কক্সবাংলা রিপোর্ট(৮ জানুয়ারী) :: কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়ায় আয়াত উল্লাহ নামে এক অভিভাবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষকসহ একদল লোক।এই ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।
রোববারের এই বর্বর ঘটনা ডিভিও এবং কিছু স্থির চিত্র ধারণ করে তা খরুলিয়া কেজি এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলে তোলপাড় শুরু হয়। অনেকেই এ ঘটনাকে বর্বরোচিত বলে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক কে শোকজ করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রণজিত কুমার বড়ুয়া জানান, এ ঘটনায় আয়াত উল্লাহ বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি।
ঘটনার শিকার আয়াত উল্লাহর বাড়ি ওই স্কুলের পাশেই। সোমবার সকালে নির্যাতনের শিকার আয়াত উল্লাহ জানান, সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল, অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদ করায় তার উপর নির্যাতন করা হয়।
আয়াত উল্লাহর দাবি, ইচ্ছা মাফিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে স্কুলটি।
একটি সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত স্কুলটিতে বিনা নোটিশে বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। স্কুল শিক্ষক, পাশের উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এসে তারা দড়ি দিয়ে বেঁধে বেদম মারধর করেন। এসময় তা ভিডিও ও ছবি তুলে রাখেন কয়েকজন শিক্ষক। ঘটনার পর পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এসে তার কাছ থেকে উল্টো মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন।
ঘটনার পর তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে জানতে পারেন এসব ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী আয়াত উল্লাহ বলেন, নির্যাতনকারীরা আমাকে পুলিশ ও সাংবাদিকের কাছে মুখ না খুলতে হুমকি দিচ্ছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা বললেন ভিন্ন কথা। খরুলিয়া কেজি এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ বোরহান উদ্দিন জানান, প্রায় সময় এই ব্যক্তি স্কুলে এসে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়। রোববার স্কুলে এসে বিনা কারণে গালিগালাজ করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক ঘটনা জানতে এলে তাকে ঘুষি মারেন আয়াত। এতে প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক আহত হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাকে মারধর করে।
খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক জানান, আয়াত উল্লাহ একজন ঝগড়াটে ব্যক্তি। যার বিরুদ্ধে মারা মারি সহ গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় ৮ টি মামলাও রয়েছে। কেজি স্কুলে ঘটনার মীমাংসা করতে গিয়ে তাকেও মারধর করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্ররা আয়াত উল্লাহকে বেঁধে মারধর করেন। পরে ক্ষমা চাওয়ায় মুচলেকা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসী এবং শিক্ষকদের মধ্যে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
Posted ৭:৪৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta