কক্সবাংলা রিপোর্ট(৭ সেপ্টেম্বর) :: নির্জন বনের মতো সুন্দর পরিবেশে প্রকৃতি সবকিছুই পরিপাটিভাবে সাজিয়েছে, চাইলেই যেখানে প্রকৃতিকে ছোঁয়া ও অনুভব করা যায় অনায়াসে। সমুদ্রের বিশালতা, পাহাড় আর গহীন অরণ্যের সঙ্গে বন্যপ্রাণী ও পাখিদের কলকাকলিতেও মুখরিত থাকে সারাক্ষণ অনিন্দ্য সুন্দর এ স্থানটির নাম মহেশখালী আইল্যান্ড, যা বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ।
জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, মিঠাপানের বরজ, আদিনাথ মন্দির, পাহাড়ের ওপর পুকুর, মহেশখালী জেটি- ইত্যাদি মিলিয়ে সাগরকন্যা বলে পরিচিত মহেশখালী দ্বীপাঞ্চলের আয়তন প্রায় ৩৮৮ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা প্রায় চার লাখ।
পর্যটন খাতের উন্নয়নসহ দেশের আর্থিক অগ্রগতি আনতে কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের এ দ্বীপকে ডিজিটালে রুপ দিতে যাচ্ছে সরকার।
গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘মহেশখালী ডিজিটাল দ্বীপ নির্মাণ’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
প্রকল্পের সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। প্রকল্পটির আওতায় উচ্চতর ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মহেশখালী দ্বীপের অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা হবে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য ও জলবায়ু পরিবর্তনে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনসেবার মান উন্নয়ন করা হবে। দ্বীপ অঞ্চলের অধিবাসীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবধান কমানো হবে। দ্বীপে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রতিকূলতা এড়াতে অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকানো হবে বলেও জানিয়েছে বিসিসি।
চলতি সময় থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে ২২ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রকল্পটি। এর মধ্যে ১৬ কোটি ১২ লাখ টাকা বিদেশি সহায়তা পাওয়া যাবে।
বিসিসি সূত্র জানায়, পর্যটনের সম্ভাবনাময় এলাকা হিসেবে মহেশখালীর আর্থিক গুরুত্ব অনেক, পর্যটকদের আনাগোনাও ভালো। ডিজিটাল দ্বীপে পরিণত করতে সেখানে উচ্চগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
স্থানীয়দের ইন্টারনেটভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি নেটওয়ার্ক সলিউশন ও ইক্যুইপমেন্ট কেনা হবে। দ্বীপে আরও থাকছে মাইক্রোওয়েভ টাওয়ার ও মানসম্মত ব্যান্ডউইথ।
বিসিসি’র পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ এনামুল কবির বলেন, ‘মহেশখালী দ্বীপকে ডিজিটালে রুপ দিতে সকল ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নান্দনিক ভৌগলিক বেষ্টিত এ দ্বীপে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মৌলিক খাতগুলোরও ডিজিটালাইজেশন করা হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য ও জলবায়ু সংক্রান্ত খাতে থাকবে বিশেষ গুরুত্ব’।
‘দ্বীপ এলাকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য দূরবর্তী ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ, ব্যবসা, এবং দ্বীপভূক্ত নির্ধারিত কমিউনিটি ক্লিনিকেও থাকবে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা’।
বিসিসি’র পরিচালক (বিকেআইসিটি) সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো দ্বীপকে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ এবারই প্রথম। দ্বীপের সকল নাগরিকের সকল সুযোগ-সুবিধা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি, নির্ধারিত সময়েই সব কাজ শেষ হবে’।
Posted ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta