বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীর চাপ বাড়ছে

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট ২০১৭
822 ভিউ
কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীর চাপ বাড়ছে

বিশেষ প্রতিবেদক(২৯ আগস্ট) :: কক্সবাজারের উখিয়ার ঘুমধুম সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ঢেকুবুনিয়া ও তমব্রু বন্ধ করা যায়নি রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ। মিয়ানমারের সেনা অভিযানে প্রাণ রক্ষায় এসব সীমান্তের নোম্যানস ল্যান্ড, পার্শ্ববর্তী ফসলী জমি,জঙ্গল আর পাহাড়ে গত তিনদিন ধরে আশ্রয় নিয়েছে ১০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা।

আর এ সীমান্তে রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রার্থীদের চাপ যেমন বাড়ছে তেমনি নিরাপত্তা শংখা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও। এর মধ্যেও মঙ্গলবার কুতুপালং ক্যাম্পে ৫ হাজার এবং বালুখালী ক্যাম্পে ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে।

তবে বিজিবি বলছে, এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল উখিয়ার বালুখালীর সংলগ্ন এলাকায় ৪ রোহিঙ্গা পরিবারের সাথে কথা হয়। এরা টেকনাফ উপজেলার উলুবনিয়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মঙ্গলবার ভোরে এদেশে প্রবেশ করেন। উলুবনিয়া থেকে চাদের গাড়িতে করে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে।

মিয়ানমারের শীলখালী গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের স্ত্রী রফিজা খাতুন বলেন, গত হদিন ধরে আরার এলাকার পাশে ঘর বাড়ি জ্বালিপুড়ি দের, ইতল্লাই বলি এড়ে পালিয়ে আস্সিদে। কিছু নুআনি। আত্তু ঘর বাড়ি আছে, জমি জমা আছে। একই গ্রামের আবিদা খাতুন বলেন, আমার চোখের সামনে স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে মিলেটারী বাহিনী। আমার ৩ সন্তান নিয়ে কোন রকম প্রাণের ভয়ে পালিয়ে এসেছি।

ঘুমধুমের জলপাইতলী ও উত্তর পাড়া এলাকায় অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় নেওয়া ৭ শতাধিক মিয়ানমার নাগরিক সেদেশে ফেরৎ পাঠিয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছেন। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের রেজু আমতলী ঢালা দিয়ে শত শত রোহিঙ্গারা প্রবেশ করছে। আর তাদের গরু ছাগল স্থানীয় দুর্বত্তরা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

২৯ আগষ্ট (মঙ্গলবার) নাইক্ষংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু মৌজার চিকন ছড়া, মনজয় পাড়া, ফাত্রাঝিরি, লাকড়িছড়া বাজার দিয়ে শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ঢুকে পড়েছে। দিনের বেলায় পাহাড়ের দিকে তাড়িয়ে দিলেও রাতের আঁধারে বাঁধাহীন ঢুকে পড়ছে এসব রোহিঙ্গারা।

স্থানীয় মোঃ ইউছুফ ও আবু শামা, আবুল কালাম বলেন, ওয়ালিদং, মগ পাহাড়, গাছবনিয়া, গর্জনবনিয়া, বড় খালের আগা হয়ে সোমবার ২/৩ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নদীপথে অনুপ্রবেশ কালে বিজিবি আটকিয়ে পাহাড়ের দিকে ফেরত পাঠায়। পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে কিছু কালো পোষাকধারী অবস্থান করছে বলে শোনা যাচ্ছে।

এদিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে এদেশে পালিয়ে আসেও রোহিঙ্গারা রেহায় পাচ্ছে। তাদের গরু ছাগল সহ নগদ টাকা পয়সা স্থানীয় দুর্বত্তরা লুটপাট করছে বলে রেজু আমতলী গ্রামের ছৈয়দ আলম জানিয়েছেন।

সে জানায়, ওয়ালিদং দুই চাইল্যা পাহাড় এলাকায় গরু ছাগল ছেড়ে দিয়ে রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদেশে পালিয়ে আসছে। তারা টমটম ও সিএনজি গাড়ি যোগে রেজু আমতলী থেকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকে পড়ছে বলে কুতুপালং গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন।

তাদেরকে ডব্লিউএফপি ও ইউএনএইচসিআর সাহায্য সহযোগীতা করছে। চিকিৎসার নামে এমএসএফ হল্যান্ড কর্তৃক আসা রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিতেও দেখা গেছে। মিয়ানমারের এই বর্বরতা ও তান্ডব না কমলে আরকান রাজ্যে মুসলিম শূন্য হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। রাখাইন প্রদেশে শতশত রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মংডু জেলা থেকে পালিয়ে আসা কুতুপালংয়ে আশ্রয় নেওয়া আবদুল করিম। এখনো রোহিঙ্গা নিধনের তান্ডব থামানো হয়নি।

সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯২ জন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম আর ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা পুলিশ পোস্টে হামলা ও একটি সেনাঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার এবং তাদের নাগরিকত্ব প্রদানে জাতিসংঘের সাবেক মহা-সচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন একটি প্যানেলের আহ্বানের কয়েক ঘণ্টা পরই এ হামলার ঘটনা ঘটে। আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মি (এআরএসএ) এক টুইট বার্তায় হামলার দায় স্বীকার করেছেন। মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে

এআরএসএ জানায়, তারা ২৫টির বেশি এলাকায় আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

সংগঠনটির দাবি, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় রাথেতুয়াং শহর এলাকা গত দুই সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ। সেখানে রোহিঙ্গারা না খেয়ে মারা যাচ্ছেন। মংডুতে তারা যখন একই কাজ করতে যাচ্ছিল, তখন বার্মিজ উপনিবেশিক বাহিনীকে হটাতে চূড়ান্ত পর্যায়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছি। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, কয়েক হাজারের অধিক রোহিঙ্গা নাফ নদীর ওপারে সীমান্তে অবস্থান নিয়েছেন।

ঘুমুধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মঙ্গলবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। মিয়ানমার থেকে আসা লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

822 ভিউ

Posted ৮:৪০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com