কক্সবাংলা ডটকম(২৪ মে) :: সিরিজের হিসাব-নিকাশে ম্যাচটির তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। কারণ টানা তিনটা ম্যাচ জিতে নিয়ে সিরিজটা নিজেদের করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে আজ কিউইদের ৫ উইকেটে হারিয়ে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের রেটিং পয়েন্ট বাড়িয়ে নিল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে র্যাংকিংয়ের ছয়ে উঠে আসল টাইগাররা। সেই সঙ্গে আছে বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জয়।তবে সেটা করতে গিয়ে ম্যাচে ভালোভাবেই টিকে গেছে বাংলাদেশের স্বপ্ন।
‘মিনি বিশ্বকাপ’ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সামনে। নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজকে ‘মোক্ষম’ মঞ্চ হিসেবে দেখছিল বাংলাদেশ। সেখানে প্রস্তুতিটা দারুণ হলো মাশরাফি মুর্তজাদের। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেল বাংলাদেশ। ৪৮.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা করে ২৭১ রান।
অথচ বাংলাদেশের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় স্কোরের আভাস দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের তৃতীয় বলে টম ল্যাথাম জীবন পেয়ে করেছেন হাফসেঞ্চুরি। তার ওই ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া নাসির হোসেনই নেন উইকেটটি। দুইবার জীবন পেয়ে ইনিংস সেরা ৮৪ রান করে ল্যাথাম বোল্ড হন। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা নাসির অবশ্য আগের ওভারেই ব্রেকথ্রু আনেন। আরেক হাফসেঞ্চুরিয়ান নাইল ব্রুমকে (৬৩) তিনি মাঠছাড়া করেন মাশরাফির ক্যাচ বানিয়ে।
নাসিরের এ ২ উইকেট ম্যাচের ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলা যেতে পারে। যদিও রস টেলর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন। নিউজিল্যান্ডকে ২৭০ রানে বেধে দিতে পরে অবদান রাখেন সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি। কোরি অ্যান্ডারসনকে (২৪) মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান সাকিব। এর পর মাত্র ২ রানের ব্যবধানে টানা ৩ ওভারে ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। মাশরাফি তার দুই ওভারে ২ উইকেট নেন জিমি নিশাম ও কলিন মুনরোকে ফিরিয়ে। মাঝে সাকিব বোল্ড করেন মিচেল স্যান্টনারকে।
দুই ওভার বাকি থাকতে রুবেল হোসেনের বলে নিউজিল্যান্ডের অষ্টম উইকেটের পতন হয়। ম্যাট হেনরিকে বোল্ড করেন তিনি। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে জীবন পাওয়া টেলর অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে।
নাসিরের সমান ২টি করে উইকেট নেন মাশরাফি ও সাকিব।
৮ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে ২৭০ রানে আটকে দেওয়ার পর শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। যদিও প্রথম বলেই ছক্কা মেরে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন তামিম। কিন্তু তৃতীয় বলে সৌম্যকে আউট করেন জিতান প্যাটেল। নিজের প্রথম বলে কোরি অ্যান্ডারসনকে ক্যাচ দেন তিনি।
এর পর তামিমকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন সাব্বির। দুজনে বেশ দেখেশুনে ব্যাটিং করছিলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের দিন ৪৭ রানে আউট হওয়া তামিম ক্যারিয়ারের ৩৬তম হাফসেঞ্চুরি পান ৫৩ বল খেলে। সাব্বির তাকে অনুসরণ করে ৬৪ বলে পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি হাঁকান।
কিন্তু তাদের ১৩৬ রানের জুটি ভাঙে তামিম ৬৫ রানে স্যান্টনারের শিকার হলে। এক ওভার পেরোতেই রান আউট হন সাব্বির, তিনিও করেন ৬৫ রান। পরের বলে মোসাদ্দেককে (১০) এলবিডব্লিউ করে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান প্যাটেল।
মাত্র ১৭ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর মুশফিক ও সাকিবের ব্যাটে স্বস্তিতে ফেরে বাংলাদেশ। তাদের জুটি যদিও ভেঙে যায় মাত্র ৩৯ রানে। সাকিব ১৯ রানে আউট হন। আর পথ হারায়নি বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের ব্যাটে এগিয়ে গেছে তারা।
দুইজনের অর্ধশতাধিক রানের জুটিতে ১০ বল বাকি থাকতে জয় পায় বাংলাদেশ। মুশফিক ৪৫ ও মাহমুদউল্লাহ ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। মুশফিকের ইনিংস ৪৫ বলে সাজানো, ৩টি চার ও ১ ছয় তার। তবে তার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৬ বলে ৬ চার ও ১ ছয় মেরেছেন তিনি। তাদের জুটিটি ছিল ৭২ রানের।
সিরিজে এটি বাংলাদেশের টানা জয়। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও তারা জিতেছিল ৮ উকেটে। কিন্তু পরের ম্যাচে আইরিশদের হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজের চ্যাম্পিয়ন হয় নিউজিল্যান্ড। আর তাদের হারিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ১ জুন তারা মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের।
Posted ১১:৩৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৪ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta