কক্সবাংলা ডটকম(২৭ জুন) :: সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তবিহীন অবস্থায় থাকলে তা বেদখল ও বেহাত হবার সম্ভাবনা থাকে, আবার বিপুল পরিমাণ কৃষি খাস জমি বন্দোবস্তের আওতাবহির্ভূত থাকলে দেশের সার্বিক উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। তাই কৃষি জমির সুষম বণ্টনের মাধ্যমে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “ভূমি সংস্কার” সরকারের একটি মৌলিক অঙ্গীকার। খাস জমি চিহিৃত করে ভূমিহীন ও প্রায় ভূমিহীন চাষী পরিবারের মধ্যে বিতরণ এবং বাস্ত্তহারা পরিবারসমূহের মধ্যে বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য খাস অকৃষি জমি বণ্টন “ জাতীয় ভূমি সংস্কার” কার্যক্রমের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
খাস জমিঃ সরকারি খাস জমি বলতে ব্যক্তি, সংস্থা বা অন্যান্য সরকারি বিভাগের মালিকানা বহির্ভূত ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাস জমি বুঝবে এবং নিম্মোক্ত শ্রেণীর জমি ইহার অন্তর্ভুক্ত হবেঃ
(ক) কালেক্টরের ১নং খতিয়ান এবং ৮নং রেজিস্টারের অন্তর্ভুক্ত সকল জমি।
(খ) নদী বা সমুদ্রগর্ভ হতে জেগে উঠা চরের জমি যা সিকস্তি জমির পুনরাবির্ভাব (পয়স্তি) হোক অথবা সম্পূর্ণভাবে নতুন চরই হোক (জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০ এর ৮৬ ধারা।
(গ) বাংলাদেশ ল্যান্ড হোল্ডিং লিমিটেমন অর্ডার, ১৯৭২ (১৯৭২ সালের ৯৮ নং আদেশ) এর ৩ ধারা মোতাবেক পরিবার/সংস্থার মালিকানাধীন ১০০ বিঘার অতিরিক্ত সরকারের নিকটে সমর্পনযোগ্য জমি।
(ঘ) সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রয়কৃত জমি।
(ঙ) জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০, এর ৯১ ধারা মোতাবেক অধিগ্রহণক্রত জমি।
(চ) মালিকানা ও দাবিদারবিহীন জমি এবং
(ছ) সরকারি বিভাগ বা বিধিবদ্ধ সংস্থার জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে যে পরিমাণ জমি অব্যবহার্য থাকার কারণে সরকার পুনঃগ্রহণ করেছেন।
খাস জমি বিতরণের উদ্দেশেঃ
১. ভূমিহীনদের পুনবার্সন ২. দারিদ্র বিমোচন ৩. বর্গাচাষ পদ্ধতি রহিতকরণ ৪. আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ৫. সিলিং বহির্ভুত জমির মালিকানা রহিতকরণ ৬. খাস জমির অবৈধ দখল রোধ ৭. খাস জমি অব্যবহৃত/পতিত না ৮. শহরমুখী জনস্রোত রোধনকরণ ৯. জমির বহুমুখী নিশ্চিতকরণ ১০. ইারীর ক্ষমতায়নের ব্যবস্থাকরণ ১১. আবাসন সমস্যার সমাধান ১২. খাস জমিতে শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষি জমির নির্ভরতা কমানো ১৩. কুঠির শিল্পের প্রসার ১৪. হাঁসমুরগীর খামার/পোলট্রি ফার্ম তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন ১৫. দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন ১৬. রাজনৈতিক অংগীকার ১৭. সরকারি জমির স্বার্থ সংরক্ষণ ১৮. উৎপাদন বৃদ্ধি ১৯. জমির সুষম বন্ঠন ২০. আদর্শ গ্রাম/আবাসন সৃষ্টির মাধ্যমে ঠিকানাহীনদের ঠিকানা প্রদান ২১. আর্থ-সামজিক অবস্থার উন্নয়ন ২২. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিস্ঠা ২৩. মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি।
বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাস জমিঃ নিম্মোক্ত শ্রেণীর জমি বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাস জমির অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ভূমি সংস্থার কার্যক্রমের আওতায় ভূমিহীনদের মধ্যে বণ্টন করতে হবেঃ
(ক) ৮নং রেজিস্টারের অধিগ্রহণ ২য় খন্ডের অন্তর্ভুক্ত সকল বন্দোবস্তযোগ্য খাস কৃষি জমি।
(খ) জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০ এর ৯২ ধারা মোতাবেক পরিত্যক্ত ও বকেয়া করের দায়ে সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রয়কৃত জমি।
(গ) রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সালের ৯৮ নং আদেশ মোতাবেক ১০০ বিঘার অতিরিক্ত ব্যক্তি/সংস্থার মালিকানাধীন সমর্পিত জমি।
(ঘ) নদী বা সমুদ্রগর্ভ হতে জেগে উঠা চরের জমি যা সিকস্তি জমি পয়স্তিই হোক বা নতুন চর হোক।
(ঙ) অন্য যে কোন আইনে সরকারের নিকট সমর্পিত জমি।
(চ) ৮নং রেজিস্টারের ১ম খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত জমি যার প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়ার কালেক্টর কর্তৃক বন্দোবস্তযোগ্য বলে ঘোষিত হয়েছে।
Posted ২:৩২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta