মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(২৯ মে) :: ত্রাণ না পেয়ে চলে গেল শত শত নর নারী। সোমবার সকাল থেকে বৃহত্তর রাজাপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র শত শত মহিলা ত্রাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পাহাড়ে ভিড় জমাতে থাকে। এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের তাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে পুলিশ মাইকিং করে ত্রাণের জন্য আসা মহিলাদের যার যার বাড়িতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিলে মহিলারা পাহাড় থেকে চলে যায়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ ক্রমে গত রোববার সকালের দিকে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন দরিদ্রের ব্যানারে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। গ্লোবাল ওয়ান ও এপিসিডি প্রদত্ত এসব ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, আলু, তেল, চিনি, পেয়াজ, রান্নার সরঞ্জাম, লুঙ্গি, জামা কাপড় ও গুড়া দুধ। নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই উদ্যোগী হয়ে দরিদ্রদের মাঝে কার্ড বিতরণ করেন।
পরে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্লাহ। সচেতন মহলের অভিযোগ, পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে এই ত্রাণ গুলো মুসলিম নর নারীদের মধ্যে বিতরণ করার কথা। কিন্ত ব্যতিক্রম হলো কী করে? ত্রাণ বিতরণের সময় পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধূরী জনপ্রতিনিধিদের পূর্বে অবিহিত না করায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেও দেখা গেছে।
সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র মহিলারা ত্রাণ পাওয়ার আশা করে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের পাহাড়ে এসে জড়ো হতে থাকে। এসময় ঘিলাতলী পাড়া থেকে আসা মহিলা মরিয়ম খাতুন (৪৫), ছবুরা খাতুন (৫০), আছিয়া খাতুন (৪২)সহ বেশ কয়েকজন মহিলা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের জানান, গত রোববারে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। তাই আমরাও ত্রাণের জন্য এসেছি।
এসময় মহিলারা জানান, তারা ত্রাণ ছাড়া বাড়ি ফিরে যাবে না। অবস্থা বেগতিক ভেবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব মহিলাদের তাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।
মহিলারা ত্রাণের জন্য অনড় অবস্থানে থাকলে প্রশাসন পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে উখিয়া থানা পুলিশ মাইকিং করে মহিলাদের চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলে প্রায় ৪ ঘন্টা অবস্থান নেওয়ার পর মহিলারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, ত্রাণ দেওয়ার কথা কাউকেও বলা হয়নি। হয়তো মহিলারা গত রোববারে ত্রাণ দেওয়ার কথা শুনে উপজেলা প্রশাসনে জড়ো হয়েছে। তিনি জানান, তার কাছে ২শ প্যাকেট চিড়া, গুড় ও মুড়ি ছিল তা চেয়ারম্যানদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে উপজেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মচারী জানান, এনজিও সংস্থা যেসব ত্রাণ দিয়েছে তা দিয়ে গতকাল সোমবার ত্রাণের জন্য আসা মহিলাদের ত্রাণ দিয়ে বিদায় করা যেত। অথচ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্লাহ অধিকাংশ ত্রাণ সামগ্রী টেকনাফে নিয়ে যাওয়ার কারণে উদ্ধুট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্লাহর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Posted ৬:৩৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৯ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta