হাবিবুর রহমান সোহেল,নাইক্ষ্যংছড়ি(২ জানুয়ারী) :: গত ৩০ ডিসেম্বর রামুর গর্জনিয়াতে বাল্য বিবাহ নিয়ে একটি বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশিত হলে, উপজেলা প্রশাসনের টনক নড়ে। এতে ইউনু শাহাজান আলী তৎখানিক অভিযান চালিয়ে ওই বাল্য বিবাহ পন্ড করে দেয়। এবং বাল্য বিবাহে সহযোগিতা করার দায়ে রামুর গর্জনিয়া ইউপি সদস্য আহসান উল্লাহ কে বহিস্কার করা হয়েছে। এই ঘঠনায় গর্জনিয়া কচ্ছপিয়ায় তোলপাড়ের সৃষ্ঠি হয়েছে।
গত ১ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহান আলীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম কে কড়াভাবে সতর্কসহ ব্যবস্তার নেওয়ার ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সাথে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক ককসবাজার, স্তানীয় সরকার বিভাগ ককসবাজার, উপজেলা চেয়ারম্যান রামু, উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাজান আলী স্বাক্ষরিত বিঙ্গপ্তিতে জানা যায়, রামুর গর্জনিয়াতে পিইসি পরীক্ষার্থী মরিয়ম কে গোপনে বিয়ে দিচ্ছে পরিবার,এমন খবর অনলাইন নিউজ পেপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে, রামুর ইউনু তৎখানিক তার অফিসার দিয়ে ব্যবস্তা গ্রহন করেন।
আর এতে পরিষদের কর্মকর্কা ও চৌকিদারদের বাধা প্রদান করে ওই আহসান উল্লাহ মেম্বার। যে ঘঠনা রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানতে পেরে ওই আহসান উল্লাহর বিরুদ্বে তৎখানিক ব্যবস্তা গ্রহন করেন।
ইউএনও’র বার্তায় জানানো হয় বহিস্কৃত আহসান উল্লাহ মেম্বার কে পরিষদের বেতন ভাতা বন্ধ পুর্বক সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে বিরত রাখতে। এই বিষয়ে গর্জনিয়া ইউপি চেয়াম্যান কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহনের নির্দেশ দেন। আর সেই সাথে মেম্বার আহসান উল্লাহ কে উপযোক্ত কারন দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়।
গত২৯ ডিসেম্বর গর্জনিয়া জুমছড়ি এলেকায় সরজমিনে পরিদর্শন কালে জানা যায়, জেলার রামু উপজেলাধীন গর্জনিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম জুমছড়ি এলাকার কৃষক মোঃ হোচনের কিশোরী কন্যা মরিয়ম বেগম (১৩) সম্প্রতি অনুষ্টিত পিইসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।জুমছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
জুমছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হামিদুর রহমান জানান মরিয়ম অত্র বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী ছিল,পড়ালেখায় ও অত্যন্ত মেধাবী,সবেমাত্র পিইসি পরীক্ষা দিয়েছে।এমন একজন কিশোরী মেয়ে কে অসময়ে জোর করে বিয়ের দেয়ার খবরে আমরা রীতিমতো আতংকিত।জুমছড়ি এলাকার আবু তাহের জানান দরিদ্র দিনমজুর মোঃ হোচন অর্থাভাবে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেক বাচ্চা সন্তানের সংসার নিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
এমন পরিস্হিতিতে ১৩ বছরের কিশোরী মেয়ে কে কক্সবাজারের একজন অর্থশালীর কাছে বিয়ে দিচ্ছে বলে এলাকায় লোকজনের মুখে মুখে শুনছি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জন জানিয়েছেন, কিশোরী মরিয়মের বাবা মোঃ হোচনের নিকটাত্মীয় কক্সবাজারের ঝিনুক মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর।এই আব্দুল গফুর ই মুলত তার একজন পরিচিত ধনাঢ্য ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক ফায়দার লোভ দেখিয়ে কিশোরী মরিয়মের বাবা মোঃ হোচন ও মা রশিদা খাতুন এর সম্মত করেছে।
গত ২৯ ড়িসেম্বর কিশোরী মরিয়ম (১৩) কে নিজ বাড়ী পশ্চিম জুমছড়ি মরিচ্যাচর এলাকা থেকে কক্সবাজার সদরের ঝিনুক শামুক ব্যবসায়ী আব্দুল গফুরের বাসায় নিয়ে আসে।গোপনে বিয়ের সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
কিন্তু বাধ সেধেছে বিয়ের প্রাপ্ত বয়স, বয়স ১৮ বছর করে জম্ম নিবন্ধন করার জন্য মোটা অংকের মিশন নিয়ে গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সহ দায়িত্বশীলদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।আবার সদর উপজেলা কাজী অফিসের দায়িত্বশীল কয়েকজনের সাথে চুক্তিতে কাবিননামা করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এলেকার সচেতন মহল এ ঘঠনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। পরে উপজেলা প্রশাসনের এমন যুগান্ত কারী পদক্ষেপে এলেকার সর্ব সাধারন ধন্যবাদ জানান।