আব্দুল হামিদ,নাইক্ষ্যংছড়ি(১০ আগষ্ট) :: নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে রামুর কচ্ছপিয়া হয়ে মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া দোছড়ি ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য নির্মিত ১৮ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কের-নারিকেল বাগান অংশে-৩০০ ফুটের মতো পিচঢালা সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ইতোপূর্র্বে ওই অংশে ভাঙন দেখা দিলেও দীর্ঘদিন ধরে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা-এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়ন মায়ানমার লাগোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ও উৎপাদন খাতের এলাকা। এ সড়ক হয়ে সীমান্তরক্ষায় ৩১ বিজিবির আওতাধিন লেম্বুছড়ি সীমান্ত ফাঁড়ি ও সাত-আটটি বর্ডার অবজারভেশন পোষ্ট (বিওপি)তে যেতে হয়।
এছাড়াও লামা বনবিভাগের বিট কার্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে ওই সীমান্ত সড়কটি হয়ে উঠেছে অত্যন্ত ব্যস্ততম ও জনগুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে থাকে।
সরেজমিনে ভাঙ্গনস্থলে গিয়ে দেখা যায়- দোছড়ি নদীর ভাঙনের তীব্রতায় পাকা সড়ক ভেঙে বিলীন হচ্ছে মানুষের বসতবাড়ি। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় মহাভোগান্তি পোহাচ্ছে বিজিবির সদস্য, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার লোকজন। অন্য কোন বিকল্প সড়ক না থাকায় গাছ আর বাঁশ ব্যবহারে তৈরী করা সাঁকো দিয়ে-কাঁধে বহন করে মালামাল পার করছে মানুষ। সড়ক দুই ভাগ হয়ে এপার-ওপারে তৈরী হয়েছে অস্থায়ী স্টেশন।
অন্যদিকে নদীর পানি বেড়ে গেলেই কচ্ছপিয়ার নারিকেল বাগান, শুকমনিয়া, ছোট জামছড়ি, বালুবাসাসহ একাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কচ্ছপিয়া নাগরিক সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম টিপু বলেন, ‘যখন ভাঙন দেখা দিয়েছিল, তখন রোধকল্পে ব্যবস্থা নিলে হয়তো এভাবে বিলীন হতোনা-ব্যস্ততম সড়কটি। বর্তমানে বিশাল জনগোষ্ঠী অসহনীয় দুর্ভোগে। অতিদ্রুত ভাঙন মেরামত এবং তা রক্ষায় ব্যবস্থা না নিলে, ভাঙন অংশের একশ গজ পশ্চিমে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন দোছড়ি গার্ড়ার সেতুটি ঝুকির মধ্যে পড়বে এবং পুননির্মাণও ব্যায়বহুল হবে। এই সড়কটির সাথে যেহেতু দুই উপজেলার সম্পৃক্ততা-তাই সর্বোচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদ্বয়ের যৌথ চেষ্টা দরকার।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সিকদার সোহেল বলেন, ‘ভাঙন অংশে সিসি ব্লক স্থাপন এবং জিও ব্যাগ ব্যাবহার করে সড়কটি রক্ষা করা সম্ভব। এ ব্যাপারে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ সহসা এ উদ্যোগ না নিলে নারিকেল বাগান ষ্টেশনের অর্ধশতাধিক দোকানপাট নদীগর্ভে বিলীন হবে। পাশাপাশি বছরের পর বছর বন্ধ থাকবে যানবাহন চলাচল।
নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্নেল মো.আনোয়ারুল আযীম বলেন, ‘নাইক্ষ্যংছড়ি-কচ্ছপিয়া-দোছড়ি সড়কের নারিকেল বাগান অংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায়-লেম্বুছড়ি সীমান্ত ফাঁড়ি ও বিওপিগুলোতে মালামাল আনা নেওয়া চরমভাবে ব্যাঘাত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তাগাদা দেওয়া হলেও এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘ভাঙন অংশটি রামুতে পড়েছে। এই জন্য আমরা বরাদ্দ দিতে পারছি না, কিন্তু কষ্টভোগ করতে হচ্ছে।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বলেন, ‘জনগণের দুর্ভোগ লাগবে-তিনি কয়েকবার ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছেন, সড়কটি সচল করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে (এলজিইডি) তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও প্রকল্প তৈরী করা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে এলজিইডির রামু উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলি জাকির হাসান বলেন, নারিকেল বাগান এলাকায় সড়কের ভাঙন সংস্কারে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।
Posted ৪:৫৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta