বিশেষ প্রতিবেদক(২০ মে) :: দেশের চাঞ্চল্যকর বনানী ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত আপন জুয়েলার্স পরিবারের সদস্যদের বালা-মুসিবত থেকে রক্ষার জন্য কক্সবাজারের দুই মসজিদে জুম্মার নামাজে মোনাজাত করার দায়ে শহরের বদরমোকাম জামে মসজিদের ইমাম মওলানা ইউনুছ ফরাজীকে শনিবার রাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।এছাড়া শহরের অপর মসজিদ বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রিদুওয়ানুল হক উক্ত অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেন এবং সকল মুসুল্লিসহ ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজেকে কোন প্রকারে রক্ষা করেন।
২০ মে দুই মসজিদটির পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বদরমোকাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন জানান, ‘ইমাম দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করা একটি জঘন্য ঘটনায় জড়িতদের নিয়ে শুক্রবার জুম্মার নামাজে মোনাজাত এবং আপন জুয়েলার্সের জন্য মসজিদে বিশেষ কোরআন খতমের ব্যবস্থা করে মসজিদের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মনে আঘাত দিয়েছেন। এ কারণে ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ’
অপরদিকে কক্সবাজার শহরের অপর মসজিদ বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির এক জরুরি ২০মে এশার নামাজের পর অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গত ১৯ মে জুম্মার নামাজ শেষে মসজিদের খতিব যা কাম্য নয় এমন অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে মোনাজাত করার ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোকপাত হয়।
সভায় উপস্থিত হয়ে খতিব মাওলানা রিদুওয়ানুল হক উক্ত অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেন এবং সকল মুসুল্লিসহ ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
এসময় তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন-‘ জনৈক ব্যক্তি তথ্য বিভ্রাট করে আকস্মিকভাবে উক্ত বিষয়ে মোনাজাত করার জন্যে বলে। আমি আল্লাহর প্রতি একনিষ্ট হয়ে পড়ায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদারকি না করে প্রতিদিনের মতো সহজ-সরল মনে বিষয়টি নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য বলি। এটা আমার মহাভুল হয়েছে।’
উক্ত সভায় এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি হয়েছে এবং খতিবসহ ৫ জনকে এ ঘটনার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনার সাথে জড়িয়ে বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক নিয়ে যে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার জন্য তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন হয়েছে সভায়।
প্রসঙ্গত কক্সবাজার শহরের দু’টি ঐতিহ্যবাহী মসজিদের জুম্মার নামাজে ধর্ষকদের রক্ষার জন্য এমন ধর্মীয় প্রার্থনায় নামাজে উপস্থিত মুসল্লিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
শহরের বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ ও বদর মোকাম জামে মসজিদের জুম্মার নামাজে ইমামদ্বয় এমন সব প্রার্থনা করেন। মোনাজাতে প্রার্থনার পর পরই মসজিদের মুসল্লিরা তীব্র সমালোচনায় মেতে উঠেন। এমনকি ফেসবুক-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে।
Posted ১:৫২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২১ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta