শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,সদর(৮ জুন) :: কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আউলিয়াবাদস্থ মারকাজে আমেনা নূরানী মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানার ৩ বার্মাইয়া মৌলভীর অপকর্মে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে শীর্ষক সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে সরকারী বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন হওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
বুধবার জেলা শহর থেকে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি অনলাইন ও দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে পত্রিকার সব কপি গায়েব করা হয় বলে কয়েকজন হকার জানায়।
তথ্যানুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ৩ বার্মাইয়া মৌলভীর চাঞ্চল্যকর তথ্য। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়ের সময় আরকান থেকে পাড়ি জমিয়ে পাশর্^বর্তী উখিয়া উপজেলায় বেশ কয়েক বছর বসবাস করে। এসময় বহুল আলোচিত জঙ্গি মুফতি হান্নানের উখিয়া উপজেলার ফালংখালীর লুন্ডা খালীর গহীন অরণ্যে গড়ে তোলা জঙ্গির প্রশিক্ষণ আস্তানায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
পুলিশের অভিযানে সে সময় বেশ কয়েক জঙ্গি প্রশিক্ষক আটক হলেও এ ৩ শিক্ষক পালিয়ে এসে ঈদগাঁওতে আশ্রয় নেয়। ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের আস্কারায় ঈদগাঁওতেও জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলার চেষ্টা চালায়।
বিষয়টি এলাকাবাসী টের পেলে রাতারাতি কৌশল পরিবর্তন করে মাদ্রাসা শিক্ষকতায় নেমে পড়ে। তারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্বীনি শিক্ষার নামে জঙ্গি প্রশিক্ষণও দেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ঐ ৩ শিক্ষক তৎকালীন এক জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় মোটা অংকের বিনিময়ে জাতীয় সনদ তৈরি করে বাংলাদেশী নাগরিক বনে যায়।
এদিকে কয়েক বছর আগে ইসলামাবাদে একটি প্রতিষ্ঠান তার নেতৃত্বে নিয়ে আসে। সে রূপ পাল্টিয়ে কখনো মুফতি, কখনো আরকানি পরিচয় দিয়ে মালেশিয়া, আফগানিস্থান, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন এলাকায় লোকজন পাঠিয়ে মাদ্রাসার নামে চাঁদা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে।
এমনকি উক্ত ইসলাম মৌলভীর আপন ২ সহোদর আবু সাঈদ ও মৌলানা রফিক স্বপরিবার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের মাধ্যমে বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছে। এরই মধ্যে উক্ত মৌলানা ইসলাম ২ রোহিঙ্গা মৌলভী আরমান ও ইয়াকুব আরকানিকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৩ রোহিঙ্গা মৌলভী মিলে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানটিকে একেবারে তাদের নাগালে নিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ঐ ৩ মৌলভীর নামে ঈদুল আযহার সময় গরু, শীতকালে শীতবস্ত্র ও বিভিন্ন সময় মোটা অংকের টাকা আসে। এলাকার পাতিনেতাদের ম্যানেজ করে গরু কিংবা শীতবস্ত্রগুলি কৌশলে মিয়ানমারের লোকজনের হাতে তুলে দেয়। অথচ সরকার এসব গরুর দাতাকে খুঁজলেও তারা থেকে যায় অধরায়। তারা যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে সেসব প্রতিষ্ঠানে সরকারী কোন আইন-কানুন মানে না।
এমনকি উক্ত ইসলাম মৌলভী নিজেই জাতীয় সংগীতের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে আসছে। এসব নিয়ে এলাকাবাসী উত্তেজিত হলে কৌশলে গা ঢাকা দেয়। বর্তমানে ঐ ৩ শিক্ষকের কলাকৌশলেই সরকারী কোন বিধি ছাড়াই এক প্রকার রোহিঙ্গা আইনে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
তাদের সাথে মধুর সম্পর্ক রয়েছে কক্সবাজার থেকে কয়েকবার আটক হওয়া জঙ্গি হাফেজ ছালা উল্লাহ ও টেকনাফের বেশ কয়েকজন জঙ্গি মদদদাতার সাথে। বিভিন্ন দেশ থেকে মাদ্রাসার নামে চাঁদার টাকাগুলি এখনো তাদের পকেটে রয়েছে। সচেতন মহলের দাবী, মায়ানমারের ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ইতিমধ্যে এক জনপ্রতিনিধি তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার নির্বাচন কমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যা বর্তমানে তদন্তাধীন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মৌলানা ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
Posted ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta