মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(১৬ জুন) :: প্রায় ৩০ কিঃ মিঃ সাগর উপকূলীয় জনপদ উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেপটখালী-মাদারবনিয়া উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়টি ঘুর্ণিঝড় মোরার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্কুলের মূল ভবন ও টিনসেট, শ্রেণিকক্ষ ভেঙ্গে গিয়ে প্রায় ৩০ জোড়া হাই বেঞ্চ, লো বেঞ্চ সহ অন্যান্য আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। পাঠদানে অনুপযোগী হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে স্কুলের দায়িত্বরত শিক্ষক-শিক্ষিকা।
নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ও সাগর উপকুলের সাথে জীবন বাজি রেখে বসবাসরত পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ বিদ্যালয়টি ক্ষতিগ্রস্থের কারণে অভিভাবক মহল হতাশ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন ঘটনাস্থল ঘুরে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মাষ্টার মোকতার আহমদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বির আনোয়ার এর ঐকান্তিক সহযোগীতায় তৎকালীন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জয়নুল বারী, সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান এড. শাহজালাল চৌধুরী, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, জালিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর আর্থিক ও কায়িক পরিশ্রমের ফলে ৩০ কিঃ মিঃ উপকুলীয় এলাকায় ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর ভর করে ২০১২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের জেএসসি পরীক্ষায় অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা সফলতার সহিত শতভাগ পাসের হার নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
১১ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে পরিচালিত বিদ্যালয়টি সাগর উপকুলে নান্দনিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় নৃ-তাত্ত্বিক পাহাড়ী জনগোষ্ঠীরা অতি উৎসাহ নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি ৩০ কিঃ মিঃ উপকূলীয় এলাকায় সাগরের সাথে জীবন বাজি রেখে বসবাসরত অধিকাংশ হত দরিদ্র জেলে পরিবারের ছেলেমেয়েরা এ স্কুলে পড়ালেখা করছে।
পরিচালনা কমিটির সদস্য স্থানীয় ইউ,পি, সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, পড়ালেখায় অধিকতর গুণগত মানসম্পন্ন্ এ বিদ্যালয়টি ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী তথা অভিভাবক মহল হতাশ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়টিকে আগের নিয়মে পুন:প্রতিষ্ঠিত করতে এলাকাবাসী সহানুভূতি প্রকাশ করলেও আর্থিক অভাবে তারা সাহায্য সহযোগীতা করতে পারছে না বিধায় অর্ধমাসেও স্কুলের সংস্কার কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে খুবই মর্মাহত হয়েছে। যেহেতু এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পেছনে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সরকারি কর্মকর্তা জড়িত ছিল।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি পুন:সংস্কারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দের কারণে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। স্কুলের নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রী মিজানুর রহমান, মর্জিনা বেগম, শারমিনা বেগম, শুভা আক্তার সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলা হলে তারা বিদ্যালয়টি পূন:সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী ভিত্তিতে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Posted ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta