মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া(৩ জুন) :: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা অধ্যুাষিত জনপদে প্রচুর চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে উখিয়া সীমান্ত এলাকা চিহ্নিত চোরাচালানী সিন্ডিকেট। এরা গ্রামগঞ্জে খুচরা বিক্রির অজুহাতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মজুদ করে।
পরে সীমান্তরক্ষী বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে পাচার করছে দেশীয় পণ্য সামগ্রী। গত শুক্রবার ভোর রাতে আনজুমানপাড়া নাফনদী দিয়ে পাচারকালে নৌকা ভর্তি মালামাল উদ্ধার করেছে পালংখালী বিজিবি’র সদস্যরা।
উখিয়া কুতুপালং ও বালুখালী বস্তিতে বসবাসরত মিয়ানমারের মংডু নাইছাধং গ্রামের উমর শরীফ (৩৫), কালা পুতু (২৫), আব্দুল বারেক (৪০) সহ বেশ কয়েকজন সদ্যাগত রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে জানা যায়, মংডুর টাউনশীপ এলাকায় বেশীর ভাগ নাগরিক রোহিঙ্গা হওয়ার সুবাদে সেখানকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন আকিয়াব থেকে কোন পণ্য সামগ্রী মংডু এলাকায় সরবরাহ করতে দিচ্ছে না যুগ যুগ ধরে।
যাতে রোহিঙ্গারা খাদ্যাভাবে অতিষ্ট হয়ে এদেশে পাড়ি জামাতে বাধ্য হয়। এটাই ছিল তাদের মূল পরিকল্পনা। বালুখালী বস্তির নাগু মাঝি জানান, এদেশীয় পণ্য ছাড়া মংডুর রোহিঙ্গারা বাচঁতে পারবে না।
সে জানায়, মংডুতে দায়িত্বরত সে দেশের বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা লোকজন এদেশের পণ্যের উপর নির্ভর করে দিন কাটাচ্ছে। যে কারণে সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করা বিজিবি’র পক্ষে সম্ভব হচ্ছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দাবী করছেন।
পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত উখিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ কল্পে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন রমজানে নিত্যপণ্য সামগ্রী মিয়ানমারের পাচার রোধে সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্যদের আরো আন্তরিকতার সহিত দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।
এসময় ঘুমঘুম বিজিবি’র কোম্পানী কমান্ডার রফিকুল ইসলাম জানান, সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত নাগরিক ও জনপ্রতিনিধিরা সহযোগীতা না করলে চোরাচালান প্রতিরোধ করা তাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে উখিয়ার পাইকারী ব্যবসায়ী সিরাজুল হক, প্রদীপ সেন, বিশ্বনাথ স্টোরের মালিক তপন বিশ্বাসের সাথে আলাপ করা হলে তারা জানান, খুচরা বিক্রির অজুহাতে ব্যবসায়ী পরিচয়ে রমজানের পণ্য সামগ্রী ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব পণ্য সামগ্রী কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা তাদের জানার কথা নয় বলে সাংবাদিকদের মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উখিয়ার প্রায় ২০ জন পাইকারী ব্যবসায়ীর মধ্যমে প্রতি সপ্তাহে কোটি কোটি টাকার নিত্যপণ্য আসছে। এসব পণ্য সামগ্রী খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতবদল হয়ে মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সীমান্তের পালংখালী, আনজুমান পাড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার দিলীপ বিশ্বাস জানান, তাদের টহল পার্টি শুক্রবার ভোর রাতে নাফনদীতে অভিযান চালিয়ে চোলা, তেল, সেমাই, চিনি, ডাল, আটা, পিয়াঁজ, রসূন ভর্তি একটি নৌকা আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
নিত্য পণ্য সামগ্রী মিয়ানমারে পাচারের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, স্থানীয় ভাবে প্রচুর চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে নিত্যপণ্য পাচার হলেও পুলিশের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
Posted ৫:৫০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta