কক্সবাংলা ডটকম(১১ জানুয়ারী) :: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রফতানিতে চাঙ্গাভাব এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুবাদে আগামী অর্থবছর প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হবে। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক এ কথা জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, সাম্প্রতিক বন্যা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তেজি প্রবৃদ্ধির পথে রয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যা আগের পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষত ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাতে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রসার এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত ভোগে চাঙ্গাভাব ও সরকারি বিনিয়োগ জোরদার থাকার বিষয়টিও প্রবৃদ্ধি বেগবান করতে সহায়ক হয়েছে।
গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঋণ প্রবৃদ্ধির সুবাদে দেশে বিনিয়োগও বেড়েছে। বিশেষত বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ঋণের জোগান আগের ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৭ শতাংশের কাছাকাছি হয়েছে। একইভাবে রফতানিও ঊর্ধ্বমুখী পথে ফিরেছে। সদ্য সমাপ্ত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রফতানি হোঁচট খেলেও তৃতীয় প্রান্তিকে তা আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
আগামী ২০১৮-২০২০ অর্থবছরগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গড়ে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ঋণদাতা সংস্থাটি বলেছে, জোরদার অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রফতানির সুবাদে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে। সুদহার কম থাকায় এবং অবকাঠামো উন্নত হওয়ায় বিনিয়োগও বাড়বে।
একই সময়ে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সংহত হয়ে ওইসব দেশে ব্যক্তিগত ভোগ বৃদ্ধি পাবে। বিষয়টি বাংলাদেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহে প্রাণসঞ্চার করবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।
অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক কিছু ঝুঁকির কথাও বলেছে। বিশেষত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্তপত্রের দুর্বলতাকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখছে।
সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্তপত্রের দুর্বলতা বেসরকারি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিশেষত নন-পারফর্মিং ঋণের (এনপিএল) অনুপাত আগের মতোই ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। বাংলাদেশের চলতি হিসাব ঘাটতি আগের চেয়ে বেড়েছে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলেছে, আগামী নির্বাচন ও রাজস্ব সংগ্রহে দুর্বলতার কারণে আর্থিক অবস্থা সংহতকরণের কাজটি আরো পিছিয়ে যেতে পারে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। তখন সংস্থাটি বলেছিল, ৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারলে তা ভালো প্রবৃদ্ধি হবে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সম্প্রতি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৭’তে বলেছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরে এগিয়ে বাংলাদেশ অর্জন করে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।
Posted ১২:৩১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta