
কক্সবাংলা ডটকম(১৯ অাগস্ট) :: ইচ্ছা না থাকলেও অনেক সময় আমাদের পড়তে হয় বৃষ্টি বিড়ম্বনায়। আর বৃষ্টি সৃষ্ট কাদায় অনেক সময় কাগড়ে লাগে দাগ। ফলে চিন্তা যায় বেড়ে। বাইরে থেকে কাপড়ে দাগ নিয়ে বাসায় ফিরেই প্রথম কাজ হয়ে ওঠে সেই দাগ দূর করা। তা না হলে কাপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তো আছেই। তাই বৃষ্টির দিনে পরা পোশাক নিয়ে কিছুটা সতর্ক থাকুন।
কাপড়ের যত্ন
১) বৃষ্টিতে পোশাকে কাদা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করে প্রথমে কাদা লাগা স্থানগুলো ধুয়ে নিন। এরপর পুরো কাপড় আলাদাভাবে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে পুরো কাপড়ে দাগ আর লাগবেনা।
২) যে কোনো রঙের কাপড় ভিজে গেলে ভালোভাবে ধুয়ে নিন যেন ওই কাপড়ে দাগ না পরে।
৩) বৃষ্টির দিনে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় কাপড় শুকাতে অনেক বেশি সময় লাগে। তারপরও ভালোভাবে কাপড় শুকানোর চেষ্টা করুন। কাপড় ভালো করে শুকানোর পর ইস্ত্রি করুন।
৪) আলমারিতে কাপড় রাখার সময় কাপড়ের ফাঁকে ফাঁকে ন্যাপথলিন ব্যবহার করুন। এটা ছত্রাক থেকে বাঁচিয়ে কাপড়কে সুরক্ষিত রাখবে।
৫) বর্ষায় ঘরের ভেতর কাপড় শুকানো থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার চামড়ায় বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এগুলো শিশুদের জন্য বেশি ক্ষতিকর।
৬) বারান্দায় যেখানে বৃষ্টির পানির ছাঁট আসে না সেদিকে কাপড় রাখুন। রোদ উঠলে রোদে দিন।
৭) কাপড় ২-৩ দিন ভেজা থাকলে ব্যাকটেরিয়ার কারণে বাজে গন্ধ বের হয়। তাই কাপড়ে গন্ধ হলে ডিটারজেন্ট এবং এন্টিসেপ্টিক লিকুইট দিয়ে আবার কাপড়টা ধুয়ে নিন।
৮) রোদ উঠলে ভেজা কাপড় শুকাতে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের আলমারি, ওয়্যারড্রপ, সব খুলে দিন। একইসঙ্গে দরজা জানালা সব খুলে দিন। তাহলে গুমোটভাব দূর হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আলমারির কাপড় বিছানায় মেলে দিয়ে ফ্যান ছেড়ে দিন।
৯) আলমারির ভেতরে খবরের কাগজ রাখুন আর্দ্রতা টেনে নিবে। চাইলে কয়েকটা চকও রাখতে পারেন।
১০) কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে চন্দন কাঠ রাখুন তাতে কাপড় থেকে সুগন্ধ ছড়াবে। গায়ে মাখার সাবান, পারফিউমের বোতল কাপড়ের মাঝে রাখার চেষ্টা করুন। এতেও কাপড় সুগন্ধযুক্ত থাকবে।
১১) বাচ্চাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। কোনোভাবেই যেন ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে কাপড় গায়ে না দেয়। বাহির থেকে কাপড়ে কাদা লাগলে প্রথমেই বাসায় এসে কাপড়টা ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। কারণ, দেরি করলে দাগ উঠানো কষ্টকর হয়ে যাবে।

শাড়ির যত্নে
বাঙালি নারীর কাছে শাড়ি খুব শখের একটি পোশাক। শখের এই পোশাকটি যেমন তেমন করে ফেলে রাখলে চলবে না। সঠিক যত্নে পুরোনো ও দামি শাড়িগুলো অনেকদিন পর্যন্ত ভালো রাখা সম্ভব। তাছাড়া বর্ষার এই মৌসুমে আদ্র আবহাওয়া শখের শাড়িও নষ্ট করে দিতে পারে। ঠিক এই সময়টাতে দরকার শাড়ির উপযুক্ত যত্ন।
বর্ষায় নিন শাড়ির সঠিক যত্ন-
১) কাপড় রাখার স্থানটি শুষ্ক হতে হবে, আদ্র হলে ছত্রাক সংক্রমণ ঘটবে সহজেই।
২) ব্যবহৃত শাড়ি ৩ মাস অন্তর ও অব্যবহৃত শাড়ি ৬ মাস অন্তর বের করে রোদে দিতে হবে।
৩) বিশেষ করে বর্ষার এই মৌসুমে আকাশে কড়া রোদের খেলা চলে তখন অন্তত একঘণ্টা করে শখের শাড়ি শুকিয়ে নিন, আদ্র ভাব চলে যাবে।
৪) শাড়ির ভাঁজে ন্যাপথলিন, কালোজিরা বা নিমপাতা ইত্যাদি দিয়ে রাখতে পারেন, এতে পোকায় কাটবে না।
৫) আলমারি বা ট্রাংক যেখানেই শাড়ি রাখুন না কেন, সেখানে যেন তেলাপোকা বা ইঁদুর ঢুঁকতে না পারে।
৬) কাঠের আলমারিতে শাড়ি রাখলে তা মাঝে খেয়াল করতে হবে আলমারি ঘুণে ধরেছে কি-না, নইলে শাড়ি কেটে দিতে পারে।
৭) স্টিলের আলমারিতে মরিচা লেগে শাড়ি নষ্ট হতে পারে। তাই আলমারি খুলে আদ্র ভাব থাকলে শুকনা কাপড়ে মুছে দিতে পারেন।
৮) পরিহিত শাড়ি বাইরে থেকে এসে কিছুক্ষণ বাতাসে রেখে ঘাম শুকিয়ে নিন, এতে দাগ পড়বে না।
৯) আলমারিতে শাড়ি রাখার আগে অবশ্যই ঝেড়ে মুছে নিবেন।
১০) মসলিন বা কাতান শাড়ির ক্ষেত্রে অবশ্যই সাদা কাগজ ব্যবহার করতে হবে। এসব শাড়িতে ড্রাই ওয়াস না করে পলিশ বা কাঁটা ওয়াস করানোই ভালো।
১১) সুতি শাড়ি ইস্ত্রি করে কিছুক্ষণ বাতাসে রেখে তুলে রাখুন, অনেকদিনের জন্য রাখতে হলে মাঢ় না দেয়াই ভালো।
১২) জর্জেট ও শিফন শাড়ি ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে শাড়ি রোল করে রাখুন এবং অবশ্যই এই শাড়িগুলোতে নিম পাতা বা কালো জিরা দিয়ে রাখতে হবে।

Posted ৯:১১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta