এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: ৫ আগস্ট দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট পরবর্তী সময়ে কক্সবাজারর চকরিয়া থানায় ওসি হিসেবে পোস্টিং পেয়েছেন চৌকস পুলিশ পরিদর্শক মো: মনজুর কাদের ভূইয়া।
২০২৪ সালের শেষের তিনমাস তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকা নিয়ে গঠিত প্রায় ৪ কোটি মানুষের অমিত সম্ভাবনার জনপদ চকরিয়া থানায়।
এরইমধ্যে তিনি দক্ষতার সঙ্গে পুলিশের পেশাগত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নানামুখী অপরাধ প্রবণ এলাকায় অপরাধী চক্রের লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দাগী অপরাধী বিশেষ করে চিহ্নিত দখলবাজ চাঁদাবাজ মাদক কারবারি ও চোর ডাকাত ছিনতাইকারী সন্ত্রাসী চক্রের আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন। পুলিশের কঠোর ভুমিকার কারণে বর্তমানে উপজেলার অপরাধ প্রবণ এলাকা গুলোতে অনেকটা নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এভাবে তিনি চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করার পাশাপাশি পুলিশি সেবা জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের হারানো ইমেজ ফেরানোর মাধ্যমে সুদক্ষ ও মানবিক চরিত্রের একজন হিসেবে নিজের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ভূইয়া।
একটি ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চকরিয়া উপজেলার প্রতিটি এলাকাতেই ছুটে চলেছেন ওসি মঞ্জুর কাদের ভূইয়াসহ পুলিশের বিভিন্ন আভিধানিক টিমের সদস্যরা।
মুলত প্রতিটি এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং জনসাধারণের মাঝে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই তিনি এই উদোগ নিয়েছেন।
এছাড়াও যে কোন অভিযোগ নিয়ে সেবাপ্রার্থী থানায় গেলে তাৎক্ষণিক সেটির কার্যক্রম শুরু করে দেন ওসি। থানায় আগত সেবাপ্রার্থীকে ওসির কক্ষে প্রবেশে আলাদা অনুমতি নিতে হয় না সেবাপ্রার্থীদের। মানবিক গুণাবলী ও দায়িত্বশীল ওসির বিরামহীন পুলিশি সেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সেবাপ্রার্থী জনগণ।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মঞ্জুর কাদের ভূইয়া বলেন, “আমার অফিসকক্ষে প্রবেশ করতে সেবাপ্রার্থী কাউকে কোনো অনুমতি নিতে হয় না এবং আমাকে স্যার বলে সম্বোধন করার প্রয়োজন নেই। পুলিশ জনগণের বন্ধু। আমরা সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে বন্ধুর মতো করে ব্যবহার করি। সুন্দর ও সহজভাবে পুলিশি সেবা দেওয়ার আমার কাজ।” এভাবে প্রতিদিন সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ অনুরাগ সরাসরি শুনছেন ওসি।
একইভাবে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে থানায় আগত সেবাগ্রহীতাকে দিচ্ছেন আইনি সহায়তা। ওসির কাছে তাৎক্ষণিক সেবা পেয়ে মুগ্ধ সর্বশ্রেণির মানুষ। ওসির বিরামহীন সেবায় ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া পড়েছে চকরিয়া জুড়ে।
চকরিয়া থানার মিডিয়া শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চকরিয়া থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ভূইয়া ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চকরিয়া থানায় পোস্টিং পেয়েছেন। তিনব যোগদান করার পর থেকেই থানার আগের চিত্র তিনি পাল্টে দিয়েছেন, থানাকে বানিয়েছেন জনগণের ভরসাস্থল।
জনগণ আর নিজের মধ্যে দূরত্ব না রেখে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন অতি সাধারণ একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে। সব সেবা প্রার্থী তার কাছে সমান।
তিনি যোগদানের পর থেকেই উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নত করেছেন। এলাকায় তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী,অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ,ও ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারসহ জিআর ওয়ারেন্ট সিআর ও একাধিক সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টের পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন।
চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের কাদের ভূইয়ার নেতৃত্বে থানা পুলিশের একাধিক আভিধানিক টিমের পুলিশ সদস্য অভিযান চালিয়ে গত ৩ মাসে বিভিন্ন মামলায় ৪৭৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের পেশাদার ডাকাত ২২জন, মলম পার্টি ৩, মাদক ব্যবসায়ী ১৪, নিয়মিত মামলায় গ্রেফতার-১৭১, সাজা প্রাপ্ত আসামী ২৮জন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ১৯১ জন।
এর মধ্যে সেনা কর্মকর্তা তানজিম সরোয়ার খুনের মামলায় ১২জন ডাকাত, ঢেমুশিয়া জাকের হোছন হত্যা মামলায় ২ জন, কৈয়ারবিলের কলেজ ছাত্র মোঃ আয়ুব হত্যা মামলায় ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পাশাপাশি খুটাখালী ইউনিয়নের টমটম গ্যারেজ ডাকাতির মামলায় ৩ জন গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি দেশীয় তৈরি এলজি বন্দুক ও ১৭ রাউন্ড গুলি। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি পিকআপ গাড়ি ও লুন্ডিত ৫২ টি টমটম গাড়ির ব্যাটারী।
তিনমাসের এই অভিযানে পুলিশের একাধিক টিম উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪ হাজার ৩শ ৯৫ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা- ৪৩ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম, ২৭ লিটার চোলাই মদ। ১জন গরু চোর সহ ১ টি গরু উদ্ধার, ৮ টি ছাগল উদ্ধার, ৮টি বিহিঙ্গি জাল উদ্ধার করেছে।
চকরিয়া থানায় সেবাপ্রার্থী জনগণের জন্য বিশেষ কিছু উদোগ নিয়েছেন ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া। তিনি সেবাপ্রার্থীদের রিসিপশন ডেস্কে বসার ব্যবস্থা নিয়েছেন। চালু করেছেন আপ্যায়নের ব্যবস্থা। থানার হেল্প ড্রেক্সে সাধারণ ডায়েরি বা অভিযোগ করতে আগের মতো আর টাকা লাগে না।
সাধারণ ডায়েরি লেখার জন্য সর্বদা রাখা হয়েছে পুলিশ সদস্য একজন রাইটারকে। যে কোন ঘটনায় নিজেই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া।
পাশাপাশি থানায় দালালদের দৌরাত্ম টেকাতে নিয়েছেন বিশেষ উদোগ। যাতে থানায় আগত সেবাপ্রত্যাশী এবং সাধারণ মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করে টাকা আদায় চেষ্টা করলে তাকে ধরিয়ে দিতে থানার দেয়ালেই ব্যানার টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন ওসি।
চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাবিব উদ্দিন মিন্টু বলেন, “একসময় থানায় দালালদের দৌরাত্ম ছিল চোখে পড়ার মতো। ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া যোগদানের পর থানা রয়েছে দালালমুক্ত।”
এধরণের নানাবিধ উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যেই ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। এছাড়া অসহায় নারীদের নানাবিধ অভিযোগ ও আইনি সহায়তা প্রদানে ওসির কর্মকাণ্ডে অনেক খুশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ভূইয়া বলেন, “পুলিশ হবে জনবান্ধব। সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের দূরত্ব ভয়ভীতি দূর করে সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর এবং সেই চেষ্টা করছি।
পাশাপাশি জনগণের জন্য একটি নিরাপদ চকরিয়া গড়তে দখলবাজ চাঁদাবাজ মাদক কারবারি চোর ডাকাত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানা পুলিশের ভুমিকা জিরো টলারেন্স নীতি অক্ষুণ্ণ থাকবে জানিয়েছেন ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া।
Posted ১:২২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta