এম.নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া(১১ সেপ্টেম্বর) :: কক্সবাজারের কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপারে স্পীড বোটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের মাধ্যমে যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ডেনিস বোটগুলোও নির্দিস্ট সময়ের ঠিক ৫-১০ মিনিটি আগেই রির্জাভ নাম ভাঙ্গিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে নিয়ম- নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ইজারাদারের নাম ভাঙ্গিয়ে নিরীহ যাত্রীদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চ্যানেলে চলাচল করা বোটের চালকেরা।
বিশেষ করে স্পী বোটের চালকেরা। এবিষয়ে যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে এসব বোটের চালকেরা অশালীন আচরনসহ বোট থেকে নামিয়ে দিয়ে সম্মানহানী ঘটাচেছ নিয়মিত। এতে করে ঘাটে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে ইজারাদারের কর্মচারীরা। এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগী যাত্রী সাধারণের।
কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপারে মগনামা-বড়ঘোপ ঘাটে নিয়মিত যাতায়ত করা অনেক যাত্রী এ প্রতিনিধিকে অভিযোগ করে বলেন, স্পীড বোট চালক মনজুর ও শুক্কুর নামের দুই ব্যক্তি অতিরিক্ত টোল আদায় করে যাচ্ছেন।ইজারার নিয়ম অনুযায়ী বড়ঘোপ-মগনামা ঘাট পারাপারে জন প্রতি (মানুষ) স্পীড বোট-৭০ টাকা ও ডেনিস বোট-২০ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু কুতুবদিয়া দ্বীপের প্রধান এই ঘাটে যাত্রীদের জিম্মি করে স্পীড বোটের চালকেরা আদায় করছেন ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
যাত্রীরা আরো অভিযোগ করেছেন, ঝুঁকি নিয়ে চ্যানেল পারাপারের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও তার কোন নিয়মই মানছে না তারা। এমনকি তাদের স্পীড বোটে চড়ে কোন পর্যটক প্রথমবার কুতুবদিয়া বেড়াতে আসলে দ্বিতীয়বার আসার কথা স্বপ্নেও নিবে না বলে জানান যাত্রীরা। এছাড়া এই দুই চালক এত বেপরোয়া ও অসতর্কভাবে স্পীড বোট চালান যে, যে কোন মুহূর্তে প্রাণহানীর মত বড় ধরনের র্দূঘটনার আশংকা করেছেন অনেকে।
এব্যপারে ওই চালকের সাথে কথা হলে তারা জানান, কুতুবদিয়া উপজেলার সাবেক ইউএনও সালেহীন তানভীর গাজী ইজারা নীতিমালায় নতুন নতুন সংযোজন-বিয়োজন করে তাদের ব্যবসার অনেক ক্ষতি করেছেন। নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছেন। তিনি যাওয়ার পর থেকে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হচ্ছে এখন। বর্তমান ইউএনও তাদের ফ্যাভারে আছেন বলেও জানান তারা।
এব্যাপারে একাধিক যাত্রী বলেন, সাবেক ইউএনও সালেহীন তানভীর গাজী কুতুবদিয়া থাকাবস্থায় অনেক যুগান্তকারী প্রদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কেউই অন্যায় ও অনিয়ম করার সাহস পর্যন্ত করেনি। তিনি যেতে না যেতেই সব কিছু যেন আবারো পূর্বের রূপ ধারণ করছে।
কিন্তু পারাপার ঘাটের ইজারাদার আবুল কালাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন কর্মচারীকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের জন্য বলিনি। হাতে নাতে প্রমাণ পেলে ওইসব কর্র্মচারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যপারে কুতুবদিয়া উপজেলার আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ সিদ্ধান্তর হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে কুতুবদিয়াকে পর্যটনে পরিপূর্ণ করে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বর্তমান ইউএনও সুজন চৌধুরী। এ জন্য তিনি চট্টগ্রাম-ক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া-বরইতলি ইউনিয়নের নতুন রাস্তার মাথায় স্থাপনের জন্য আর্টিস্টদের দিয়ে কুতুবদিয়া গেইট নামের একটি মডেলও তৈরি করেছেন।
সমূদ্রগর্ভে হারিয়ে যাওয়া পুরাতন বাতিঘরের আদলে অবিকল আরেকটি বাতিঘর স্থাপনের পরিকল্পনাও করেছেন তিনি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
কিন্তু কুতুবদিয়ার প্রবেশদ্বারে পর্যটকরা এ ধরনের অনাকাংকিত পরিস্তিতির সম্মূখিন হলে বর্তমান ইউএনও’র সদূর প্রসারী মহতী উদ্যোগ ব্যস্তে যাবে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন নাগরীক মহল।
Posted ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta