কক্সবাংলা রিপোর্ট(২০ জুন) :: বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যেন রাষ্ট্রদ্রোহী বা বেআইনি কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শরণার্থী বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) সিনিয়র প্রটেকশন অফিসার তাইবা শরীফ এবং অভিবাসন–শরণার্থী বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর রোহিঙ্গাদের দিকে বাড়তি নজর রাখায় গুরুত্বারোপ করেন।
তাইবা শরীফ বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, তবুও মানবিক কারণে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সত্যিই মহত্বের পরিচয় দিয়েছে। ঘরবাড়ি হারানো মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে এ দেশের জনগণও। কিন্তু দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে দিতে হবে তাদের নিজ দেশে। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের সাবেক রাষ্ট্রদূত মায়ো মিন্ট থানের সঙ্গে এক বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের বড় সমস্যা উল্লেখ করে তাদের ফেরত নিতে বলেন। শরণার্থী প্রত্যাবাসনে দুই দেশেরই আলোচনা শুরুর তাগিদ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিকরা বাংলাদেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমানে নিবন্ধিত ৩৩ হাজার এবং সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশের কক্সবাজারসহ ৫টি জেলায় বসবাস করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্র ধরে আসিফ মুনীর বলেন, মানবিক কারণে তাদের সহায়তা দিলেও তারা ক্রমেই জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে উঠছে।
এদিকে সরকারের গোচরে বা অগোচরে হোক আরব দেশ থেকে আসা ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো তাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ার আগেই সরকারকে সতর্ক হতে হবে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তিনি ঢাকায় বসবাসরত বিহারীদের নিয়েও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে কাজ করে আসা বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, আমরা অবশ্যই মানবিকভাবে সাহায্য করব, কিন্তু আগে তো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নজর রাখতে হবে। আমাদের আগে নিজের দেশের মানুষ আর তার সার্বভৌমত্বের কথা ভাবতে হবে। উন্নত জীবনলাভের আশায় সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে থাকা অভিবাসীদের ভিড়ে মিশে গিয়ে বাঙালিরা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আইওএমের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, গত বছরের প্রথম তিন মাসে ইতালিতে অবৈধভাবে পাড়ি জমানো শরণার্থীদের মধ্যে মাত্র একজন ছিল বাংলাদেশি, ২০১৭ সালে তা ২ হাজার ৮০০ জনে গিয়ে ঠেকেছে।
Posted ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২১ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy