নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া :: কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে চরম সংকটের মুখোমুখি। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কয়েকজন চিকিৎসক বদলি হন।
এর সঙ্গে HGSP (হেলথ অ্যান্ড জেন্ডার সাপোর্ট প্রজেক্ট) প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ৩২ জন ডাক্তার, নার্স এবং সাপোর্ট স্টাফ বিদায় নিয়েছেন।
বিদায় নেওয়া জনবলের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন ডাক্তার, ৮ জন নার্স, ১৫ জন সাপোর্ট স্টাফ। তারমধ্যে ১ জন আয়া, ২ জন ওয়ার্ড বয়, ৩ জন ক্লিনার, ৩ জন নিরাপত্তা প্রহরী, ২ জন ইমারজেন্সি এটেন্ডেন্ট এবং ৪ জন মেডিক্যাল সাপোর্ট স্টাফ।
প্রকল্পটি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও ইউনিসেফের অর্থায়নে পরিচালিত এবং বাস্তবায়নে অংশীদার ছিল পার্টনার্স ইন হেলথ ডেভেলপমেন্ট (পিএইচডি)।
এই সংকটের ফলে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (ওটি), ডেন্টাল, এবং এক্সরে সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। চিকিৎসকের অভাবে গর্ভবতী নারীদের চেকআপসহ অন্যান্য জরুরি সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বক্তব্য:
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রেজাউল হাসান জানান, HGSP প্রকল্পটি ২০২২ সাল থেকে সিজারিয়ান সেকশন, জেনারেল সার্জারি এবং নবজাতকদের বিশেষ সেবা (এনআইসিউ) চালু রেখেছিল। তবে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এসব সেবা সীমিত পরিসরে পরিচালিত হবে।
নবজাতকদের বিশেষ সেবা (এনআইসিউ) চালু রাখা হবে, তবে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সেবা চিকিৎসকের অভাবে আপাতত বন্ধ থাকবে।
ডাঃ রেজাউল আরও জানান, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নতুন প্রকল্প ISO শুরু হবে। এটি চালু হলে বন্ধ হওয়া সেবাগুলো পুনরায় সচল হবে।
সহযোগিতার আহ্বান:
গত রবিবার দায়িত্ব গ্রহণের পর ডাঃ রেজাউল হাসান দ্বীপবাসী ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি সেবাগ্রহীতাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতি দেন।
স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা পুনরায় সচল করার দাবি জানিয়েছেন। তবে সংকট কাটাতে নতুন প্রকল্পের বাস্তবায়ন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র পাঁচজন, যার মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে থাকায় কার্যত দায়িত্ব পালন করছেন চারজন।
এছাড়া কনসালটেন্ট রয়েছেন চারজন, তবে তারা সপ্তাহে মাত্র একবার করে হাসপাতালে আসেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। নার্স রয়েছেন ৬জন এবং মিডওয়াইফ ৪জন। কোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেই।
এদিকে এই অব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা সেবার সংকটে স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে হাসপাতালের সেবা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। তবে সংকট কবে কাটবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
Posted ১২:৪৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta