শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(২৪ জুন) :: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে সর্বত্র ছড়াছড়ি হয়ে পড়ছে নিবন্ধনহীন ও চোরাই মোটরসাইকেল। অপরাধ কিংবা মাদক বহনে ব্যবহারের পাশাপাশি সেই সাথে চুরিও হচ্ছে অবৈধ মোটর সাইককেল। এসব চোরাই মোটর সাইকেলে নেই কোন নিবন্ধন। এছাড়া বিভিন্ন শো-রুম থেকে কেনা মোটর সাইকেল গুলোর অধিকাংশই লাইসেন্স নেই।
বছরের পর বছর নিবন্ধনহীন ভাবে চালানো হচ্ছে ঈদগাঁওর বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়ক গুলোতে। এসব মোটর সাইকেল নিত্য দিন দাপিয়ে বেড়ালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ সড়ক দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিবন্ধনহীন এসব অদক্ষ রোমিওদের কারণে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী নারী শিক্ষার্থীদেরকে ইভটিজিংয়ের কবলেও পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া, গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এসব গাড়ি ও গাড়ির চালক বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দূর্ঘটনার পর পরই পালিয়ে যেতে সুযোগ পাচ্ছে। বার বার অধরাই রয়ে যাচ্ছে অপরাধী কিংবা রোমিওরা।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, চোরাই মোটরসাইকেল গুলোর চালকদের মধ্যে বেশীর ভাগই উঠতি বয়সের তরুণ। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় একটি শক্তিশালী মোটর সাইকেল চোরাচালানী সিন্ডিকেট ভারত থেকে চোরাই পথে আনা মোটর সাইকেল যত্রতত্র বিক্রি করে রাতারাতি অনেকে ধনী লোক বনে গেছেন।
স্থানীয় ভাবে এসব চোরাই মোটর সাইকেলকে টানা গাড়ি নামে ডাকা হয়। প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে এসব চোরাই গাড়ি অনেক কম মূল্যে পাওয়া যায় বলে ক্রেতাদের দৃষ্টিও এখন সেদিকে। আইনী কোন ঝামেলা পোহাতে হয়না বলে কথিত ক্রেতারা এসব চোরাই গাড়ি স্বাভাবিক গাড়ির মতোই ক্রয় করে থাকেন। অবাধে চোরাই গাড়ি বিকিকিনির কারণে সরকার প্রতিবছর বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে, ঈদগাহ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়কে কি পরিমাণ নিবন্ধনবিহীন ও চোরাই মোটর সাইকেল চলাচল করছে তার সঠিক পরিসংখ্যান খোদ কক্সবাজার ট্রাফিক কিংবা পুলিশের কাছেও নেই। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবী, ঈদগাঁওতে এ ধরণের মোটর সাইকেলের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি হবে বলে তাদের ধারণা।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গত এক বছরে ঈদগাহর বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি হয়েছে অর্ধশতাধিক মোটর সাইকেল।
পুলিশের একটি সুত্র জানিয়েছেন, চোরাই কিংবা রেজিষ্ট্রেশন বিহীন কোন মোটরসাইকেল আটক করা হলেই রাজনৈতিক নেতাদের তদবির বেড়ে যায়।
কতিপয় নেতাদের বাড়াবাড়ির কারণে অনেক সময় অবৈধ মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান কিংবা আটক করা সম্ভব হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই নিবন্ধনবিহীন মোটর সাইকেল ও চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আগামীতে অপরাধ ও চোরাচালানের মাত্রা গাণিতিক হারে বৃদ্ধি পেলেও তখন অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে এলাকার সচেতন মহলের অভিমত।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার ট্রাফিক সার্জনের ওসি মোহাম্মদ ইউনুছ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ বাইকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Posted ১১:৫৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta