হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(১৭ আগস্ট) :: ইয়াবাসহ যাবতীয় মাদক চোরাচালান ও সেবনরোধে সরকারের কঠোর অবস্থানের পর আইন শৃংখলা রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী সাড়াঁশী অভিযান শুরু করেন। কিন্তু নাফনদী উপকূলের মৎস্যঘেঁর ও আদম পারাপারের চোরাই ঘাট সমুহ সচল থাকায় ইয়াবা ও বিয়ার জাতীয় মাদকের চালান অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,চলতি মাসের শুরুর দিকে ককক্সবাজার জেলা পুলিশের এএসপি আফরোজুল হক টুটুল,এএসপি (উখিয়া সার্কেল) চাইলাউ মারমা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিমের সাঁড়াশী অভিযানে ইয়াবাসহ ১১জনকে আটক করে।
এরপর পুরো টেকনাফ সীমান্তের ইয়াবা গডফাদার, পাচারকারী ও সহায়তাকারীদের মধ্যে অজানা আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে আতœরক্ষার্থে এলাকা ত্যাগ করে আবার অনেকে বিদেশ পাড়ি দেয়।
অনেকে প্রাণে রক্ষার্থে স্বশস্ত্র পাহারাদার নিয়োগ দিয়ে পাহাড়ী জনপদে অবস্থান নেয়। অনেকেই এই অভিযানে সফলতা বয়ে আসবে আশায় স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে থাকে। হঠাৎ করে হোয়াইক্যং চেকপোস্টে জনৈক পুলিশ কনস্টেবল দম্পতি আটক হওয়ার পর মাদক বিরোধী সাড়াঁশী অভিযান আর হয়নি।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী প্রশাসনের কতিপয় নিকটাতœীয় মাদকের চালান বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ঠেলে দিতে ওপারের মৎস্যঘেঁরে নিয়োজিত রোহিঙ্গা শ্রমিকদের ব্যবহার করছে।
টাকার লোভে তারা বাংলাদেশ সীমান্তের শাহপরীরদ্বীপ হতে উলুবনিয়া পর্যন্ত নাফনদীর উপকূলে অবস্থানরত মৎস্যঘেঁর সমুহের শ্রমিক এবং বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের নিকট হস্তান্তর করছে। তারা পরবর্তীতে সময়-সুযোগে বিশেষ পাহারায় মালিকদের নিকট পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া,সাবরাং নয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া,টেকনাফ জালিয়াপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া,নাইট্যংপাড়া,কেরুনতলী,হ্নীলা দমদমিয়া, জাদিমোরা, নয়াপাড়া, মোচনী, লেদা, আলখালী, রঙ্গিখালী, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া,ফুলের ডেইল,গুদামপাড়া, সুলিশপাড়া, হোয়াব্রাং, মৌলভীবাজার, খারাংখালী, নয়াবাজার, নয়াপাড়া,কাঞ্জরপাড়া,উনছিপ্রাং,লম্বাবিল,কোনার পাড়া, বালুখালীপাড়া, খারাইগ্যাঘোনা, উলুবনিয়া এবং বরইতলীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবার চালান প্রবেশ ও পাচার বাড়ছে।
এসব চালান বহন করতে গিয়েই সম্প্রতি আশংকাজনকহারে প্রশাসনিক ব্যক্তি,রাজনৈতিক নেতা,মিডিয়া কর্মীসহ সাধারণ বহনকারীরা আটক হওয়ার ঘটনায় চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছেন।
এইজন্য অনেকে সীমান্ত পরিস্থিতির সমালোচনা করলেও সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত মৎস্যঘেঁরের মালিক-কর্মচারী ও পাশ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত যুবসমাজ ও কিশোরদের ইয়াবাসহ মাদকের চালান খালাসে ব্যবহার করা হচ্ছে। খালাসের পর পরই ইয়াবার এসব চালান পাহাড়ী আস্তানায় মওজুদ করে পরে সুযোগে বেচা-বিক্রি করেই চলছে।
এসব কারণেও ইয়াবার চালান অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। তাই শাহপরীরদ্বীপ হতে উলুবনিয়া সীমান্ত পর্যন্ত নাফনদীর বেড়িবাঁধের বাহিরে পাউবো হতে লীজ নিয়ে সৃষ্ট মৎস্যঘেঁর সমুহ বাতিল করে সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের মত উপকূলীয় বন বিভাগের আওতায় এনে বনায়ন সৃজনের দাবী উঠেছে।
Posted ১২:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta