মাঈনুদ্দিন খালেদ,নাইক্ষ্যংছড়ি(৩১ মে) :: ঘূর্ণিঝড় মোরা’র হানায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । গত ৩০ মে মঙ্গলবার ভোর সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ঘূর্ণিঝড়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর বান্দরবান জেলা ও ইউনিয়ন এবং রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি গর্জনিয়া বাজারের সাথে দেশের সকল যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবর্হা প্রায় ঘন্টা বন্ধ রয়েছে।
মোরা’র আঘাতে এই দু’এলাকার সকল প্রকার ফলজ বাগান,গাছপালা,কাচাঁঘর-বাড়ি ও কৃষি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এই দু’ এলাকায় প্রায় ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক। বিশেষ করে এ দু এলাকার আংশিক খোলা থাকা শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অঘোষিত বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত এ ২ দিন এ সব প্রতিষ্টান বন্ধ রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান,নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫ ইউনিয়নেই কাচাঁঘরÑবাড়ি,সকল প্রকার পাহাড়ি বাগান,কৃষি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। সড়কের উপর অপরিকল্পিতভাবে রোপিত গাছ পড়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের সাথে জেলা শহর ও সহ অন্যান্য স্থানের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বৈদ্যুতিক তার এবং খুটিতে গাছ ও গাছের শাখা পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে কাচা ঘরবাড়ির ৭০ শতাংশ ঘরবাড়ির টিনের চালা উড়ে গিয়ে লোকজন খোলা আকাশে আছে। তিনি আরো বলেন, এ সব বিষয় মাথায় রেখে তিনি লোকজনের অসুবিধা না হয় মতো জরুরীভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায়।
এদিকে কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো: ইসমাঈল নোমান বলেন,রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া ইউনিয়ন এলাকায় অনুরূপ ক্ষতি হয়েছে সর্বত্র।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ফাক্রিকাটার তুলাতলী,দক্ষিন মোরার পাড়া,নাপিতের চর,মোরারপাড়া,,শুকমুনিয়া,পূর্বহাজিরপাড়া, কচ্ছপিয়া পাহাড়, মৌলভৗ কাটা ও বড়জামছড়ি সহ পাহাড়ি এলাকা গুলোতে অনেক ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। প্রায় আড়াই শ’ বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে গেছে।
তিনি আরো জানান, মঙ্গলবারের এ ঘূর্ণিঝড়ে এলাকার কে.জি,প্রাথমিক,মাধ্যমিক,মাদ্রাসা,নূরানী ও হেফজখানা ও এতিম খানা সহ প্রায় ৫০ টির অধিক প্রতিষ্ঠান অঘোষিত বন্ধ হয়ে গেছে ।
সচেতন মহলের মতে,এ অবস্থায় পবিত্র রমজানে উভয় এলাকার ফ্রিজে সংরক্ষিত খাদ্য সামগ্রী নষ্ঠ হয়ে যাওয়ার আশংকা হতাশ হয়ে পড়েছে অনেক গৃহিণী ।
উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে সরজমিনে ঘুরে আরো দেখা যায়, ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কাগজী খোলা, ক্যথোয়াই পাড়া, দোছড়ি মুখ, ২নং ওয়ার্ডের রাঙ্গাঝিরি, ক্যাংগার বিল, ৩নং ওয়ার্ড আলীক্ষ্যং, বড়ই চর, ধুইল্যা ঝিরি, তুতুবখালী, ৪নং ওয়ার্ড করলিয়ামুরা, উত্তর করলিয়ামুরা, কুমপাড়া, লম্বাবিল, ৫নং ওয়ার্ড হলুদিয়া শিয়া, গুদাম পাড়া, ৬নং ওয়ার্ড তিতার পাড়া, উপর চাক পাড়া, মধ্যম চাক পাড়া, থুইহ্লাঅং পাড়া, ৭নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাইশারী, পশ্চিম বাইশারী, পেঠান আলী পাড়া, মধ্যম বাইশারী, উত্তর বাইশারী, ৮নং ওয়ার্ড দক্ষিণ নারিচবুনিয়া, পুর্নবাসন পাড়া, ধৈয়ার বাপের পাড়া, নতুন চাক পাড়া, হরিণখাইয়া, থিমছড়ি শিয়া পাড়া, ঘোনা পাড়া, ৯নং ওয়ার্ড তুফান আলী পাড়া, পূর্ব বাইশারী, মেকার পাড়া, করিমার ঝিরি, চাক হেডম্যান পাড়া সহ আরো অনেক গ্রামের বাড়ীঘর, গোয়াল ঘর, বনজ-ফলজ বাগান, মসজিদ, মন্দির, মত্তবের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ অপূরণীয় অপরিসীম।
এদিকে বুধবার উপজেলা ৫ ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শণ করেছেন উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল।
Posted ৩:২৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ৩১ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta