শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(১০ জানুয়ারী) :: কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওসহ সর্বত্রে হাতুড়ে ডাক্তারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে চেম্বার খুলে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছেন। কথিত ডাক্তারদের কয়েকজন ইতিপূর্বে ফার্মেসীতে কর্মরত ও ডাক্তার সহকারী হিসাবে পরিচয় ছিল। এখন তারা অভিজ্ঞ ডাক্তার।
এদের সিংহভাগেরই এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাশের সনদ নেই। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নামের আগে-পিছে হরেক রকমের চমকপ্রদ ডিগ্রি লাগিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচেছ।
এদের অপচিকিৎসায় স্থানীয় লোকজন যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে তেমনি আবার অনেক রোগীর জীবনও বিপন্ন হচ্ছে। ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে কমিশন পেতে ডাক্তার নামধারী এসব অপচিকিৎসক এমন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা লিখে দেন যা তাদের ডাক্তারী ডিগ্রীর আওতায়ও পড়ে না।
সদর উপজেলার ঝিলংজা, পিএম খালী, ভারুয়াখালী, খুরুশকুল, ঈদগাঁও, চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ইসলামপুর, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সর্বত্রে ভুঁয়া ডাক্তারদের রমরমা বাণিজ্য চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর নেই।
ঈদগাঁও বাসস্টেশনের পূর্বপাশের্^ জাপান মার্কেটের ময়না ফার্মেসী খুলে ব্যবসা করেন ডাক্তার সজল কান্তি বিশ^াস। নামের আগে ডাক্তার এবং পরে বি.এস.এম.এফ (ঢাকা), বিপিসি (ঢাকা), এক্স পিজিশিয়ান, এস.এম.আর.এস (বান্দরবান) লিখে ভিজিট নিয়ে প্রতিদিন তিনি রোগী দেখেন।
গিয়াস উদ্দীন ভুট্টো নামের এক রোগীর ব্যবস্থাপত্রে কয়েকটি ঔষধের নাম লিখে দেন যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও দ্বিধাগ্রস্থ হন। এ ডাক্তারের ভুল ঔষধে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঈদগাঁও ডায়াবেটিস কেয়ার এন্ড হসপিটালে ডাক্তার ইউছুপ আলীর শরণাপন্ন হন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের হাজীপাড়ার মৃত মোক্তার আহমদের পুত্র গিয়াস উদ্দীন ভুট্টো বাদী হয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এ ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শালিসে জরিমানাও গুণতে হয়েছে উক্ত ডাক্তারকে।
এদিকে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে হাতুড়ে ডাক্তারদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে লোকজন। এমবিবিএসসহ বিভিন্ন ডিগ্রীর সাইনবোর্ড লাগিয়ে রোগী দেখার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের টনক নড়েনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ঈদগাঁও বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় ডাক্তার নামধারী কয়েক ব্যক্তি বিভিন্ন ডিগ্রীর সাইনবোর্ড লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ সকল হাড়–তে ডাক্তাররা ঔষধ কোম্পানীর লোকদের খুশি করতে প্রেসক্রিপশনে অপ্রয়োজনীয় ঔষধ লিখে দেন। ফলে অসহায় ও গরীব রোগীরা ঔষধ কিনতে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এমনকি পাশর্^ প্রতিক্রিয়ায় শারীরিক নানা জটিলতার সম্মুখীনও হন। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব করে আসলেও রহস্যজনক কারণে নিরবতা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সচেতন যুবক নাছির উদ্দীন বলেন, ঈদগাঁও বাজারের অধিকাংশ ডাক্তার নামধারী শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই অবৈধভাবে নিজের নামের আগে ডাক্তার শব্দ বসিয়ে নামের শেষে বাহারী ধরণের ডিগ্রী সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগিয়ে হরহামেশা রোগী দেখছেন। এসব হাতুড়ে চিকিৎসকের কারণে এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনও বিপন্ন হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সিরাজ আহমদ বলেন, শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৩:১১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta