মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(৬ জানুয়ারী) :: উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে হাত বাড়ালেই মিলছে রকমারী মাদকদ্রব্য। পাচারকারী ও সেবনকারীর সংখ্যা বেড়েছে আশংখাজনক ভাবে।
ফলে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, জমি-জমা নিয়ে সংঘর্ষ, পারিবারিক বিরোধ, নারীর উপর সহিংসতার মতো অপরাধ জনিত ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উখিয়ায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সচেতন মহল।
উখিয়ার রতœাপালং ইউনিয়নের সাবেক রুমখাঁ পল্লানপাড়া গ্রামে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হাসেম উদ্দিন (২২) সাংবাদিকদের জানান, এলাকার কতিপয় নেশাখোর আকতার হোসেন(২৫), শফি আলম (২৬) ও সুরুত আলম (৩০) সহ ৪/৫জন দুর্বৃত্ত পল্লানপাড়া জামে মসজিদের সোলার প্যানেল চুরি করে নিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসি তাদের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে চুরি যাওয়া সোলার প্যানেল উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে প্রকাশ্যে দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে ১০টার দিকে।
শুক্রবার মধ্যরাতে ১৮/২০জনের সশস্ত্র ডাকাতদল হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পতুয়াবাদ গ্রামের গরু ব্যবসায়ী রশিদ আহমদের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে বাড়ী ঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালানোর সময় গ্রামবাসি দা,কোড়াল. লাটিশোঠা এগিয়ে এলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছানোর পুর্বেই হামলাকারী ডাকাতেরা পালিয়ে গেছে।
এর আগে ২০ ডিসেম্বর একই গ্রামের প্রবাসি বেলাল উদ্দিনের বাড়ীতে ২০/২৫জনের সশস্ত্র ডাকাতদল পুলিশ পরিচয়ে বাড়ীতে ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালায়। বাধা দিতে গেলে ডাকাতদের কিরিচ ও ছুরিকাঘাতে গৃহকর্তা সহ অন্তত ১০জন আহত হয়।
প্রবাসি বেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ডাকাতেরা প্রায় ১৫লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, ওই মামলায় ২জন আসামী গ্রেফতার রয়েছে।
২২ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে বালুখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের পরিত্যাক্ত ভবনে ৭/৮জন রোহিঙ্গা ডাকাতির উদ্দেশ্যে শলাপরামর্শ করছিল। খবর পেয়ে র্যাব-৭ এর সদস্যরা হানা দিলে ডাকাতেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যেতে থাকে। এসময় র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে মিয়ানমারের বুচিডং গ্রামের রোহিঙ্গা নাগরিক রশিদুল্লাহ (২৭)কে গ্রেফতার করে।
র্যাব-৭ এর কোম্পানী কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন জানান, ধৃত ডাকাতের নিকট থেকে ১টি স্যুটার গান উদ্ধার করা হয়েছে।
২৩ ডিসেম্বর ভোর রাত ৩টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হোয়াইক্যং মিনা বাজার এলাকায় অস্ত্রধারী ডাকাতদল রাস্তায় গাছ ফেলে ১৫টি যানবাহনে লুটপাট চালায়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি করে ডাকাতদল নিকটস্থ পাহাড়ের দিকে চলে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশদের লক্ষ্য করে অশালিন ব্যবহার করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
২৩ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত আইনশৃংখলা কমিটির সভায় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এলাকায় ডাকাতি, খুন, সন্ত্রাসী, মাদকাসক্ত, ছিনতাই সহ নানান রকম অপরাধ প্রবনতা বেড়ে গেছে। যা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির সামিল। এ ব্যাপারে তিনি উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে আরো দায়িত্ববান হওয়ার পরামর্শ দেন।
