বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইস্তফা দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো : পতনের কারণ কী

সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
33 ভিউ
ইস্তফা দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো : পতনের কারণ কী

কক্সবাংলা ডটকম :: জল্পনাই সত্যি হল। দলের অন্দরে বিদ্রোহের মুখে লিবারাল পার্টির প্রধান ও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিলেন জাস্টিন ট্রুডো।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) জরুরি এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।

সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ‘লিবারাল পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতদিন না দল নতুন নেতা নির্বাচিত করছে, ততদিন পর্যন্ত দায়িত্ব সামলাব।’

আগামী অক্টোবরেই কানাডায় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু ওই ভোটে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে সামনে রেখে লড়তে চাইছেন না শাসকদল লিবারাল পার্টির অধিকাংশ সাংসদ।

২০১৩ সালে লিবারাল পার্টির নেতা হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ট্রুডো। কিন্তু দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরে কানাডায় তাঁর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। বার বার তাঁর সিদ্ধান্ত নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেশকে দিশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রুডো। জিনিসপত্রের দাম গগনচুম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্বের সংখ্যাও বেড়ে চল;এছে।

পাশাপাশি খলিস্তানি জঙ্গিদের সরাসরি মদত জুগিয়ে ভারতের মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে পায়ে পা বাঁধিয়ে জগড়া করে পরিস্থিতি প্রতিকুল করেছেন। তাছাড়া হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও ট্রুডোর সম্পর্ক মধূর নয়।

২০২৩ সালে এক জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কানাডার বাসিন্দারা ট্রুডোকে আর রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে পছন্দ করছেন না।

আগামী নির্বাচনে লিবারাল পার্টিকে সরিয়ে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতায় আসতে চলেছে বলে দাবি করছে বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থা। আগামী বুধবারই লিবারাল পার্টির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে।

ওই বৈঠকেই দলের প্রধানের পদ থেকে ট্রুডোকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে জোর জল্পনা চলছে। তাই অপমানিত হওয়ার আগেই লিবারাল পার্টির শীর্ষ নেতার পদ থেকে ট্রুডো সরে দাঁড়াতে চাইছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।

একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্টারিও প্রদেশের ৭৫ জনের মধ্যে অন্তত ৫১ জন এমপি ট্রুডোকে সরানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরেই কর কাঠামো নির্ধারণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ইস্তফা দিয়েছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।

তার পর থেকেই কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ট্রুডোর সরে দাঁড়ানোর দাবিতে সুর চড়িয়েছেন লিবারাল পার্টির একের পর এক সাংসদ।

তাঁদের বক্তব্য ছিল, দল এবং সরকারকে সঠিক দিশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রুডো। পরে তার ইস্তফা দেওয়া উচিত। অন্য কাউকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত।

জাস্টিন ট্রুডোর পতনের কারণ কী?

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক দশক আগে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। অথচ সোমবার মেয়াদ শেষ না করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

দলের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেন ট্রুডো। রাজধানী অটোয়ায় নিজের বাসভবন রিডো কটেজের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

কিন্তু কীভাবে একজন জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এমন সংকটে পড়লেন? ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কেন এত নিম্নমুখী হলো, তা নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

উর্ধ্বমুখী ব্যয়

২০২৪ সালে কানাডায় মুদ্রাস্ফীতি জনজীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং আবাসন ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। ট্রুডোর সরকার এই সংকট মোকাবিলায় কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

পরিবেশ নীতি

পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। জলবায়ু সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু দুর্যোগ পরিস্থিতি তার ‘পরিবেশবান্ধব’ নেতৃত্বের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ফেডারেল বাজেট

ফেডারেল বাজেট প্রস্তাব তার নিজ দল এবং বিরোধী পক্ষ উভয়ের কাছ থেকে সমালোচিত হয়। বাজেট প্রস্তাবে প্রগতিশীল গোষ্ঠীর চাহিদা উপেক্ষিত হয়েছে বলে মনে করা হয়। এটি ট্রুডোকে জনগণের সঙ্গে ‘সম্পর্কহীন’ একজন নেতা হিসেবে চিত্রিত করেছে।

জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

প্রদেশগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা তহবিল নিয়ে আলোচনা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ট্রুডোর সরকার সমালোচিত হয়েছে। এই বিষয়টি স্বাস্থ্যসেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে তার সরকারের সম্পর্ক দুর্বল করেছে।

জনপ্রিয়তা হারানো

২০২৪ সালের জুনে টরন্টোতে একটি বিশেষ নির্বাচনে লিবারেল পার্টি তাদের সবচেয়ে নিরাপদ একটি আসন হারায়। অক্টোবর মাসে লিবারেল পার্টির ২০ জনের বেশি আইনপ্রণেতা ট্রুডোকে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী পদে না দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন। বর্তমানে হাউজ অব কমন্সে লিবারেলদের আসন সংখ্যা ১৫৩।

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্ক

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এই শুল্ক মাদক ও অভিবাসী নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চাপ তৈরি করবে। এটি কানাডার অর্থনীতিতে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এবং ট্রুডোর জনপ্রিয়তাকে আরও দুর্বল করতে পারে।

সরকারে ভাঙন

কয়েক সপ্তাহ আগে অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড পদত্যাগ করেন। ট্রুডো তাকে কম গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ নিতে বলার পর তিনি পদত্যাগ করেন। ফ্রিল্যান্ড প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় কানাডার প্রধান বাণিজ্য আলোচক ছিলেন। ট্রুডোর অন্যতম বিশ্বস্ত সহযোগীও ছিলেন তিনি। তবে বাজেট এবং সম্ভাব্য মার্কিন শুল্ক নিয়ে মতবিরোধ তার পদত্যাগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

33 ভিউ

Posted ১১:৩৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com