বিশেষ প্রতিবেদক(৪ জুন) :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতালা ষ্টেশনে ব্যবসায়ী ও জনগণকে লক্ষ্য করে ২য় দফার মত গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে অবৈধ অস্ত্রধারীরা। দুইজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল করিম ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম খান একদল পুলিশ ফোর্স নিয়ে আফজালিয়া পাড়াস্থ সন্ত্রাসীদের আস্তানার দিকে রাওনা হলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি ছুড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীরা। ওই সময় তারা আর সামনের দিকে না গিয়ে ফুলতালা ষ্টেশনে চলে আসে। পরে স্থানীয় ফুলতালার ব্যবসায়ী ও জনগনের সাথে বৈঠক করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উত্তেজনাপূর্ন ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
শনিবারের ঘটনায় একজন আটক ছাড়া আর কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। ১৬ জন গুলিবিদ্ধের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলাও হয়নি বলে ওসি তদন্ত মনজুর কাদের মজুমদার নিশ্চিত করেন।
শনিবারের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী আরমান, কায়েশ, নজরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন জানায়, শনিবারের ওই ঘটনায় অবৈধ অস্ত্রধারীদের বেপরোয়া গুলিবর্ষণে শিশুসহ ১৪জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি করেন এক প্রভাবশালীর ইন্ধনে আফজালিয়া পাড়ার একমাত্র আটককৃত নেজাম উদ্দিন, জয়নাল আবদীন, আলী আবকর, ছৈয়দ, সোনাইয়্যা, মাখাইন, ইউনুস ও নেজাম উদ্দিনসহ ৩০/৩৫ জনের সংঘবদ্ধ একদল অবৈধ অস্ত্রধারী। ভাংচুর করে দোকানপাড় ও বসতবাড়ি।
প্রতিজনের হাতে অবৈধ অস্ত্র থাকায় পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে ওই সময়। এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মোখিন হন সাধারণ জনগন ও ব্যবসায়ীরা। মহিলারা নিরাপত্তার আশ্রয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় অন্যত্র। ওই ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক ব্যবসা নেননিও বলেও অভিযোগ করেন তারা। এখন পর্যন্ত মামলা রেকর্ড না হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা।
রবিবারের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা খালেদ, আনোয়ারুল আজিম বাবুল, আকতারসহ আরো কয়েকজন জানান, স্বাভাবিকভাবে ফুলতানা ষ্টেশনের ব্যবসায়ীরা দোকানপাড় খুলতে শুরু করে। সাধারণ জনগনও সদায় করতে বাজারে আসেন। ওই সময় আফজালিয়া পাড়ার অবৈধ অস্ত্রধারীরা আবারো সংঘবদ্ধ হয়ে গুলিবর্ষন শুরু করে। দোকানপাড় বন্ধ করে পেলেন ব্যবসায়ীরা।
সাধারণ জনগন পালাতে গিয়ে দুইজন গুলিবিদ্ধ হন বলে তারা জানান। পরে ইউএনও ও ওসি ঘটনাস্থল আফজালিয়া পাড়ার দিকে রাওনা দিলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলিবর্ষন করে তারা। এ ঘটনায় চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে পুরো মগনামায়। সেই সময়ও পুলিশের ভুমিকা নিয়ে আহতের পরিবার ও ব্যবসায়ীরা আক্ষেপ করেন।
ব্যবসায়ী আসাব উদ্দিন,আব্দু রশিদ, আব্দু মজিদ ও জানে আলম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ফুলতানা ষ্টেশনে ব্যবসা করে আসছি। শান্তিতে ছিলাম আমরা। কিন্তু বর্তমানে ওয়াসিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আফজালিয়া পাড়ার সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শুরু করেন চাঁদাবাজি ও দখলবাজি। সর্বশেষ আমাদের দোকান থেকে তারা চাঁদাদাবী করলে আমরা না দেওয়ায় আমাদের উপর গুলিবর্ষণ করে আহত করে। এ ঘটনায় আমরা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ওসি জহিরুল ইসলাম খান বলেন, এখনো পর্যন্ত আহতের পক্ষ থেকে লিখিত এজাহার দায়ের না করায় মামলা হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। আবারো যাতে গুলিবর্ষণের ঘটনা না ঘটে পুলিশ সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
ইউএনও মাহাবুবুল করিম তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের কথা অস্বীকার করেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা অবশ্যই হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বলা হয়েছে।
Posted ১০:৩২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৪ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta