কামাল শিশির,ঈদগড়(১৫ জুন) :: কক্সবাজার রামুর ঈদগড় বউঘাটা নতুন পাড়ায় বর্তমানে দেদারছে পাহাড় কাটা চলছে। যে কোন মুহুর্ত পাহাড় ধ্বসে প্রাণ নাশের আশঙ্কা রয়েছে।
১৪ জুন সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, উক্ত এলাকার মৃত মোজাফ্ফর আহমদের পুত্র আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রকাশ আন্দেক্যা বাপ, মৃত নুর আহমদের পুত্র গুরা মিয়া, জনৈক নুর আহমদ, মৃত আবদু শুক্কুরের পুত্র কামাল, মৃত ইছহাক আলীর পুত্র বার্মাইয়া জহির আহমদ, মৃত মীর হোসেনের পুত্র কবির মিস্ত্রি, মৃত আবদুল আজিজের পুত্র শাহ আলম কুতুবী, ছৈয়দ আলম কুতুবী, মৃত ওলা মিয়ার পুত্র আলী আজগর, জহির আহমদের পুত্র ছৈয়দুল আমিন, মৃত আছদ আলীর পুত্র শামসু, মৃত আবদুল খালেকের পুত্র আবদুর রহিমসহ আরো অনেকেই বর্তমানে পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করছে। তারা ইতিপূর্বে পাহাড় কেটে উক্ত এলাকায় বসতবাড়ীও তৈরি করেছে।
এছাড়া বর্তমানে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকায় পাহাড়ের নিচে থাকা ধানী জমিগুলো বালি ও মাটিতে ভরে যাচ্ছে।
দেখা যায়, কাটা জঙ্গল এলাকার আমির সুলতান, ওমর আলী, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ আরো অনেকের প্রায় ২০-২৫ কানি জমি বর্তমানে নষ্ট হতে চলেছে। উক্ত জমিগুলোতে ব্যাপকভাবে পাহাড় থেকে বালি ও মাটি আসার কারণে চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিন পরিদর্শনে আরো দেখা যায়, উপরোল্লিখিত ব্যক্তিগণ পাহাড় কেটে বালি, মাটি ও পানি জনগণের চলাচলের রাস্তায় এবং ধানী জমিতে যায় মত ব্যবস্থা করে দিয়েছে বলে কৃষি জমিগুলো আবাদে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পাশর্^বর্তী জনগণের আরো ব্যাপক অসুবিধা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে অব্যাহত এ প্রবল বৃষ্টিতে কাটা পাহাড়ে ফাটল দেখা দেওয়ায় যে কোন মুহুর্তে পাহাড় ধ্বসে বেশ কয়েকজন লোক মারা যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
পাহাড় ধ্বসের আতঙ্ক থাকা উল্লেখিত এলাকার সিরাজ ড্রাইভারের স্ত্রী মনোয়ারা জানান, এলাকার লোকজন পাহাড় কাটা অব্যাহত রাখায় যে কোন মুহুর্তে পাহাড় ধ্বসে আমার বাড়ীটিসহ আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারি। এ ব্যাপারে সে পাহাড় কাটা ব্যক্তিদেরকে নিষেধ করলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে শাহ আলম কুতুবীর স্ত্রী খুরশিদা বেগম, আজগর আলীর স্ত্রী রাশেদা বেগম, আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রকাশ আন্দেক্যা বাপ, মৃত আবদু শুক্কুরের পুত্র কামালসহ পাহাড় কাটারত সবাই এ প্রতিবেদককে পাহাড় কাটার সত্যতা স্বীকার করেন।
এলাকার বাসিন্দা নুর কামাল, রুবেল, আবদুল হাকিমসহ আরো অনেকেই অভিযোগের সাথে জানান, তাদেরকে পাহাড় কাটতে নিষেধ করা হলেও তারা সরকারী আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। এমনকি তারা স্থানীয় জনগণ ও বনবিভাগকে উপেক্ষা করে চলছে।
এছাড়া তাদের দাপটে স্থানীয় জনগণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। অপরদিকে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসরত পরিবারগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
চলন্ত এ বর্ষাকালে তদুপরি চলতি এ বৃষ্টিতে যে কোন মুহুর্তে পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে জানান এলাকার সচেতন লোকজন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলাকার সুশীল সমাজ দাবী জানান।
এ ব্যাপারে ঈদগড় রেঞ্জ কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, তাদের বিরুদ্ধে অতিসত্ত্বর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ১:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta