নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(১৪ জানুয়ারী) :: পেকুয়ায় দারাঘোনা দখলে নিতে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ১শত ৩২ একর আয়তনের ওই চিংড়ি ও লবণ চাষের ঘোনা দখলে নিতে গত কয়েকদিন ধরে একটি স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীগ্রুপ এলাকায় জড়ো হয়েছে।
উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ার দারাঘোনা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আধিপত্যকে ঘিরে টান টান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে লবণ চাষীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে করে করিয়ারদিয়ার আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শংকা বিরাজ করছে।
অপরদিকে দারাঘোনার ইজারাদার সিরাজুল মোস্তফা সম্ভাব্য জবর দখল হওয়ার শংকায় পুলিশ সুপার কক্সবাজার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। উপজেলা আ’লীগের অন্যতম নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য করিয়ারদিয়ার মৃত জেবর মুল্লুকের ছেলে সিরাজুল মোস্তফা এ অভিযোগ উত্তাপন করেছে।
অভিযোগে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার মাহামুদুল্লাহসহ ৮ জনের নাম ও অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জনের নাম উল্লেখ করে জানিয়েছেন অভিযুক্তরা দারাঘোনা দখলে নিতে সম্প্রতি অস্ত্র স্বস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। তারা সবাই ভিন্ন উপজেলা ও ভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা।
উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া দারাঘোনা ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি আগাম নেয়। ভূমির মালিক তাকে চিংড়ি ও লবণ উৎপাদনের জন্য এ জমি লাগিয়ত করেন। বর্তমান লবণ উৎপাদন সময়ে দারাঘোনায় চাষিরা মাঠ প্রস্তুতি সমাপ্ত করে বিপুল জমিতে লবণ উৎপাদন চলছে।
মহেশখালীর মাতারবাড়ির রাজঘাট এলাকার হাজী মকবুল হোসেনের ছেলে মোসলেহ উদ্দিন, মৃত হাজী মতিউর রহমানের ছেলে নুরুল ইসলাম, ইউসুফ নবীর ছেলে জসিম উদ্দিন, জাফর আহমদের ছেলে শাহজাহান, হাজী নজু মিয়ার ছেলে জানে আলম প্রকাশ জনু, মৃত আলী হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ বারেক ও মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে আবু জাফরসহ ১৫/১৬ জনের দুবৃর্ত্তরা দারাঘোনায় হানা দেয়।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওই চক্র অন্তত কয়েক দফা ঘোনা দখলে চেষ্টা চালায়। এ সময় লবণ চাষীদের সাথে একাধিকবার ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। তারা মাতারবাড়ি চ্যানেল পাড়ি দিয়ে নৌকা যোগে করিয়ারদিয়ায় আসে।
তারা মহেশখালী, মাতারবাড়ি ও বদরখালীসহ বেশ কিছু এলাকা ও উপকুলের দুর্ধর্ষ ত্রাসদের জড়ো করে জমি দখলে নিতে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছে। মাতারবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান ওই চক্রের সাথে হাত মিলিয়েছে।
চেয়ারম্যানের অনুগত এ সব লোকজন ভিন্ন উপজেলায় এসে করিয়ারদিয়ায় সাবেক ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফার ইজারা নেয়া দারাঘোনা দখলে নিতে শক্তির মহড়া দিচ্ছে বলে এ আ’লীগ নেতা তার লিখিত অভিযোগে এ সব উল্লেখ করেছেন।
সুত্র জানায়, করিয়ারদিয়ার মৌজার বিএস ১২৪, ১২৫, ৩১৫ নম্বর খতিয়ানের ১৩২.৩৯ একর দারাঘোনা সিরাজ মেম্বার ইজারা নেয়। তিনি তিন বছর ওই ঘোনার জমি ভোগ করবেন। সম্প্রতি দারাঘোনার জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানায় বৈঠক হয়েছে। নিস্পত্তির জন্য উভয়পক্ষ সালিশি প্রতিনিধিদের বরাবর একটি অলিখিত নন জুড়িশিয়াল ষ্ট্যাম্পে ক্ষমতা অপর্ন করে। স্ট্যাম্পটি পুলিশ হেফাজতে ছিল।
তবে মাতারবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার মাহামুদুল্লাহ ফায়সালার কথা বলে স্ট্যাম্পটি পুলিশ থেকে নিয়ে নেয়। এমনকি বর্তমানে ওই স্ট্যাম্পটি সিরাজ মেম্বারের প্রতিপক্ষদের অনুকুলে হস্তান্তর করে চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে বদর উদ্দিন, আলা উদ্দিন, শাহ আকবর, লেদু ও নুুরুল আবছারসহ মাতারবাড়ির রাজঘাট এলাকার লবণ চাষীরা জানায়, চেয়ারম্যান দারাঘোনা নিয়ে শঠামি করছে। তিনি একতরফা কাজ করছেন। দুর্লোভের বশীভূত হয়েছেন।
সন্ত্রাসীরা আমাদেরকে জমি থেকে তাড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছে। তারা সংঘবদ্ধ ডাকু প্রকৃতির লোক। অনেকের বিরুদ্ধে বহু মামলা মোকাদ্দমা রয়েছে। তারা চুরি চামারি ও দখল বেদখলে লিপ্ত। যে ভাবে হাকাবকা করছে মনে হয় তারা বড় ধরনের খুন খারাবি সংঘটিত করতে পারে।
সিরাজুল মোস্তফা সাবেক এমইউপি জানায়, তারা সংঘবদ্ধ। দারাঘোনায় এসে মাঠে তান্ডব ও লুটতরাজ করছে। গতিবিধি অত্যন্ত সন্দেহজনক। যে কোন মুহুর্তে ঘোনাদখল সহ খুন খারাবি ঘটাতে পারে। এর আগেও পেকুয়া থানায় এদের বিরুদ্ধে জিডি করেছি। যার নং ১৭/১৮।
Posted ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta