হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(১৩ আগষ্ট) :: টেকনাফের হ্নীলায় একটি বিরোধীয় জমি নিয়ে দু‘পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে মহিলাসহ উভয়পক্ষের ৪জন আহত হয়েছে। এই ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেলেও সাধারণ মানুষ উভয়পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধের কারণে এই সংঘর্ষের সুত্রপাত বলে মনে করেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলার হ্নীলা লেদা টাওয়ার সংলগ্ন মৃত হাজী আব্দুস সালামের পুত্র দিল মোহাম্মদ গং দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির পাশ্ববর্তী পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ-দখল করে আসছে। ইতিমধ্যে মমতাজ মিয়া গং ভোগদখলীয় ঐ সম্পত্তির ওয়ারিশ হিসেবে অংশীদার দাবী করলে দু‘পক্ষের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়।
তা নিয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ ও আদালতে সালিশ ছিল। এরপরই দিল মোহাম্মদ এই ব্যাপারে চলতি বছরের গত ৮মার্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দিল মোহাম্মদ গং ভোগদখল রয়েছে।
১৩আগষ্ট সকাল ৯টারদিকে দিল মোহাম্মদ গং জমিতে ঘেরা-বেড়া দেওয়ার সময় পূর্ব লেদার আবুল হাছিমের পুত্র জসিম উদ্দিন প্রকাশ চিকইন্যা ঘটনাস্থলে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।
এতে জসিম উদ্দিন গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে সকাল পৌনে ১১টারদিকে মুজিব মিয়া,মমতাজ মিয়া,আমির হোছনের পুত্র মনুসহ ১০/১৫জনের একটি গ্রুপ দিল মোহাম্মদ গংয়ের উপর হামলা চালিয়ে দিল মোহাম্মদ (৫৩) ও তার স্ত্রী কুলসুম নাহার (৪৬)কে আহত ও রক্তাক্ত করে করে বলে দাবী করেন।
এসময় হামলাকারী পক্ষের মুজিব মিয়াও রক্তাক্ত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। আহতদের মধ্যে আশংকাজনক উভয়পক্ষের জসিম ও কুলসুম নাহারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় মেম্বার নুরুল হুদা বলেন,জমি বিরোধ নিয়ে দু‘পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা জনসাধারণ থেকে জেনেছেন বলে দাবী করেন। জমি বিরোধ নিয়ে দু‘পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এই ব্যাপারে পৃথকভাবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এই ব্যাপারে দিল মোহাম্মদ বলেন,আমরা বাউন্ডারী নির্মাণের কাজ করার সময় মমতাজ,জসিম ও মুজিব মিয়া গং হামলা চালায়। আমরাও প্রাণে রক্ষার্থে তাদের প্রতিহত করি।
মমতাজ মিয়া বলেন,তাদের সাথে আমাদের জমি বিরোধ ছিল কিন্তু ঘটনার দিন আমার ছোট ভাই জসিম শ্বাশুড় বাড়ি থেকে ফেরার পথে দিল মোহাম্মদ অর্তকিতভাবে কূপিয়ে রক্তাক্ত করে। বর্তমানে তাদের কক্সবাজারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে সাধারণ মানুষ বিরোধীয় জমি নিয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়েছে। আগামীতে এই জাতীয় নৃশংস ঘটনারোধে স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানদের সর্তক থাকার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উল্লেখ্য,বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বসত-ভিটা,চাষযোগ্য ও জবর-দখলীয় পাহাড়ী টিলা জমি নিয়ে মামলা-মোর্কদ্দমা এবং বিরোধ চলে আসছিল।
আদালতের দীর্ঘসুত্রতা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত সিদ্বান্ত নেওয়ার অপারগতার সুযোগে দখল-জবর দখলের ঘটনায় সামাজিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন।
Posted ৮:২৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta