মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(২৪ ডিসেম্বর) :: বর্তমান সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে বিদেশে ধান, চাল রপ্তানী করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ রেখেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাবার ড্যাম, কালভার্ট সহ কৃষ্টি উন্নয়নমূখী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
কিছু কিছু এলাকায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাসারিতার কারনে সরকারের উন্নয়নমূখী পদক্ষেপ ভেস্তে যাচ্ছে। অনুরূপ উখিয়া পশ্চিম ডিগলিয়া খালের উপর নবনির্মিত রাবার ড্যাম কৃষকের কোন কাজে আসছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
৫ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্ধে নির্মিত এ রাবার ড্যামে স্থাপন করা রাবারটি সিডিউল অনুযায়ী না বাসানোর কারণে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে। যে কারণে রাবার ড্যামের উপর দিয়ে প্রবাহমান পানির অপচয় হলেও কৃষি কাজে ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সদস্য কৃষকদের দাবী চলতি মৌসুমে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে বোরো চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অংশগ্রহণমূলক ক্ষুদ্রাকার পানি সেক্টর প্রকল্পের আওতায় উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম ডিগলিয়া খালের উপর পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির তত্ত্বাবধানে ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন রাবার স্থাপন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সিডিউল বর্হিভূত ১১ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন রাবার স্থাপন করেছে বলে সমিতি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ।
শনিবার ২৪ ডিসেম্বর সকালে রাবার ড্যাম এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাবার ড্যামের উপর দিয়ে পানি প্রবাহমান হওয়ার কারণে পানির অপচয় নিয়ে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষক হাজী ঠান্ডা মিয়া জানান, ১২ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন রাবারটি স্থাপন করা হলে চলতি মৌসুমে রাবার ড্যাম এলাকায় ২ হাজার একর জমি বোরো চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব ছিল।
স্থানীয় কৃষক এনামুল হক জানান, এছাড়াও পূর্ব নির্ধারিত স্থানে অফিস ঘর না করে ঠিকাদার তার ইচ্ছামত রাবার ড্যামের অফিস নির্মাণ করায় জমির মালিক জায়গা রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করতে অপারগতা প্রকাশ করছে। এনিয়ে সমিতি ও স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরোধ।
পশ্চিম ডিগলিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহে আলম জানান, সরকার নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়নি। যার ফলে উপর দিক থেকে বয়ে আসা পানি রাবার ড্যাম উপছে পড়ে পানির অপচয় হচ্ছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেনা। উপরন্ত রাবার ড্যামের উপর নির্ভর করে যে সমস্ত প্রান্থিক, ক্ষুদ্র ও বর্গাচাষিরা ধার দেনা করে আগাম জমি নিয়ে বীজ তলা রোপন করেছে পানির অভাব জনিত কারণে তারা আরো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ নিয়ে রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটি কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরোধ। কৃষকেরা তাদের ব্যয়কৃত অর্থ ফেরত দাবী করছে।
সমিতির সভাপতি ডাক্তার আব্দুর রহিম জানান, হতদরিদ্র কৃষক অধ্যুষিত পশ্চিম ডিগলিয়া এলাকায় রাবার ড্যামটি স্থাপন করা হলেও সিডিউল অনুযায়ী কাজ হয়নি। যে কারনে রাবার ড্যামটি মুল অবকাঠামোর ১ ফুট নিচে রয়ে গেছে। ফলে রাবার ড্যামের পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। যে কারণে বোরো মৌসুমের জমির যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরও পানির অভাবে প্রায় ২ হাজার একর জমি অনাবাদি থাকার আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল আলি লিটন জানান, বোরো চাষাবাদ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদার মেসার্স আবুল বশার রুদ্রা জানান, ৩৭৮ মিটার ব্যয়াসারদের রাবার ড্যাম ক্রয়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা বাড়িয়ে ৩৮০ মিটার ব্যয়সারদের রাবার স্থাপন করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট রাবার স্থাপনকারী নির্মাণ শ্রমিক নির্দিষ্ট স্থানে বেইচ স্থাপন না করে দেড় ফুট নিচে বেইচ স্থাপন করায় রাবার ড্যামে মজুদ রাখা পানি ওয়ারফ্লু হচ্ছে না। তিনি আরো স্থানীয় গরীব কৃষকদের সার্থে পুনরায় দেড় ফুট উচু করে বেইচ ঢালাই পূর্বক পূনঃ রাবার স্থাপন করার আশ^স্থ করেন।
Posted ৯:৫৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta