কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৭ জুন) :: ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকে মুখর দেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজার। শহরের হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস এখন পর্যটকে ঠাসা।ব্যবসায়ীরা বলছেন,আবহাওয়া ভাল থাকলে আগামী দু-একদিন কয়েকগুণ বাড়তে পারে পর্যটকের সংখ্যা।
আর ঈদের দিন থেকে পরের এক সপ্তাহে কক্সবাজারে ৩৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আশা করছেন।ঈদের দিন থেকে টানা ৯ দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে ভিড় করতে শুরু করেছে পর্যটকরা।বিশেষ করে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক চালু হওয়ার পর সকাল-সন্ধ্যা ছুটে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। অধিকাংশই এসেছেন প্রিয়জন সাথে নিয়ে।
২৭ জুন পর্যটন স্পটগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এবারের ঈদুল আজহার প্রায় ৯ দিনের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে আসছে পর্যটকরা। মূলত ঈদের পরদিন থেকে শুরু হয়েছে পর্যটকদের ঢল। ইতোমধ্যেই শহরের রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে ট্রাফিক জ্যাম।শহরের বার্মিজ মার্কেটসহ বিপণীকেন্দ্রগুলো এখন দারুণ জমজমাট। ব্যবসায়ীরা পার করছেন কর্মব্যস্ত সময়।
কক্সবাজারের তারকা হোটেল সি-গাল’র প্রধান নির্বাহী ইমরুল সিদ্দিকী রুমী জানান,গত ১৩ জুন পাহাড়ধসের কারণে এবার অনেক পর্যটক তিন পার্বত্য জেলায় যাচ্ছে না। যার কারণে গত বছরের চেয়ে এবার কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় বেশি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, কক্সবাজারে এক লাখেরও বেশী পর্যটক অবস্থান করছে।ঈদের ছুটিতে সপ্তাহব্যাপী এবার ১০ লাখ পর্যটক হবে বলে আশা তাদের।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ও ‘দ্য কক্স টুডে’ হোটেলের পরিচালক (অপারেশন) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান,২৯ জুন ঈদের তিন দিন পর্যন্ত পর্যটন জোন কলাতলীর প্রায় সব হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। তাঁদের আশা, ঈদের পরের সাত দিন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন। গত বছর ঈদের টানা নয় দিনের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে আসেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক।
কক্সবাজার কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহমদ বলেন,সমিতির আওতাভুক্ত ১১৭টি কটেজের ৯৫ শতাংশতেই পর্যটকে ভরপুর।২৯ জুন পর্যন্ত এ অবস্থা বজায় থাকবে।তিনি আরও জানান,কম দামে কক্ষ পাওয়া যায় বলে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কটেজে ওঠেন বেশি।মাঝারি মানের হোটেলের কক্ষও পর্যটকরা অবস্থান করেন।
সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানান, ঈদে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত। ছয়টি অত্যাধুনিক মোটরযানে টহলে রয়েছে ছয়টি দল। সৈকতের বালুচরে টহলে আছে ১২১ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ। মেরিনড্রাইভ সড়কে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ টহল। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আরও আছে মহিলা ট্যুরিস্ট পুলিশও। পাশাপাশি কাজ করছে লাইফ গার্ড ও বিচকর্মী।এদিকে পুলিশ জানিয়েছে,নিষেধাজ্ঞা না মেনে সুগন্ধা পয়েন্টে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যূ হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসন পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কক্সবাজারে এসে পর্যটকরা যাতে বিড়ম্বনার শিকার না হন এবং হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সেজন্য ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিশেষ টিমও গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া শহরের হোটেল-মোটেল রেস্তোরাঁ ও যানবাহনসহ টমটম-রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে মূল্য তালিকা টানিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Posted ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৮ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta