কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৩ জুলাই) :: কক্সবাজার জেলায় এইসএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।গত বছরের তুলনায় এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার,জিপিএ অনেক কমেছে।এবার জেলায় এইসএসসি তে পাসের হার ৫৫ দশমিক ৩২ শতাংশ যা গতবারের তুলনায় ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ কম।
২০১৬ সালে কক্সবাজারে পাস করেছিল ৫ হাজার ৬৫৫ জন এবং পাসের হার ছিল ৬৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর ২০১৫ সালে কক্সবাজারে পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৮জন শিক্ষার্থী। গতবছর যা ছিল ৬৬ জন। আর জেলায় ৩৮ জিপিএ-৫ প্রাপ্তির মধ্যে ৩৫ জনই কক্সবাজার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের।বাকী ৩টি পেয়েছে কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজ,মহেশখালী কলেজ , উখিয়া বঙ্গমাতা কলেজ ।
এবারে জেলার অধিকাংশ কলেজ’র সার্বিক ফলাফল নিম্নমানের হলেও প্রতিবারেরমত এবারও ঈর্ষনীয় সাফল্য পেয়েছে কক্সবাজার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। এবছর ১৯৮০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে তিন বিভাগ মিলে তাদের পাশের হার ৯২.৯৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন শিক্ষার্থী। যা জেলার মধ্যে শীর্ষে। তবে সার্বিক ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো ফলাফল বিবরণীতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে,২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কক্সবাজার জেলায় মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৯০৩ জন।এর মধ্যে পরীক্ষায় পাস করেছে ৪ হাজার ৯শ ২৫জন। পাশের হার ৫৫.৩২ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৮ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ২ হাজার ২১৯ জন ছাত্র এবং ২ হাজার ৭৮৬ জন ছাত্রী।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোট ১০৪২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। যেখানে পাস করেছে ৭৯০ জন। পাশের হার ৭৫.৮২ শতাংশ।জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন। গতবছর পাশ করেছিল ৬৭৬ জন এবং পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৩০ শতাংশ।
মানবিক বিভাগের ৪ হাজার ৭শ ৭২জনের মধ্যে পাশ করেছে ২ হাজার ২১৫ জন।পাশের হার ৪৬.৪২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। গতবছর ৪ হাজার ৫৫৭ জনের মধ্যে পাস করেছিল ২ হাজার ৪৪৭ জন এবং পাসের হার ছিল ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।
বাণিজ্য বিভাগের ৩ হাজার ৮৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১হাজার ৯শ ২০জন। এ বিভাগের পাসের হার ৬২.১৬ শতাংশ।। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ জন। গতবছর ৩ হাজার ৪২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছিল ২ হাজার ৫৩২ জন এবং পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
সার্বিকভাবে কক্সবাজারে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ এর সংখ্যা গত দুইবছর ধরে কমে আসছে।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ২ এপ্রিল উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। কক্সবাজার জেলায় এবার ৩০টি কেন্দ্রে সর্বমোট ১২ হাজার ৬৯১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আট হাজার ৮৬৭ জন, আলীম পরীক্ষার্থী দুই হাজার ৬৫৯ জন ও কারিগরী পরীক্ষার্থী এক হাজার ১৬৫ জন।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন,সঠিক মূল্যায়নের কারণে ২০১৭ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাসের হার কমেছে।
তিনি বলেছেন, গত ৩ বছর ধরে সঠিক পদ্ধতিতে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য কাজ করছি। কাজটি অনেক কঠিন; তবু এই বছর আমরা এটি করতে পেরেছি। তাই ফলাফল কিছুটা কমেছে। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। শিক্ষার সঠিক মূল্যায়ন ও গুণগত মান আমাদের বাড়াতেই হবে।
রোববার সচিবালয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, একই উত্তরপত্র ২০ জন শিক্ষককে দিয়ে মূল্যয়ান করে দেখেছি। একই লেখায় একজন শিক্ষক দিয়েছেন ৮, আরেক জন দিয়েছেন ৪। এই ধরনের অবস্থার মধ্যে দিয়েই চলে আসছিল বহু বছর। সে থেকে বেরিয়ে আসাটা অনেক কঠিন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই বছর প্রধান পরীক্ষকদের মাধ্যমে উত্তরপত্র প্রণয়ণ করা হয়েছে। সে উত্তরমালার আলোকে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরীক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য একটি প্রশ্নমালা প্রধান পরীক্ষকদের সরবরাহ করা হয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষকের মূল্যায়নকৃত উত্তরপত্রের ১২ শতাংশ উত্তরপত্র প্রধান পরীক্ষকের পুনঃমূল্যায়নের বাধ্যবাধকতা ছিল।
উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৭২৬ জন।
Posted ৩:৫৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta