শহিদুল ইসলাম, উখিয়া(২০ জুলাই) :: কক্সবাজারের উখিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা রাজাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া থেকে মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসার অভিযোগে ৬টি মহিষ আটক করে কাস্টমস শুল্ক গুদামে জমা পূর্বক প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করলেও বিক্রিত মহিষগুলো মালিকানা দাবী করে একটি সুবিধাভোগী চক্র ভূয়া কাগজ পত্র সৃজন করে সহকারী কমিশনার কাস্টমস, কক্সবাজার সার্কেল বরাবরে আবেদন করে।
উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার সমরজিত বড়–য়া স্বাক্ষরিত একটি প্রেরিত পত্রে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।
উক্ত কমিটিতে উখিয়ার ঘাট কাস্টমস একসাইজ ভ্যাট ও শুল্ক গুদামের কর্মরত সুপার আবদুন নুরের নেতৃত্বে তদন্ত দল গত ১৮ জুলাই ঘটনাস্থলে পৌছার আগে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছে।
বিজিবির টহল দল উখিয়া সদর থেকে অনুমান ৪ কিলোমিটার দুরে ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু সীমানা সংলগ্ন করইবনিয়া এলাকার মৌলভীর কাটা নামক স্থান থেকে গত ১৭ জুন ৬টি মহিষ মালিক বিহীন অবস্থায় আটক পূর্বক মামলা রুজু করে উখিয়ার ঘাট কাস্টমস শুল্ক গুদামে জমা দেয়।
জমাদানের ৩ দিন পর ৪ লাখ টাকার মহিষ ২ লক্ষাধিক টাকা মূল্যে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করলেও ঐ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে উখিয়ার ঘাট শুল্ক গুদামে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুন নুর ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান আত্মসাতের পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
কিন্তু কর্মকর্তাদ্বয় দীর্ঘ ১ মাস অতিবাহিত হলেও মহিষ বিক্রির উল্লেখিত পরিমাণ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে জনৈক উখিয়ার চাকবৈঠা এলাকার আবদুল খালেদ চৌধুরীকে মহিষের মালিক সাজিয়ে ভূয়া কাগজ পত্র সৃজন করে মহিষ বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সহকারী কমিশনার কক্সবাজার সার্কেল কর্তৃক গঠিত তদন্ত দল গত ১৮ জুলাই ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে কথিত মহিষের মালিকের যোগসাজসে তাদের পক্ষীয় লোকজনের সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করেন। খালেদের বাড়িতে গিয়ে ভোজনে মিলিত হন এবং জনৈক উখিয়ার ঘাটের করিম উল্লাহ ও কথিত মহিষের মালিকের ভাই ইকবাল নামক ব্যক্তিদ্বয় ঐদিন কাস্টমসের সাথে রুদ্ধদার বৈঠক করে দ্বায়সারা ভাবে তদন্ত সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছে।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল উদ্দিন সুজন জানান, মহিষগুলো মিয়ানমারের, এটা শতভাগ সঠিক। একটি চোরাচালানী সিন্ডিকেট সীমান্তের করিডোর ফাকি দিয়ে মহিষ গুলো রাতের আধারে রেজু আমতলী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করায়। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে তদন্ত দলের সদস্য উখিয়ার ঘাট শুল্ক গুদামে কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মহিষ গুলো নিলামে বিক্রি পূর্বক টাকা সহকারী কমিশনার (কক্সবাজার সার্কেল) সমরজিত বড়–য়ার ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা করেছি।
তদন্ত দলের প্রধান উখিয়ার ঘাট শুল্ক গুদামে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুন নুর বলেন, এ বিষয়ে এখনো তদন্ত কাজ সম্পন্ন হয়নি, নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করা হবে। আমরা তদন্তে কি পেয়েছি সেটা জানা যাবেনা বলে আবদুল খালেকের বাড়িতে বিশাল খড়ের স্তুপ ও গোয়াল ঘর রয়েছে।
সহকারী কমিশনার (কক্সবাজার সার্কেল) সমরজিত বড়–য়া বলেন, তদন্ত টিম আমাকে এক ধরণের জানিয়েছে, আমি শুনছি এক ধরণের। এখন থেকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার জন্য আমি নিজেই বিষয়টি দেখব। তার ব্যক্তিগত একাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন।
Posted ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta