শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(২ আগষ্ট) :: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা ও অসহায় পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মামলা দায়ের হওয়ার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তি। বন্ধ রয়েছে সড়কের চলাচলরত শতাধিক টমটম (ইজি বাইক)। ভোগান্তিতে পড়েছে জনগণ। পরিবারে নেমে এসেছে দারুণ দূর্ভিক্ষ।
জানা যায়, গত ৩০ জুলাই ঈদগাঁও বাসস্টেশনে দরগাহ সড়কের ঘাট পারাপারে শুল্ক নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩/৪ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে।
এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ঈদগাঁওয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ছুরত আলমের দু’পুত্র তার আত্মীয় স্বজন ও নিরীহ অসহায় টমটম চালকদের আসামী করে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করে। ঐ মামলায় বর্তমানে দু’জন কারাগারে রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এজাহারভূক্তসহ অসংখ্য টমটম চালক। যার কারণে তাদের পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে দারুণ দূর্ভিক্ষ।
উক্ত সড়কে ৩ দিন ধরে টমটম বন্ধ থাকায় হাজার হাজার যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। চরম বেকায়দায় পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও রোগীরা।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ৬/৭ জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐদিন তুচ্ছ একটি ঘটনা যা গ্রাম আদালতেও মিমাংসাযোগ্য ছিল। তিলকে তাল বানিয়ে এক ভাইয়ের প্রভাব দেখিয়ে রাতারাতি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এতে আসামী করা হয়েছে দরগাহ পাড়া এলাকার ছিদ্দিক আহমদের পুত্র টমটম চালক সমিতির সভাপতি জাফর আলম প্রকাশ কালাবদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত ছুরত আলমের পুত্র নুরুল আক্কাস, নুরুল আবছার, নুরুল হকের ৩ পুত্র টমটম চালক সেলিম, জয়নাল, রকি ওরফে রহিম, নুর মোহাম্মদের পুত্র রায়হান, আবু বক্করের পুত্র ইসমত উল্লাহসহ ৮/১০জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলা রুজু করে যার নং দ্রুত বিচার ১২/১৭।
এ ঘটনায় বর্তমানে জাফর আলম ও আক্কাছ কারাগারে রয়েছে। ঐদিন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ২ তলা থেকে লাফ দিলে তার কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, ঐদিন মামলার বাদী নাছির উদ্দীন ১০ টাকার জন্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অক্ষর জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের সাথে তর্কে জড়িয়ে ঘটনাটি করেছে।
দরগাহ পাড়ার টমটম চালক মুসলিম উদ্দীন জানান, বাদী ১০ টাকা শুল্ক না দিয়ে উল্টো তাদের সাথে ঘটনাটি করেছে। ঘটনার পরপরই তাদের স্বজনরা এলাকায় গিয়ে ত্রাস সৃষ্টিরও পায়তারা চালায়।
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, মাথাব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলে দেয়া যায় না। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করেও প্রশাসনে কর্মরত এক ভাইয়ের প্রভাব দেখিয়ে অসহায় ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করা কোনভাবেই কাম্য নয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন নিরীহ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হবে না বলে জানান এবং পলাতক আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এলাকাবাসী দ্রুত বিষয়টি মিমাংসা করে উক্ত সড়কে টমটম চলাচল ও নিরীহ কোন ব্যক্তিকে হয়রানি না করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনাসহ অসহায় পরিবারদের দূর্ভিক্ষ দূর করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী নাছির উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঐদিন আত্মীয়ের বাড়ীতে যাওয়ার সময় তারা আমাদের উপর আকষ্মিক হামলা চালায়। আইনী ব্যবস্থার আশায় মামলা দায়ের করেছি।
Posted ৮:৪৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta