মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া(২৯ জুন) :: অপহরণের ১২ দিন পর আয়ুব মাঝির লাশ উদ্ধার করেছে উখিয়া থানার পুলিশ। অপহরণকারীরা তাকে হাত পা বাঁধা জবাই করে প্রায় অর্ধ গলিত অবস্থায় বালুখালীস্থ খালে ফেলে চলে যায়। একই স্থান থেকে পুলিশ মোহামদ সলিম নামের রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গার হাত, পা বাঁধা জবাই করা লাশ উদ্ধার করে কুতুপালং লম্বাশিয়া খাল থেকে।
লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ড নিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি ও তৎসংলগ্ন উখিয়ার কয়েকটি গ্রামে আতংকে বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা জানায় অপহরণকারী চক্র তাদেরকে আল ইয়াকিন গ্র“পের সদস্য বলে দাবি করছে।
কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে ও থানায় দায়েরকৃত মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন রাত ১২টার দিকে ১০/১২ আল ইয়াকিন গ্র“পের সদস্য কুতুপালং রেজিষ্টার্ড শরণার্থী ক্যাম্পে আয়ুব মাঝি (৩০) এর বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা আয়ুব মাঝির বাড়ির দরজা ভেঙ্গে আয়ুব মাঝিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আয়ুব মাঝির স্ত্রী ধলু বিবি ২৩ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করে।
উখিয়া থানার এসআই আবুল কালাম জানান, গত ২৫ জুন সকাল ১০টায় বালুখালী খাল থেকে আয়ুব মাঝির জবাই করা ও হাত, পা বাধা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে একই অবস্থায় অপহৃত রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা মোঃ সেলিম (২৬) এর জবাই করা, হাত পা বাধা গলিত লাশ লম্বাশিয়া খাল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
আয়ুব মাঝির স্ত্রী ধলু বিবি তার স্বামী আয়ুব মাঝি অপহরণ ও নির্মমভাবে হত্যা করার বর্ণনা দিয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দমনে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে সহযোগীতা করায় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে।
রোহিঙ্গা বস্তি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি আবু ছিদ্দিক জানান, আল ইয়াকিন গ্র“পের নামধারী কতিপয় অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ক্যাম্পে নিরব চঁাঁদাবাজি করে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে অপহরণ করে হত্যা করার হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
কুতুপালং এলাকার ইউ,পি, সদস্য বখতেয়ার আহমদ জানান, সন্ত্রাসীরা আল ইয়াকিন গ্র“পের সদস্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি অব্যাহত রাখায় সাধারণ রোহিঙ্গা ও তাদের দায়িত্বে নিয়োজিত রোহিঙ্গা মাঝিদের মধ্যে অপহরণ ও খুন আতংক বিরাজ করায় ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, আয়ুব মাঝি হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত এজাহারনামীয় আসামী রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের জহির আহমদের ছেলে আব্দুল গফুর (২২) ও মৃত উলা মিয়ার ছেলে হামিদ হোছন (২০) কে পুলিশ গত মঙ্গলবার গভীর রাতে রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
Posted ১০:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta