শনিবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ালো চীন

বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
17 ভিউ
বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ালো চীন

কক্সবাংলা ডটকম(২১ জানুয়ারি) :: চীনের কাছ থেকে অগ্রাধিকারমূলক ক্রেতা-ঋণ এবং সরকারি রেয়াত-ঋণ নামে দুই ধরনের ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ।

ওই ঋণের সুদের হার ২-৩ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ বছর। বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ পরিশোধের এই সময় বৃদ্ধি এবং ঋণের সুদ হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে চীন।

স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ঢাকার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য চীনের কুনমিংয়ে ৩ থেকে ৪টি উন্নত হাসপাতাল নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন।

অপরদিকে জিডিআই, জিএসআই এবং জিসিআই নামে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের তিনটি বৈশ্বিক উদ্যোগে যোগদানের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে চীন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেইজিং সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী ও চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিআইডিসিএ) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিআইডিসিএ) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে চীনের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

উপদেষ্টা হোসেন সিআইডিসিএ চেয়ারম্যানকে দুই ধরনের ঋণের সুদের হার ২-৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন।

তিনি বাংলাদেশে চীনা ঋণের প্রতিশ্রুতি ফি এবং ব্যবস্থাপনা ফি মওকুফ করার অনুরোধ করেন।

এর জবাবে সিআইডিসিএ চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন, তারা ইতোমধ্যে মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে এবং সুদের হার আরও কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করবেন।

উপদেষ্টা সিআইডিসিএ চেয়ারম্যানকে ছাড়পত্র এবং অনুদানের পরিমাণ এবং প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ করেন। সিআইডিসিএ চেয়ারম্যান ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।

উভয় পক্ষ বাংলাদেশে মেট্রোরেল এবং সাউদার্ন ইনফ্র্যাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়েও আলোচনা করেছে। সিআইডিসিএ চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন—চীন ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও বড় প্রকল্প বিবেচনা করতে পারে, যার কিছু অংশ অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। এর ফলে ঋণের গড় সুদের হার কমবে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

মঙ্গলবার সকালে বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশ ও চীন ‘সামগ্রিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বের’ প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, খাতগত সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে আদান-প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জিডিআই, জিএসআই এবং জিসিআই শীর্ষক প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই তিনটি বৈশ্বিক উদ্যোগে যোগদানের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্যও বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছেন। জবাবে বাংলাদেশ প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা করার এবং চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার অভিপ্রায় জানান।

আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জনগণ অধ্যাপক ইউনূসকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে, যিনি দেশের ঐক্য বজায় রাখতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার (ড. ইউনূস) সরকার বাংলাদেশের জন্য অনেক ভালো কাজ করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই নিশ্চিত করেছেন যে চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, সংস্কার, গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য চীনের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তাদের নিজস্ব উন্নয়নের গতিতে দেখতে চায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ‘বাংলাদেশের জনগণের জীবন-জীবিকার জন্য সহায়ক প্রকল্পে সহায়তা অব্যাহত রাখবে চীন’- বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জোর দিয়েছিলেন যে চীনে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর সম্পর্ককে নতুন গতি দিতে এবং চীনের সঙ্গে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্বে জড়িত হওয়ার দৃঢ় অভিপ্রায়কে প্রতিফলিত করে। উপদেষ্টা হোসেন ‘এক চীন নীতি’র প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি এবং ইউএনজিএ ২৭৫৮ রেজুলেশনের প্রতি অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের আন্দোলন আমাদের জাতিকে সাম্য, বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থার নীতিতে পুনর্গঠনের সুযোগ দিয়েছে।

তিনি চীনকে সুদের হার ২-৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার, প্রতিশ্রুতি ফি মওকুফ করার এবং অগ্রাধিকারমূলক ক্রেতা-ঋণ এবং সরকারি রেয়াত-ঋণ উভয়ের জন্য ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার জন্য অনুরোধ করেন।

ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের ভালো ট্র্যাক রেকর্ডের প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হন এবং সুদের হার কমানোর অনুরোধটি ভেবে দেখার আশ্বাস দেন। তিনি এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর তিন বছরের জন্য চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

স্বাস্থ্য সহযোগিতা

বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ করে কুনমিংয়ে তিন থেকে চারটি উন্নত হাসপাতাল মনোনীত করার জন্য চীনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছার ইঙ্গিত হিসেবে ঢাকায় বিশেষায়িত চীনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের প্রস্তাবকেও তিনি স্বাগত জানান।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষা, রেলওয়ে, কৃষি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পশুসম্পদ, মৎস্য, জাহাজ ভাঙা, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং নীল অর্থনীতির মতো খাতে আর্থিক, কারিগরি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির সহযোগিতা এবং সহায়তার জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনা করার জন্য ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

বৈঠকে উভয়পক্ষই বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম আয়োজনের লক্ষ্যে তাদের প্রস্তুতির কথা জানান। বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে স্বীকৃতি দিয়ে দুইপক্ষ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর অধীনে অব্যাহত সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছে।

তারা দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন প্ল্যান্ট, মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ, ডিজিটাল কানেকটিভিটি স্থাপন এবং ফোর-জি সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তাবিত চীনা অর্থায়নে প্রকল্পগুলোতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

উভয় নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন এবং সমস্যার একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে একটি রোডম্যাপে কাজ করার জন্য তাদের যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা উন্নীত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের অব্যাহত সম্পৃক্ততার আশ্বাস দিয়েছেন।

17 ভিউ

Posted ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com