ভেতরে ঢুকেই দেখা যায়,দুই শিশু সন্তান অবন্তিকা ও জ্যোতির নিথর দেহ। খাটের ওপর পড়ে আছে স্ত্রী বেবী চৌধূরীর দেহ।আর একই রুমে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত ছিল স্বামী সুমন চৌধূরীর দেহ। দুই শিশু সন্তান ও মা-বাবার নিহতের ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঠছে।কেন তাদের এ মর্মান্তিক মৃত্যূ হলো।দুই শিশু সন্তানকে কেন হত্যা করা হলো।তারাতো নিস্পাপ ছিল।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে দুই শিশু ও স্ত্রীকে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করলেও প্রতিবেশীদের ধারনা ব্যবসায় লোকসান ও দেনা সুদ করতে না পারার ক্ষোভে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যা করেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি সুমন চৌধুরী। কক্সবাজার শহরের গোলদিঘির পাড় সংলগ্ন জাদিরাম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে সুমন চৌধুরী, তার স্ত্রী ও দু’ কন্যসন্তান সহ চার জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার থানা পুলিশ। এঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যেও পাশাপাশি বিরাজ করছে শোকের মাতন।
নিহতরা হলেন, শহরের গোলদিঘির পাড়া এলাকার মৃত ননী গোপাল চৌধুরীর ছেলে সুমন চৌধুরী (৩৫), তার স্ত্রী বেবি চৌধুরী (২৫) এবং তাদের দু’মেয়ে অবন্তিকা (৫) ও জুঁতিকা (৩)। পুলিশ ধারণা করছে স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে স্বামী আত্মহত্যা করেছে, এমনটা স্থানীয়রাও ধারনা করছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর রাজবিহারী দাশ জানান, সকাল থেকে ওই বাড়িতে কারো সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের মনে সন্দেহ জাগে। বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। সারা দিন দরজা ভেতর থেকে লাগানো দেখে কৌতুহল জাগে তাদের মনে। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে চারটি লাশ পাওয়া যায়।
রাজবিহারী আরও জানান, স্ত্রী বেবী এবং দুই মেয়ে অবন্তিকা ও জ্যোতির লাশ ঘরে শোয়ানো অবস্থায় ছিল। সুমনকে গলায় দড়ি ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, বসত ঘর থেকে চালার খুঁটির সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বামী সুমন চৌধুরীর মরদেহ এবং অন্য ৩ জনের মৃতদেহ বিছানা শোয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃতদেহ গুলো উদ্ধার করে মর্গে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিস্তারিত কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
প্রতিবেশীরা ধারণা করছেন, ব্যবসায় লোকসানের কারণে অনেক দেনা ছিলো সুমন চৌধুরীর। বিভিন্ন সময় পাওনাদারের সাথে তার বাক-বিতন্ডা হতো। এই্ জন্য তিনি প্রায় সময় দুশ্চিন্তা ও হীনমন্যতায় ভুগতেন। হয়তো এ কারণে হত্যা ও আত্মহননের পথ বেচে নেন। এ ঘটনায় পুরো সনাতন ধর্মাম্বলম্বীদের মাঝে বিরাজ করছে শোকের মাতম।
কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
Posted ৮:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta