শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(১২ জুলাই) :: সৃষ্ট বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া কক্সবাজার সদরের জালালাবাদের বেড়ীবাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। এ উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ জুলাই সকাল হতে কয়েকটি বালির মেশিন ও শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, জনগণের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব করার লক্ষ্যে ভাঙ্গনকৃত সাড়ে ৪শ ফুট বেড়ীবাঁধের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। এদিন নির্মাণ কাজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী গাছ, বস্তা, মেশিনসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙ্গনকৃত স্থানে আনা হয়েছে। ঐদিন প্রাথমিকভাবে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ৩/৪ শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করা হবে।
তিনি আরো জানান, নির্মাণ কাজটি শেষ হতে অন্তত সপ্তাহ খানেক সময়ের প্রয়োজন। টেকসই ও মজবুত করার জন্য ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ১৬ হাজার খালি বস্তা আনা হচ্ছে।
ভাঙ্গনকৃত স্থানের উপরি অংশে স্পা নির্মাণের পাশাপাশি বস্তাও ফেলা হবে। নির্মাণ কাজটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প হলেও জনগণের ভোগান্তি লাঘব করতে তাৎক্ষনিক তিনি বিষয়টি নির্মাণ করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এ বেড়ীবাঁধের ভাঙ্গনটি নির্মাণ হলে রক্ষা পাবে ৩ ইউনিয়নসহ ৩০/৪০টি গ্রামের মানুষ।
সরেজমিন ভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ বসে থেকে নিজেই কাজের তদারকি করছেন। এসময় স্থানীয় এমইউপি সাইফুল হক, ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম উল্লাহ, জেলা ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ উদ্দীন খোকাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে ৩ জুলাই ঈদগাঁও নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা ৩/৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ঈদগাঁও নদী দিয়ে ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত ও রাবারড্যামের স্লুইচ গেইট বন্ধ রাখায় ৩ জুলাই বিকেলে বেড়িবাধের (জালালাবাদ অংশে) রাবার ড্যাম সংলগ্ন এলাকার বিরাট একটি অংশ পানির প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গন এলাকা দিয়ে ঈদগাঁও খালের বন্যার পানি অনুপ্রবেশ করায় ২ নং ওয়ার্ডের পূর্ব লরাবাক, ছাতিপাড়া এবং বৃহত্তর পালাকাটা ও বাহারছড়া, মোহনবিলা, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের খামার পাড়া, ঘোনা পাড়া, কালু ফকির পাড়া, নতুন মহাল, পোকখালী, নাইক্ষ্যংদিয়া, দক্ষিণ নাইক্ষ্যংদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ৩ হাজার ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায়।
উনুন জ্বালাতে না পেরে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া বসতবাড়ীর লোকজন বর্তমানে তীব্র খাদ্য ও পানীয় জলের সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা ইমরুল হাসান রাশেদ এবং ওয়ার্ড মেম্বার আরমান উদ্দিন।
বন্যার পানির কারণে বটতলীপাড়া ও উত্তর পালাকাটার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক বলেও জানান তারা। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ওই ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড এবং ১নং ওয়ার্ডের তেলী পাড়া ও মাছুয়াপাড়ার বেড়ীবাধ সংলগ্ন এলাকা।
ঈদগাঁও বাজার ফরাজীপাড়া সড়কের পূর্ব লরাবাগের হাফেজখানা পয়েন্ট দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে বিশাল বিশাল ৩টি অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় যানবাহন বন্ধ ও জনসাধারণের চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
জালালাবাদ ৯নং ওয়ার্ডের এমইউপি আরমান উদ্দীন জানান, ঐ সময় পানির স্রোতে ভেঙ্গে গিয়েছিল পালাকাটা এলাকায় অনেকের বসত বাড়ি ও সীমানা প্রাচীরের দেয়াল এবং ভেসে গেছে বহু হাঁস-মুরগীসহ গৃহস্থালী সামগ্রী।
Posted ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta