মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(১৩ জুন) :: নারী-শিশু নির্যাতন, খুন, গুম, অপহরণ,পাচারসহ অন্যান্য সহিংসতা উখিয়ায় উদ্বেগজনক বেড়েছে। অপরাধ প্রবণতা নেপথ্যে অহরহ ইয়াবা বাণিজ্য ও মাদক সেবনকে দায়ী করছেন অভিভাবক মহল। আইন সংস্থার লোকজনও প্রশাসন মরণনেশা ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে অভিযান অব্যাহত রাখলেও কার্যত সুফল আসছে না।
ইয়াবা পাচারের স্পর্শকাতর এলাকা পালংখালী ইউনিয়নের ঘরে ঘরে ইয়াবা সেবন ও পাচারকারীদের বেপরোয়া আচরণ, ইয়াবার লেনদেন নিয়ে সহিংসতা আশংকা জনকভাবে বেড়ে গেছে দাবী করে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি এম এ মনজুর জানান, মূলত ২টি কারণে পালংখালীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তৎমধ্যে অন্যতম সীমান্ত এলাকা দিয়ে সরাসরি ইয়াবা পাচার, পাচারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও ইয়াবা সেবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ার কারণে পারিবারিক সহিংসতা অন্যান্য দিনের তুলনায় উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে বেড়েছে।
অন্য একটি কারণ পালংখালী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ নিয়ে ঘরে ঘরে অশান্তি বিরাজ করছে। যে কারণে ছাত্রলীগ নেতা মুজিবুর রহমান জাবুকে ছুরিকাঘাতে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
উখিয়া থানা পুলিশ চট্টগ্রামের পাহাড়তলী জোড়াপুকুর এলাকা থেকে জাবু হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী রিজভীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও অন্যান্য আসামীদের হুমকি ধমকিতে অসহায় জাবু পরিবারকে মানবেতর ও আতংক নিয়ে দিনযাপন করতে হচ্ছে বলে নিহত জাবুর ভাই মামলার বাদী লুৎফুর রহমান জানিয়েছেন।
গত ১ জুন রতœাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া বাজার পাড়া গ্রামের মৃত সোনা আলীর ছেলে ইয়াবা পাচারকারী ও ইয়াবা সেবনে অভ্যস্ত পাষন্ড স্বামী ছৈয়দ হোছন (৩০) প্রকাশ্য দিবালোকে তার স্ত্রী একই গ্রামের খুইল্যা মিয়ার মেয়ে জুহুরা বেগম (২৮) কে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এঘটনায় খুইল্যা মিয়া বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এ যাবত খুনি ছৈয়দ হোছন কে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে পরিবারের অভিযোগ। খুইল্যা মিয়া জানান, ইয়াবা ও সেবন ও পাচার কাজে বাধাঁ দেওয়ায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এতিম হয়ে পড়েছে দুটি অবুজ শিশু।
পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীস্থ শিয়াল্যাপাড়া গ্রামের সফিকুর রহমানের স্ত্রী বয়োবৃদ্ধার নুর নাহার বেগম (৫৫) আহাজারি করে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে আলমগীর ভুলূ (২৮) গাড়ীর হেলপার হিসাবে চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
স্থানীয় ইয়াবা পাচারকারী আকবর আহমদ টাকার লোভ দেখিয়ে আলমগীর ভুলূকে দিয়ে ইয়াবা পাচার শুরু করে। এভাবে আলমগীর ভুলু কখন যে, ইয়াবা আসক্ত হয়ে পড়ে তা নিজের স্ত্রী পরিজনসহও জানে না।
এভাবে ইয়াবার লেনদেন নিয়ে আলমগীর ভুলূ ও আকবর আহমদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। একদিন গভীর রাতে ইয়াবা পাচারের কথা বলে আলমগীর ভুলুকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে।
প্রায় ১ মাস পর উখিয়া থানা পুলিশ বালুখালী জুমের ছড়া এলাকা থেকে আলমগীর ভুলুর লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় আকবর আহমদকে আসামী করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ আকবর আহমদকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
সদ্য জামিনে মুক্তি পেয়ে আকবর আহমদ আলমগীর ভুলূর বসতবাড়ি সহায় সম্পত্তি জবর দখল করেছে বলে আলমগীর ভুলূর মা নুর নাহার বেগম জানিয়েছেন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে ইয়াবা পাচারকারীদের তালিকা করে তাদের আইনের আওতায় আনতে ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত করেছে। গত ১ সপ্তাহে প্রায় ২২জন ইয়াবা পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
Posted ৮:৫২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy