কক্সবাংলা ডটকম(৪ জুন) :: উয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লীগের ফাইনালে রোনাল্ডোর জোড়া গোলে জুভেন্টাসকে ৪-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ।কেউ পারেনি, আগে চারটি দল টানা দ্বিতীয় ফাইনাল খেলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে সফল হয়নি। রিয়াল মাদ্রিদ সেটা করে দেখাল। জুভেন্টাসের বিপক্ষে কার্ডিফ ফাইনালে ইতিহাস গড়ল রিয়াল। ৪-১ গোলে জিতে টানা দ্বিতীয় ও ১২তম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতল তারা।
১৯৫৫-৫৬, ১৯৫৬-৫৭, ১৯৫৭-৫৮, ১৯৫৮-৫৯, ১৯৫৯-৬০, ১৯৬৫-৬৬, ১৯৯৭-৯৮, ১৯৯৯-২০০০, ২০০১-০২, ২০১৩-১৪, ২০১৫-১৬, ১০১৬-১৭৷চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ডজন গপ্প লিখে ফেলল রিয়াল মাদ্রিদ৷কার্ডিফের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ঐতিহাসিক ১২ লস ব্ল্যাঙ্কোসদের৷সৌজন্যে রিয়াল মাদ্রিদের মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷
ফাইনালেও জ্বলে উঠলেন বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠ নক্ষত্রদের একজন৷প্রমাণ করে দিলেন বড় ম্যাচে তিনি দানবীয় হয়ে ওঠেন অবলীলায়৷রিয়াল ৪-১ হারাল জুভেন্তাসকে৷সিআর সেভেনের পা থেকে এল জোড়া গোল৷চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণ হওয়ার পর এই প্রথম কোনও ক্লাব শিরোপা ধরে রাখল৷
এদিন ম্যাচের ২০ মিনিটেই রোনাল্ডো এগিয়ে দেন রিয়ালকে৷এবারের আসরে ১১ নম্বর গোলটি করে ফেললেন পর্তুগিজ ক্যাপ্টেন৷বল জালে যাওয়ার আগে জুভেন্তাসের ডিফেন্ডার বোনুচ্চির পায়ে হালকা ছোঁয়া লাগে ঠিকই৷কিন্তু কিছুই করতে পারলেন না জিয়ানলুইজি বুঁফো৷এই নিয়ে চ্যাম্পিয়্ন্স লিগের তিনটি ফাইনালে গোল করলেন সিআর সেভেন৷
প্রথম দল হিসেবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৫০০ গোল করল জিদান অ্যান্ড কোং৷রোনাল্ডোর গোলের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মাসিমিলানো আলেগ্রির মুখে হাসি ফোটান মারিও মান্দজুকিচ৷হিগুয়েনের উঁচু পাস বুক দিয়ে নামিয়ে ওভারহেড কিকে নাভাসের মাথার উপর দিয়ে গোল করেন ক্রোয়েশিয়ার এই ফরোয়ার্ড।বিরতিতে খেলার ফল ১-১ থাকে৷
দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল আক্রমণের ঝড় তুলতে শুরু করে৷ম্যাচের ৬১ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে কাসেমিরোর শট স্যামি খেদিরার পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়িয়ে যায়৷
আর এই গোলের ঠিক তিন মিনিট পরেই ডান দিকের বাই লাইন থেকে লুকা মদ্রিচের ক্রসে কাছ থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন সিআর সেভেন।চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১২টি গোল হয়ে গেল তাঁর৷বার্সেলোনার লিওনেল মেসিকে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়ে গেলেন রোনালদো৷
একই সঙ্গে ক্লাব ও দেশ মিলিয়ে ৬০০টি গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন চারবারের বর্ষসেরা ফুটবলার৷ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে হুয়ান কুয়াদ্রাদো দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের সুবাদে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন৷তখনই জুভেন্তাসের মনোবল আরও ভেঙে যায়৷ম্যাচের ৯০ মিনিটে ইস্কোর বদলে নামা রিয়ালের ভবিষ্যতের তারকা মার্কো আসেনসিও জুভেন্তাসের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন৷
ফাইনালে রোনালদোর ইতিহাস: ইউরোপের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি ফাইনালে গোল করার তালিকায় দুই নম্বরে উঠে এলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এনিয়ে তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে লক্ষ্যভেদ করেছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। দুটি ভিন্ন আসরের ফাইনালে গোল করা লিওনেল মেসিকে পেছনে ফেলেছেন ব্যালন ডি’অরজয়ী।
ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ হিসাবে আনলে এ তালিকায় রোনালদোর উপরে কেবল রিয়ালের আরেক লিজেন্ড আলফ্রেদো দি স্তেফানো। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬০ সালে টানা ৫টি ইউরোপিয়ান কাপজয়ের পথে ফাইনালে গোল করেছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে চেলসির বিপক্ষে প্রথম ফাইনাল গোল করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রোনালদো। ৬ বছর পর অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ের ৪-১ গোলের জয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রিয়াল ফরোয়ার্ড।
মানজুকিচের মাইলফলক: অসাধারণ এক স্ট্রাইকে সমতা ফেরানো গোলে সম্মানজনক এক ক্লাবে জায়গা পেলেন মারিও মানজুকিচ। দুটি ভিন্ন ক্লাবের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে গোল করা তৃতীয় খেলোয়াড় হলেন এ ক্রোয়েশিয়ান।
২০১৩ সালের ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের জালে বল জড়ান মানজুকিচ। তার আগে এ কীর্তি অর্জন করেছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (ম্যানইউ ২০০৮, রিয়াল ২০১৪ ও ২০১৭) এবং ভেলিভোর ভাসোভিচ (পার্টিজান ১৯৬৬, আয়াক্স ১৯৬৯)।
রিয়ালের ৫০০তম গোল: প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৫০০তম গোলের মাইলফলকে রিয়াল। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি গোলের তালিকায় অনেক আগেই বার্সেলোনা (৪৫৯) ও বায়ার্ন মিউনিখকে (৪১৫) পেছনে ফেলেছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাব। এ মৌসুমে রোনালদোর প্রথম গোলে ৫০০’র ক্লাবে ঢুকে গেল রিয়াল।
Posted ২:৪২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৪ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta