বুধবার ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশের সঙ্গে আবারও বড় ঋণ চুক্তি করবে কি চীন?

বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
21 ভিউ
বাংলাদেশের সঙ্গে আবারও বড় ঋণ চুক্তি করবে কি চীন?

কক্সবাংলা ডটকম(৮ জানুয়ারি) :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ভোটের ফলাফল ছিল রীতিমতো ‘সুনামি’।

আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা মোট ২৮৮টি আসন পায়। আর বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ঝুলিতে যায় কেবল সাতটি আসন। বাকি তিনটি পায় অন্যরা।

ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রশ্ন ও বিতর্কে পরিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর পরই অভিনন্দন জানানো দেশের মধ্যে ছিল চীন।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের ওই অভিনন্দন বার্তা নির্বাচনের পরদিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর বিকালেই গণভবনে পৌঁছে দেন ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন চীনা রাষ্ট্রদূত।

সরকারি তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও বাংলাদেশের সঙ্গে বড় আকারে ঋণ চুক্তি ও প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল চীন।

এরপর ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যভাগ—এ সাড়ে পাঁচ বছরেও নিয়মিতভাবে ঋণ প্রতিশ্রুতি, চুক্তি ও অর্থছাড়ের ধারায় ছিল বন্ধুপ্রতিম দেশটি।

এসব চুক্তির আওতায় থাকা প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই ছিল যোগাযোগ ও জ্বালানি অবকাঠামো কেন্দ্রিক।

কিন্তু ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে কোনো ধরনের অবকাঠামো ঋণ প্রতিশ্রুতি, চুক্তি ও অর্থছাড় করতে দেখা যায়নি দেশটিকে।

বড় ধরনের কোনো ঋণ প্রতিশ্রুতি না পাওয়ার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভঙ্গুরতার ক্ষেত্রগুলো আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিল চীন।

পটপরিবর্তন হতে পারে এমন অনুমানও করতে পেরেছিলেন দেশটির সরকারসংশ্লিষ্টরা।

যার ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত চীন সফরেও অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো ঋণ চুক্তির ঘোষণা ছাড়া পূর্বনির্ধারিত সূচির আগে দেশে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।

চীন সফরে যাওয়ার আগেই সফরটি গুরুত্বপূর্ণ—এমন ধারণা দিয়েছিলেন দুই দেশেরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আলোচনার পাশাপাশি তিস্তা প্রকল্প, রোহিঙ্গা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে ঋণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীন ভূমিকা রাখবে এমন বক্তব্যও দিয়েছিলেন তারা।

তবে শেখ হাসিনার সফর শেষে দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কিছুই ছিল না।

বাণিজ্য, বিনিয়োগ কিংবা অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও চীনের দিক থেকে ছিল না বড় কোনো প্রতিশ্রুতি।

সফরে কেবল ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে ২১টি সমঝোতা স্বাক্ষর ও সাতটি ঘোষণা আসে।

রিজার্ভ সংকট থাকায় বাংলাদেশকে চীনের প্রধানমন্ত্রী কেবল ১ বিলিয়ন ‘ইউয়ান’ বা ১৪ কোটি ডলারের মতো আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এমন প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার পতনের বিষয়টি চীন আগেই টের পেয়েছিল কিনা সে প্রশ্নও তুলছেন বিশ্লেষকরা।

কেউ কেউ বলছেন, পতনের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত না হলেও অনুমান করতে পেরেছিল পরাশক্তির দেশটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তুজা বলেন, ‘আমি মনে করি এখন পর্যন্ত চীনের নীতি হলো “‍ওয়েট অ্যান্ড সি”।

দেশটি নানাভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়া অব্যাহত রেখেছে।

যেমন চীন-বাংলা হোস্টেল করার পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রস্তাবনা নিয়েও কাজ শুরু করেছে। অর্থাৎ দেশটি একদমই বিনিয়োগ করছে না তেমনটি নয়।

এটাও বাস্তবতা যে চীন যেসব ঋণ বাংলাদেশকে দিয়েছে, সেগুলোর পরিশোধ নিয়েও কিছুটা জটিলতা রয়েছে।

আবার তিস্তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনার বিষয়টিও রয়েছে।

সব মিলিয়ে নীরবে পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি বড় অবকাঠামোতে বিনিয়োগে না গিয়ে “সফট পাওয়ার”-এর জায়গায় চীনের আগ্রহ এখন বেশি।

এ ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে।

এখন দেশটির মনোযোগ বেশি মানুষে মানুষে সম্পর্ক নিয়ে। কিন্তু মেগা প্রকল্পের ক্ষেত্রে, যেহেতু বাংলাদেশ সরকারও বড় কোনো কিছু হাতে নিচ্ছে না, সার্বিকভাবে চীন এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

আর যেকোনো কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এমনটিই করার কথা। সরকারি পর্যায়ে চুক্তির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকারের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা ও উন্নয়নে রাজনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি বুদ্ধিভিত্তিক কর্মকাণ্ডকে চীন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈরিতার পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপড়েন গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছে চীনারা।

এর পাশাপাশি বাংলাদেশের রিজার্ভসহ নানামুখী সংকটে অর্থনৈতিক সূচকগুলোও চীনের বিনিয়োগ বিবেচনায় ছিল।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার প্রশ্নবিদ্ধ চতুর্থ মেয়াদের ক্ষমতা নিয়ে সংশয়ে ছিল তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা বা উন্নয়নে চীন এখন শুধু রাজনৈতিকভাবে কাজ করে না, তাদের বুদ্ধিভিত্তিক কর্মকাণ্ডও আছে।

দেশটির উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারাও এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকছেন। চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ডেস্কওয়ার্ক করে।

যার মাধ্যমে কী হয়েছিল এবং কী হতে যাচ্ছে এ ধরনের ধারাবাহিক বিশ্লেষণ তাদের থাকে।

প্রায় সব ধরনের ইন্টেলেকচুয়ালদের একটি বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে সেটা হলো গণতান্ত্রিক হোক বা অগণতান্ত্রিক হোক যেকোনো শাসকগোষ্ঠী তিন মেয়াদ পর্যন্ত থাকতে পারে।

এ ধারণা বিবেচনায় নিলে দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনা শাসনের তিন মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। চতুর্থ মেয়াদে পা দিয়েছিলেন, আর তার শাসন ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা ছিল।

এ অবস্থায় অনেকেই একমত ছিল যে চতুর্থ মেয়াদে তিনি বসলেও থাকতে পারবেন না। এ ধরনের ধারণা চীনও করে নিয়ে থাকতে পারে।

আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যে নেতিবাচক ছিল সেটাও দেশটি জানত।

আবার ভারতের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খুব স্বস্তিদায়ক ছিল সেটা বলা যাবে না।

ফলে ভারতের মোদি (নরেন্দ্র মোদি) সরকার নিজেকে রক্ষা করে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে যেতে পারবে এমন ইতিবাচক ধারণায় চীন ছিল না।

ফলে দেশটি শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতা নিয়ে সতর্ক হয়ে থাকতে পারে।’

বিদেশ থেকে জ্বালানিবোঝাই বড় জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে না। এ কারণে মহেশখালীর কাছাকাছি গভীর সমুদ্রে নোঙর করে জাহাজ।

সেখান থেকে ছোট জাহাজের (লাইটারেজ) মাধ্যমে তেল চট্টগ্রাম বন্দরের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনা হয়। এ প্রক্রিয়ায় সময় লাগে ১০-১১ দিন এবং খরচও বেশি হয়।

এসব সমস্যা সমাধানে বড় জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি তেল সরবরাহের জন্য ২০০৯ সালে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।

তবে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। মহেশখালীর পশ্চিম পাশে স্থাপিত এ প্রকল্প বাস্তবায়নে শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ৫৫ কোটি ৭ লাখ ডলার।

এর জন্য ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার।

চীনের ঋণে বাস্তবায়ন করা যোগাযোগ অবকাঠামো খাতের বৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ঋণের পরিমাণ ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। চীনা ঋণে নির্মিত আরেক প্রকল্প কর্ণফুলী টানেল।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল প্রকল্পটি শুরুর সময় ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৮ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা।

পরে ব্যয় বেড়ে হয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে।

২০১৬ সালের অক্টোবরে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, আর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

২০২০ সালের নভেম্বরে উদ্বোধনের কথা থাকলেও কভিড-১৯ মহামারীসহ কয়েক দফায় পেছায় প্রকল্প শেষের সময়।

সঙ্গে বাড়ে ব্যয়ও। এর মধ্যে চীন ঋণ দেয় ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকল্পটি উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন একটি প্রকল্প ‘ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’।

২০১৯ সালের ৪ জুলাই ১৪০ কোটি ২৯ লাখ ডলারের এ প্রকল্প চুক্তি হয় চীনের সঙ্গে। বিদ্যুৎ খাতে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০২০ সালের ৭ জুন।

‘পিজিসিবির আওতায় বিদ্যুৎ গ্রিড নেটওয়ার্ক জোরদার’ নামে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৯৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

রাজশাহী শহরের ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনের জন্য ২০২৩ সালের ১০ মে চীনের সঙ্গে চুক্তি করা হয় আরেকটি প্রকল্পের।

২৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ব্যয়ে নেয়া এ প্রকল্পের নাম ‘‌রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার’।

এ প্রকল্পের পুরোটা অর্থায়ন করে চীন। এরপর আর কোনো প্রকল্পেই অর্থায়নে এগিয়ে আসেনি দেশটি।

দেয়নি কোনো ঋণ প্রতিশ্রুতিও। অথচ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে চীন মোট ৮ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে।

চীন-বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু চীন না, কোনো দেশের সঙ্গেই ২০২৩ সাল-পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের চুক্তিতে যেতে পারেনি বাংলাদেশ।

আর ওই সময় থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন মানুষে মানুষে সংযোগকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

বড় অবকাঠামোতে নতুন কোনো বিনিয়োগ না করলেও ব্যক্তি খাতের সঙ্গে বাণিজ্য পরিধি ক্রমেই বাড়িয়েছে দেশটি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা বলেন, ‘২০২৪ সালে সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে কোনো দেশের সঙ্গেই বড় কোনো চুক্তি হয়নি বাংলাদেশের। বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন করছে।

দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তি হলো মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব।

আমরা দেখেছি সরকারের সঙ্গে সরকারের যে সম্পর্ক সেটা একটা পর্যায় পর্যন্ত সব সরকারের সঙ্গেই রক্ষা করে চীন।

দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য পরিধিটা অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রটিতে চীন সবসময়ই মনোযোগী।

তবে জনমানুষের উন্নয়ন যেন নিশ্চিত হয়, এমন প্রকল্পগুলোয়ই চীন সম্পৃক্ত হয়। সরকারি পর্যায়ে চীনের বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ।

ব্যক্তি খাতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে চীনের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি।

আগে যারা ছিল, এখন যারা আছেন এবং আগামীতে যারা আসবেন সবার ক্ষেত্রেই ব্যক্তি খাতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশগ্রহণে চীন থাকবেই।’

২০১৮ সালের আগে থেকেই ধারাবাহিকভাবে চীন ঋণ প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি চুক্তি ও অর্থছাড় করেছে।

একটা পর্যায়ে নতুন চুক্তি থেকে সরে গিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে।

তবে এক সময় রিজার্ভ সংকটের কারণে ঋণ পরিশোধে দীর্ঘসূত্রতাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিশেষ করে অর্থনৈতিক সূচকের দুর্বলতায় নতুন বিনিয়োগ থেকে চীন বিরত থেকেছে বলে মনে করেন কূটনীতিকরা।

আওয়ামী লীগ সরকার ওই সময় বিভিন্ন রকমের সমস্যায় থাকায় হয়তো নিজেরাই নতুন করে কিছু করেনি বলে মনে করেন চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মুন্সি ফয়েজ আহমদ।

সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা এতগুলো চুক্তি দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে এমনটা হতে থাকবে সেটাও ভেবে নেয়ার কোনো কারণ নেই।

কারণ যে চুক্তিগুলো হয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়নও তো হতে হবে। তাছাড়া নতুন নির্বাচন নিয়ে ওই সময় থেকেই তৎপরতাও শুরু হয়েছিল।

বিশেষ করে ২০২৩ সালের শেষ দিকে পুরোদমেই নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল।

এ জল্পনা-কল্পনাও শুরু হয়েছিল যে কারা নির্বাচনে আসবে আর কারা আসবে না।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে কারা যোগ দেবে আর কারা দেবে না। এ ধরনের রাজনৈতিক পরিবেশ তখন সরব ছিল।’

রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট কেমন, সুশাসন কেমন, সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কিনা, অন্য যেকোনো দেশের মতো চীনও এগুলো দেখে থাকে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘চীনারা দেখে অর্থনৈতিক ধারা কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে।

তারা কথা কম বলে কিন্তু নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যেই থাকে। বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা দেশগুলোর মতোই তারা কমার্শিয়াল।

সরকারের অনুগত হলেও দেশটির থিংক ট্যাংকও রয়েছে। যারা গবেষণার কাজগুলো করে থাকে। দেশটির বুদ্ধিভিত্তিক মানও বেশ ভালো।

আমার ধারণা, যখন থেকে চীন বুঝতে পেরেছে যে অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের সরকার ভালো করছে না, তখন তারা কিছু না বললেও নিজেদের ধারণা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়েছে।

ফলে সরকারি পর্যায়ে বড় বিনিয়োগে যায়নি। এটা বর্তমান সময়ের ক্ষেত্রেও প্রাসঙ্গিক।’

এ প্রসঙ্গে ঢাকার চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে নতুন কোনো ঋণ প্রতিশ্রুতি ও চুক্তি নেই আবার ঋণের অর্থছাড়ও উল্লেখযোগ্য না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকার চীন দূতাবাস থেকে কেবল জানানো হয়েছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে আমরা ঋণ ও অনুদান প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।‍’

21 ভিউ

Posted ৭:৩৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com