকে বসিয়ে দিতে হয়েছে, আর ‘আরিয়ানে ৬’ রকেট তৈরির কাজ এখনও চলছে। তাই এই মুহূর্তে তাদের হাতে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর মতো, কোনও রকেট নেই।
তারা চাইলে ইলন মাস্কের ‘স্পেসএক্স’ সংস্থার তৈরি ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটকে বেছে নিতে পারত। সস্তায় বড় মাপের পেলোড পাঠানোর সুবিধা দেয় ফ্যালকন ৯।
তবে, প্রোবা-৩-এর ওজন মাত্র ৫৫০ কেজি। এই ওজনের একটি স্যাটেলাইট, মহাকাশে পাঠানোর জন্য ফ্যালকন ৯ তেমন উপযোগী নয়।
অন্যদিকে, এই ধরনের মাঝারি ওজনের পেলোড মহাকাশে পাঠানোর জন্যই নকশা করা হয়েছে ইসরোর পিএসএলভি রকেট। এতে ইএসএ-র সাশ্রয়ও হচ্ছে অনেক।
তবে শুধু সাশ্রয়ী বলেই নয়, ইসরোর ট্র্যাক রেকর্ডও ইএসএ-কে স্পেসএক্সের বদলে ইসরোকে বেছে নেওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এই দিনের আগে, ইসরোর পিএসএলভি রকেট ৬০ বার মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্যে, ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে ইসরো।
হালকা ওজনের স্যাটেলাইট মহাকাশে স্থাপনের ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বে ভরসার অন্যতম নাম ইসরো।
এ ছাড়া ইসরোর সঙ্গে ইএসএ-র দোস্তিও কম দিনের নয়।
ভারতের গগনযান অভিযানের মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুরু করে, চন্দ্র অভিযানে সহায়তা, ইসরোর অরবাইটাল ট্র্যাকিং সিস্টেমের জন্য সফটওয়্যার সহায়তা – বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এই দুই মহাকাশ সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে।
তাই মাস্কের স্পেসএক্স নয়, ইএসএ বেছে নিয়েছে ইসরোকেই।
Posted ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta