কক্সবাংলা ডটকম :: সকালে ৮ ওভারের মধ্যে ১৭-২, বিরাট কোহলির চেহারাটা চেঞ্জ রুম থেকে বেরোতেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল এসসিজি। কিন্তু আউট হয়ে ফেরার সময়ে ফের বিদ্রুপ। যা এমসিজি-তে দেখেছি।
ক্রিজে এসে প্রথম বলেই খোঁচা স্লিপে স্টিভ স্মিথের তালুবন্দি। ডিআরএস এবং থার্ড আম্পায়ার জো উইলসনের সিদ্ধান্ত তখন তাঁকে বাঁচালেও কমেন্ট্রিতে অজ়ি প্রাক্তনদের গরিষ্ঠ অংশের দাবি, বিরাট আউট ছিলেন। মার্ক ওয় টেস্ট ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্লিপ ক্যাচার।
ফক্স স্পোর্টসে কমেন্ট্রিতে বলে দেন, ‘আমার দেখে মনে হয়েছে, বিরাট আউট ছিল। বলের নীচে স্টিভের আঙুল ছিল। এটা আউট হলে অবিশ্বাস্য একটা ক্যাচের সাক্ষী থাকতাম আমরা।’
প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া মানে ভাগ্য সেই ব্যাটারের দিকে। এর পরে বিরাট খেলছিলেনও ভালো। মেলবোর্নের চেস্ট-অন স্টান্স সামান্য বদলে সাইড-অন, যাতে ব্যাট দ্বিতীয় স্লিপ থেকে না নামে। বলের আরও কাছে গিয়ে খেলা যায়।
সিমিং উইকেটে বল সিম করছিল যথেচ্ছ, বোল্যান্ড ভোগাচ্ছিলেন তাঁকে। স্ট্রাইক রোটেট করে বিরাট চাইছিলেন, একই বোলারের ডেলিভারি যাতে পরপর খেলতে না হয়। একটা সিঙ্গল নিতে চাইছিলেন, ঋষভ থামালেন।
পরের বলেই আউট। ৬৯ বলে ১৭, ফের সিক্সথ স্টাম্পের বল তাড়া করে উইকেট দেওয়া। এত বড় একজন ব্যাটার বারবার কেন এই ভুল করবেন? ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরে বিরাটকে বারবার এই একই ডেলিভারিতে ফিরিয়েছিলেন জিমি অ্যান্ডারসন।
সেই বিরাটকেই দেখেছি, ২০১৮ সালের সফরে ইংল্যান্ডের সিমিং উইকেটে বলের পর বল ছেড়ে দিতে। ওই সফরে প্রায় ৬০০ রান, একবারও অ্যান্ডারসন ফেরাতে পারেননি বিরাটকে।
কিন্তু ২০১৮ সালের বিরাট আর ২০২৪ সালের বিরাটে অনেক তফাত। ওই সময়ে টেস্ট ব্যাটিং গড় প্রায় ৫৩ রানে পৌঁছে গিয়েছিল, এখন কমতে কমতে ৪৮। বিশ্ব ব্যাটিংয়ে ফ্যাভ ফোর বলতে তখন বোঝাত বিরাট, জো রুট, স্টিভ স্মিথ এবং কেন উইলিয়ামসনকে। লাল বলের ক্রিকেটে সবাই নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন, কিন্তু পিছিয়ে গিয়েছেন বিরাট।
এখন যা অবস্থা, সিডনিতে দ্বিতীয় ইনিংসে রান না এলে তাঁর লাল বলের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে। গৌতম গম্ভীর জমানায় তারকা প্রথা বা কে কবে কত রান করেছিল, সেটা আর গুরুত্ব পাচ্ছে না। পাচ্ছে না, কারণ বোর্ড সে ভাবেই এগোতে চাইছে।
সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিত-বিরাট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে থাকবেন, কিন্তু তার পরে? সাদা বলেও নিশ্চিত নয় দু’জনের ভবিষ্যৎ।
জো রুট, স্টিভ স্মিথ বা কেন উইলিয়ামসনরা যখন খেলে যাচ্ছেন, তখন লাল বলের ক্রিকেটে কেন বারবার একই ভুল হবে বিরাটের? ফিটনেস তাঁর পক্ষে, এই সফরেও পারথে সেঞ্চুরি আছে, কিন্তু কেন অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়েই চলেছেন?
অভিষেক নায়ার নন, গৌতম গম্ভীরও নন। এই দু’জন তাঁর রোগ সারাতে পারবেন বলে মনে হয় না। বিরাট যেতে পারেন রাহুল দ্রাবিড় বা সুনীল গাভাসকরের কাছে। কিন্তু তাঁর আকাশচুম্বী ইগো সেই রাস্তায় তাঁকে হাঁটতে দেবে? সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হবে।
আরও দুটো বছর টেস্টে তিনি খেলতে পারেন। কিন্তু সিডনিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ফেল করলে গল্প অন্যরকম হওয়ার সম্ভাবনা।
Posted ১:০১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta