বুধবার ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ থেকে ভারত পিছু হঠায় ক্ষতি বাংলাদেশের ?

শুক্রবার, ২৬ মে ২০১৭
1138 ভিউ
‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ থেকে ভারত পিছু হঠায় ক্ষতি বাংলাদেশের ?

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ মে) :: চীনের বহুল-আলোচিত ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ ( ওবিওআর) উদ্যোগ থেকে ভারত এ মাসেই নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে পশ্চিম সীমান্তে সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের যুক্তি দিয়ে। কিন্তু ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের মাশুল দিতে হতে পারে পূর্ব সীমান্তের বাংলাদেশকে – কারণ এর ফলে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যে ‘বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডর’ তৈরি হওয়ার কথা, তার ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

দিল্লিতে একাধিক ভারতীয় কূটনীতিক ও কানেক্টিভিটি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ওবোর নিয়ে চীন যে ধরনের মানসিকতা দেখাচ্ছে তাতে ভারত এখন বিসিআইএম নিয়েও উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। আর তার ফলে ভারত না-চাইলেও ফল ভুগতে হতে পারে বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের মতো এই প্রকল্পে যুক্ত অন্য দেশগুলোকে।

বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমারকে (বিসিআইএম) যুক্ত করে কলকাতা থেকে কুনমিং পর্যন্ত একটি অর্থনৈতিক করিডর তৈরির ব্যাপারে আলোচনা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই, আর চীনই ছিল তার প্রধান উদ্যোক্তা। কিন্তু তুলনায় চীন ‘ওবোর’ বা ওয়ান বেল্ট  ওয়ান রোড প্রস্তাবের অবতারণা করেছে হালে – আর সেই ওবিওআর-এর ভেতর বিসিআইএম-কে ঢোকানোর চেষ্টা থেকেই যাবতীয় গন্ডগোলের সূত্রপাত।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলছেন, ‘আমি যতদূর জানি ভারত ইতিমধ্যেই ওবিওআর-এর মধ্যে বিসিআইএমকে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিসিআইএম অনেক পুরনো, ওবোর নতুন। কিন্তু ওবিএআর-এর নামে চীন যদি সব কিছুকেই এখন তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে চায় তাহলে সেটা ভারতের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলছেন, ওবিওআর-এর একটা প্রধান উদ্দেশ্য হল আরব সাগরীয় অঞ্চলে চীনের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থকে সুরক্ষিত করা – আর তার মূল হাতিয়ার হল গোয়াদর বন্দর থেকে চীন পর্যন্ত সিপিইসি (চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর) স্থাপন। কিন্তু যেহেতু সেই করিডর গিলগিট-বালটিস্তানের ভেতর দিয়ে যাবে এবং ভারত সেটাকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে – তাই ভারত সেই করিডরের তীব্র বিরোধিতা করে নিজেদের ওবিওআর থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

একই ভাবে বিসিআইএম উদ্যোগে বেজিংয়ের প্রধান উদ্দেশ্য বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে চীনের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থরক্ষা। কিন্তু এখানে পাকিস্তানের মতো শুধু একটা দেশ নয় – তাদের ডিল করতে হবে তিনটে দেশের সঙ্গে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও ভারত। ফলে দিল্লি যদি বেঁকে বসে তাহলে গোটা প্রকল্পটাই ভেস্তে যাবে’, বলছেন প্রাক্তন এই কূটনীতিক।

এই ঘটনাপ্রবাহের ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ যে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা বলতে কোনও দ্বিধা নেই দিল্লিতে ইন্ডিয়া-আসিয়ান সেন্টারের প্রধান ড: প্রবীর দে-র। কানেক্টিভিটির এই বিশেষজ্ঞ বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে চীন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং আসিয়ান দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছেন – এবং তার মতে বিসিআইএম যদি কারও সবেচয়ে বেশি দরকার থাকে, সেটা অবশ্যই বাংলাদেশ।

দিল্লির একটি নামী থিঙ্কট্যাঙ্কের অধ্যাপক ড: দে বলছিলেন, ‘দেখুন বাংলাদেশ একটা নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে – ফলে পশ্চিমা বিশ্বে তারা কোটা-সহ নানা সুবিধা হারাতে বাধ্য, আজ বা কাল। ফলে এখন তাদের আরও বেশি করে চাই দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন বা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো – আর যে জন্য বিসিআইএমের মতো করিডর তাদের খুব দরকার।’

মিয়ানমারের তো তবু চীনের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত আছে, খুব সম্প্রতি তারা নিজেদের মধ্যে একটি গ্যাস পাইপলাইনও চালু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ যদি চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের দরজা খুলতে চায় – তাহলে বিসিআইএমই তাদের ভরসা। মুশকিল হল, ওবিওআর নিয়ে ভারতের অবস্থান সেই করিডরের ওপর একটা প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে’, বলছিলেন প্রবীর দে।

গত মাসের শেষ দিকে কলকাতায় মূলত চীনের উদ্যোগে বিসিআইএম নিয়ে আলোচনা ফের শুরু হয়েছে বহুদিন বাদে। প্রকল্পে যুক্ত বাংলাদেশ-সহ চারটি দেশের প্রতিনিধিরাই সেখানে ছিলেন। সেখানে ভারতের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেন ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রজত মিটার, আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন প্রবীর দে-ও।

কলকাতায় এপ্রিলের সেই বৈঠকে চীনকে ভারত পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, বিসিআইএম একটি স্বাধীন উদ্যোগ – যা নিয়ে অনেকদিন ধরে কথাবার্তা হচ্ছে। এখন যদি চীন বলে এই করিডর ‘ওবিওআর’ অংশ – তাহলে ভারত এই প্রকল্প নিয়ে আর এক পা-ও এগোতে আগ্রহী নয়। চীনা প্রতিনিধিরা তার জবাবে কোনও নির্দিষ্ট আশ্বাস দেননি, বা দিতে পারেননি।

যথারীতি বাংলাদেশের কাছে ভারতের এই অবস্থান শ্রুতিমধুর শোনাবে না – কিন্তু ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন অখন্ড কাশ্মীরে ভারতের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নটি দিল্লির কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতের এই অবস্থানের ফলে বিসিআইএম করিডরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে – যার অর্থনৈতিক মূল্য চোকাতে হতে পারে বাংলাদেশকে!

1138 ভিউ

Posted ৭:০১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ মে ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com