বিশেষ প্রতিবেদক :: বিতর্কিত ব্যবসায়ী কক্সবাজারের কলাতলী সাগরপাড়ে অবস্থিত তারকামানের হোটেল রামাদার সিংহভাগ মালিক ও সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের ‘ক্যাশিয়ার’ জসিম উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রাজধানীর বাড্ডা থানার মো. দুর্জয় আহম্মেদ হত্যাচেষ্টা মামলায় বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাসেল পারভেজ আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
কারাগারে আটক রাখার আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলাটি তদন্তাধীন এবং আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত আছে। আসামির থেকে পাওয়া তথ্যাদি ও নাম-ঠিকানা যাচাইয়ে প্রক্রিয়াধীন।
এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠ তদন্তসহ ন্যায় বিচারের স্বার্থে তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে বুধবার খিলক্ষেতের নিকুঞ্জে অবস্থিত হোটেল লা-মেরিডিয়ানের পাশে রাস্তা থেকে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ জুলাই মামলার বাদী মো. দুর্জয় আহম্মেদ কোটা আন্দোলনের মিছিলে অংশগ্রহণ করে মধ্যবাড্ডা ইউলুপের নিচে পোষ্ট অফিস গলির রাস্তার ওপর অবস্থানকালে এজাহারে বর্ণিত আসামি অর্থাৎ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশনায় তাদের অনুসারিরা এলোপাতাড়ি গুলি করলে বাদীর দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া মাথায় পিছনে আঘাত লেগে গুরুত্বর আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি।
ওই সময়ে আসামিরা বাদীকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। পরে পথচারীদের সহায়তায় বাদীকে এ এম জেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেফার্ড করে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
ওই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে ৯০ জনের নামে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার এজাহার নামীয় ২১ নম্বর আসামি জসিম উদ্দিন আহমেদ।
উল্লেখ্য গত ১০ জুলাই পদ্মা ব্যাংকের ১১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও উচ্চ আদালতের সঙ্গে পে-অর্ডার প্রতারণা করায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমদ এবং তার স্ত্রী তানজিনা সুলতানা জুহিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান।
সূত্রে জানা যায়, জসিম জেসিকা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং কক্সবাজারের বিলাসবহুল হোটেল রামাদার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চট্টগ্রামে অন্যান্য বাণিজ্যিক সম্পত্তিও রয়েছে তার। ঋণ খেলাপি হওয়ার পরও জসিম উদ্দিন উচ্চ আদালত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি ( ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) প্রদর্শন করার স্থগিতাদেশ এনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে গত ২৯ মে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বিতর্কিত ব্যবসায়ী জসীম কক্সবাজারের কলাতলী সাগরপাড়ে অবস্থিত তারকামানের হোটেল রামাদার সিংহভাগ মালিক। হোটেলটির পার্টনার সাবেক আইজিপি বেনজীরের মালিকানাও এখন জসীমের দখলে। সব মিলিয়ে এ হোটেলটিতে তার বিনিয়োগ ২৫০ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে। কলাতলী বিকাশ বিল্ডিং নামে পরিচিত একটি বহুতল আবাসিক হোটেলের ৭৯টি ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন জসীম। একই হোটেলে থাকা আরেক সাবেক আইজিপি, বর্তমানে কারান্তরিন শহিদুল হকের কাছ থেকে ১৩টি ফ্ল্যাটও কিনে নিয়েছেন তিনি। এসব ফ্ল্যাটের বাজারমূল্য শতকোটি টাকার কাছাকাছি।
Posted ১:০৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta