কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৯ মে) :: কক্সবাজার উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’।এটি কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত জারী করা হয়েছে। আর এ কারণেই সাগরে থাকা ট্রলার ও জেলেদের নিয়ে শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন কক্সবাজার উপকূলের ট্রলার মালিক ও জেলেদের স্বজনরা।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে কক্সবাজার উপকুলীয় এলাকায় সকাল থেকে আকাশ মেঘলা রয়েছে ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আর হঠাৎ প্রতিকূল আবহাওয়া এবং গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় মোরায় রূপ নেয়ায় সাগরে থাকা শহরের মৎস্য পল্লী এলাকাখ্যাত সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরারটেক’র শতশত মাছ ধরা ট্রলারের জেলেদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে চলা সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরারটেক’র প্রায় ২০ হাজার মানুষের আশ্রয় হয়েছে শহরের পাবলিক লাইব্রেরি, জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং পৌর প্রিপ্যারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে।সেখানেই গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন তারা।
এর মধ্যে কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া কাজল নামে নাজিরারটেক এলাকার এক যুবক কক্সবাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের অনেক স্বজন এবং প্রতিবেশি ইতোমধ্যেই সাগর থেকে নাজিরার টেক এলাকায় পৌঁছেছে। অনেকেই বঙ্গোপসাগরের মোহনায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে আসতে পারছে না। কিন্তু তাদের সঙ্গে মোবাইলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে।
এদিকে রাত ১০টার দিকে ডায়েবেটিক পয়েন্ট গিয়ে দেখা যায়,কিছু ট্রলার বিপদজ্জনক সোনাদিয়া মোহনায় উত্তাল ঢেউয়ের বিপদ থাকা সত্তেও কুলে ফিরে আসছে।আর কিছু ট্রলার একই মোহনায় ট্রলার ডুবির আশংকায় দুরে চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কমিশনার আকতার কামাল কক্সবাংলাকে জানান, সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরারটেকে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের বসবাস। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ এবং গভীর সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় সাগরে থাকা জেলেদের আগাম কোন খবর দিতে না পারায় ট্রলারগুলো নিরাপদে আসতে পারেনি। এ কারণে সাগরে থাকা অন্তত অর্ধশতাধিক ট্রলার ও জেলেদের নিয়ে শঙ্কিত আছি আমরা।যারা ইতোমধ্যে সমুদ্রে রয়েছে, তাদের ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহম্মদ জানান,সাগর থেকে মাছ ধরার ট্রলার ফিরে আসছে। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ এবং গভীর সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় সাগরে থাকা জেলেদের আগাম কোন খবর দিতে না পারায় শতাধিক ট্রলার নিরাপদে আসতে পারেনি।
এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোরা আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় ঘণ্টায় ৭০-৯০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্র বন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে৷
Posted ৩:০৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta