এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :: বিয়ের ঠিকপর্দ্দ হলেও যৌতুকসহ বরপক্ষের নানাধরণের চাহিদা সঠিকসময়ে মেঠাতে না পারায় নববধুকে বাড়িতে তুলে নেয়নি স্বামী। অবশ্য চাহিদা মেঠাতে পারলে পরবর্তীতে কণেকে বরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এই সুযোগে শাশুড় বাড়িতে প্রায় একবছর আসা-যাওয়া করেছে স্বামী। রাত-যাপন করেছে নববধুর সঙ্গে।
এরই মধ্যে স্বামীর বাড়িতে যাবার আগেই একটি ফুটফুটে সন্তান এসেছে দুইজনের সংসারে। ঘটনাটি ঘটেছে চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন বদরখালীতে। নির্যাতিত নারী তানিয়া আক্তার (২০) বদরখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছনুয়াপাড়া গ্রামের আজগর আহমদের মেয়ে।
ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের কথাবার্তা এবং ঠিকপর্দ্দ চুড়ান্ত হলেও যৌতুকসহ বরপক্ষের নানাধরণের চাহিদা সঠিকসময়ে মেঠাতে না পারায় নববধুকে বাড়িতে তুলে নেয়নি স্বামী ও তাঁর পরিবার। অবশ্য চাহিদা মেঠাতে পারলে পরবর্তীতে কণেকে বরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এই সুযোগে শ^াশুড় বাড়িতে প্রায় একবছর আসা-যাওয়া করেছে স্বামী। এরই মধ্যে নববধু ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে যথারীতি সংসারও করেছে। সম্প্রতি তাদের সংসারে জন্ম নিয়েছে একটি ফুটফুটে সন্তান।
ভুক্তভোগী নারীর স্বজনরা জানায়, একবছর পর সংসারে সন্তান আসলে বেঁেক বসে স্বামী ও তাঁর পরিবার। নানাধরণের বাহনা তুলে তাঁরা কৌশলে বিয়েটি ভেঙে দিতে উদগ্রীব হয়। একপর্যায়ে ওই নারীকে শ^াশুড় বাড়িতে নিতেও অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নারী নিরুপায় হয়ে স্বামীর বাড়িতে চলে গেলে সেখানে তার উপর শাররীকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই নারী আবারও বাপের বাড়িতে চলে আসে।
সর্বশেষ শনিবার ১৭ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী ওই নারী এবং তাঁর স্বজনরা চকরিয়া থানায় এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযোগ করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানকে। তাৎক্ষনিক ওসি মিজানুর রহমান পুলিশের বহুদিনের প্রথাভেঙে কোন ধরণের টাকা ছাড়াই নির্যাতিত ওই নারীর লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রের্কড করেন।
মামলা রের্কড পরবর্তী ওসি মিজানুর রহমান তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন বদরখালী পুলিশ ফাঁিড়র আইসিকে মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের আটক করতে। তাঁর নির্দেশে পুলিশ ফাঁিড়র আইসি এসআর জাকির হোসেন অভিযান চালিয়ে ১২ ঘন্টার মধ্যে আটক করেন মামলার আসামি স্বামী এবং দেবরকে।
আটক দুইজন হলেন বদরখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছনুয়াপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান (২৫) ও তাঁর ভাই মোহাম্মদ এরশাদ (২১)।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চলতি দায়িত্ব মো.মিজানুর রহমান বলেন, বিয়ের ঠিকপর্দ্দ হলেও ভুক্তভোগী নারীকে বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায় স্বামী ও তাঁর পরিবার। উল্টো শ^াশুড় বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী এবং তাঁর মাকে মারধর করেছে স্বামী এবং তাঁর পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে মামলা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলার পর এজাহারনামীয় দুইজন আসামি স্বামী ও দেবরকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে গতকাল রবিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Posted ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta