কক্সবাংলা ডটকম(৮ জুন) :: বিশ্ব বিনিয়োগ পরিস্থিতির স্থবিরতার মধ্যেও বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কিছুটা হলেও বেড়েছে। আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২০১৬ সালে এফডিআই এসেছে ২৩৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। স্বাধীনতার পর দেশে এটিই সর্বোচ্চ পরিমাণ।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ন্যাশনাল কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ‘বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন-২০১৭’ শিরোনামের এ প্রতিবেদন জেনেভা থেকে গত রাতে প্রকাশ করা হয়। ঢাকায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের এফডিআই পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আঙ্কটাড। বিশেষত প্রতিবেশী ভারত এবং চীন থেকে বাংলাদেশে এফডিআই বাড়তে পারে।
এফডিআইর এই পরিসংখ্যানকে যথেষ্ট মনে করেন না অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী এফডিআইর পরিমাণ অনেক কম, জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ। এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এফডিআই অনেক কম। অবশ্য বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সাল বিশ্ববিনিয়োগের মন্দার বছর গেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের এফডিআই খুব কম বলা যাবে না। তবে জিডিপি অনুপাতে এ হার আরও বাড়ানো উচিত।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে এফডিআই আকর্ষণে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) কথা উল্লেখ করা হয়। এসইজেডে বিনিয়োগে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আরোপ নেই। এ ছাড়া বিনিয়োগে সরাসরি উন্নয়ন এবং নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানিকে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট এফডিআইর স্থিতি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৩৩৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে বাড়লেও ২০১৬ সালে বৈশ্বিক এফডিআই ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে উন্নয়শীল বিশ্বে কমেছে ১৪ শতাংশেরও বেশি। এলডিসিতে কমেছে ১৩ শতাংশ। এ ছাড়া দুর্বল কাঠামোর দেশের এফডিআই পরিস্থিতি এখনও তুলনামূলক কম এবং ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে আগামী দুই বছর এলডিসিতে এফডিআই বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এফডিআই বাড়াতে নীতি পরিবেশ উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে এতে।
এফডিআইর বৈশ্বিক তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে দক্ষিণ এশিয়া। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়াই এ সময় এফডিআই নিম্নগতি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। আলোচ্য সময়ে এ অঞ্চলে এফডিআই ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ বিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে ভারতেই এসেছে ৪৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১ শতাংশ। শতাংশের হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি ৫৬ শতাংশ এফডিআই গেছে গত বছর। চীনের সঙ্গে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড উদ্যোগের কারণে সে দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হয়েছে এ সময়।
Posted ১১:১২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta