শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(২০ মে) :: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, ইসলামপুর, পাশর্^বর্তী উপজেলা রামুর ঈদগড়, বান্দরবানের বাইশারী, চকরিয়ার খুটাখালী, ডুলাহাজারাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। কালিরছড়ায় গণধোলাইতে নিহত ডাকাত লাল পুতুর মৃত্যু ও মোস্তাকের আটকের সংবাদে তাদের এলাকায় মিষ্টি বিতরণ চলছে।
এমনকি কয়েকটি এলাকায়ও মিষ্টি বিতরণ চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে লাল পুতুর নেতৃত্বে পাহাড়ী অঞ্চলে ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্র ব্যবসাসহ হরেক রকম অপরাধ কর্মকান্ড করে আসছিল। তার বাহিনীর অত্যাচারে অনেকেই সড়ক দিয়ে যাতায়াতও বন্ধ করে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছে। পাহাড়ী এলাকায় তাদের রয়েছে বিশাল একটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঈদগড় সড়ক, কালিরছড়া, বইশারীসহ বিভিন্ন সড়ক থেকে মানুষ ধরে নিয়ে মুক্তিপণ দাবীসহ ব্যাপক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।
মৃত লাল পুতুর বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র, পুলিশের উপর হামলা, বন মামলাসহ ৭টি মামলা ছিল এবং আটককৃত মোস্তাক আহমদ প্রকাশ রায়হান ওরফে সিমবডির বিরুদ্ধে চকরিয়াসহ বিভিন্ন থানায় পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাইসহ ১০টি মামলা রয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইসলামাবাদ গজালিয়ার মমতাজ আহমদের পুত্র লাল পুতুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অনেকে। অস্ত্রের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস না পেলেও অন্তর থেকে ঘৃণা করে আসছিল। পরিশেষে তার মৃত্যুর সংবাদে অনেকের মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে।
স্থানীয় নজরুল নামের এক ব্যক্তি জানান, তার জানাযায় মুসল্লীদের অনুপস্থিতি থেকেই বুঝা যায় সে কতই ঘৃণিত ব্যক্তি ছিল। অপরদিকে আটককৃত মোস্তাক আহমদের আটকের খবরে তার এলাকায় উল্লাসের আমেজ বিরাজ করছে।
ডাকাতির শিকার ঈদগড়ের ইছমাইল নামের এক ব্যক্তি জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের ভয়ে ঈদগড় সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পেত। এখন কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছে। একই কথা জানালেন বাইশারীর গৃহবধূ নুর আয়েশা। তাদের অপরাধ কর্মকান্ড ক্রমশঃ বেড়ে যাওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ আতঙ্ক, উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় ছিল। ঐ দিন বাইশারী এলাকায় সংঘটিত হয়ে ১০/১৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল অবস্থান নেওয়ার খবরে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তাদের ধাওয়া খেয়ে গহীন জঙ্গল বেয়ে পশ্চিমের দিকে ঈদগড় ব্যাংঢেবার কাছাকাছি আরেকটি পাহাড়ে অবস্থান নেয়।
মৃত্যু ও আটকের খবরে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে সাধারণ পথচারীদের। তারা পুলিশ প্রশাসন ও কালিরছড়া বাসীকে ধন্যবাদও জানান। ঈদগড় হাসনা কাটার কাঠ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, সচেতন এলাকার মানুষ একত্র হলে কোন ডাকাত অপরাধকর্মে জড়াতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মে কালিরছড়া থেকে ৫ কিলোমিটার গহীন জঙ্গল হাদির ঝিরা নামক স্থানে পাহাড় ঘেরাও করে অভিযান চালিয়ে থেকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ২জনকে আটক করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ২টি কাটা বন্দুক ও ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে।
এসময় নিহত লাল পুতু পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাকে রাম ধোলাই দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। ঐদিন রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে।
Posted ৯:২৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২০ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta